কর্ণাটক নির্বাচনের প্রচারে হিট মঠ-রাজনীতি, জেনে নিন কোন মঠের কী গুরুত্ব
কর্নাটক নির্বাচনে মঠগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই তারা সব রাজনৈতিক দলগুলির মনোযোগ পায়।
শেষ হয়েছে ভোট প্রচার। প্রচারে একদিকে যেমন ছিল সভা, সমাবেশ, মিছিল-এর মতো রাজনৈতিক কর্মসূচী তেমনই কর্ণাটকে ভোটের আগে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন মঠে পা পড়েছে রাজনৈতিক নেতাদের। বিজেপি ও কংগ্রেস দুদলের সর্বভারতীয় সভাপতির প্রচার কর্মসুচী তো ছিল মঠ-যাত্রায় ঠাসা। তাছাড়াও ছোট বড় মেজ কোনও নেতাই মঠগুলিকে অগ্রাহ্য করার সাহস দেখাননি।
এমনিতে ওপর ওপর দেখে মনে হবে ভোটের ময়দানে মঠগুলির কীই বা গুরুত্ব? একেকটার প্রভাব খুব বেশি হলে একটি জেলা ছাড়িয়ে পাশের জেলা অবধি রয়েছে। তার বেশি নয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলেই বোঝা যায় কেন নেতারা কর্ণাটকের ভোটের আগে নিয়ম করে মঠে হাজিরা দিয়েছেন। আসলে এই এক-একটি মঠ এক-একটি শক্তিকেন্দ্র বলা যায়। মঠগুলির কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র ধর্মচর্চার গণ্ডিতেই আটকে নেই, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, অনাথ আশ্রম, নানা রকম পরিষেবা মিলিয়ে কর্ণাটকের জনতার যাপনের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িয়ে রয়েছে মঠগুলি। একেকটি সম্প্রদায় চলে একেক মঠের কথায়। তাই মঠকর্তাদের নির্দেশে এক লহমায় ঘুরে যেতে পারে একটা গোটা সম্প্রদায়ের ভোট। তারা মুখে যতই বলুন, রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন, পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা, সব স্তরের ভোটেই তারা কোনও না কোনও প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে থাকে। আর তারা বললেই একটা গোটা সম্প্রদায়ের ভোট ঢুকবে দলের ঝুলিতে, এই পরিস্থিতিতে কোন রাজনৈতিক দলের ঘাড়ে কটা মাথা যে তাদের এড়িয়ে চলে?
সিদ্ধগঙ্গা
মঠ,
তুমাকুরু
লিঙ্গায়েতদের
ঘাঁটি
বলে
পরিচিত
এই
মঠে
এসেছেন
রাহুল
গান্ধী,
অমিত
শাহ
এমনকী
প্রধানমন্ত্রী
মোদীও।
তাৎপর্য
বৃহত্তম
ভোট
ব্যাংক
(জনসংখ্যার
১৭-১৯%)
লিঙ্গায়েতদের
কাছে
এই
মঠ
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ।
এ
মঠের
প্রধান
স্বামী
শিবকুমার।
এবছর
এপ্রিলে
তিনি
১১১
বছরে
পা
দিয়েছেন।
লিঙ্গায়েতরা
তাঁকে
চলতা-ফিরতা
ঈশ্বর
বলেই
মনে
করেন।
রাজনীতি
সাধারণত
বিজেপি
ও
ইয়েদুরাপ্পাকেই
লিঙ্গায়েতরা
সমর্থন
করে।
কিন্তু
মুখ্যমন্ত্রী
সিদ্দারামাইয়া
লিঙ্গায়েত
সম্প্রদায়কে
পৃথক
সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের
মর্যাদা
দেওয়ার
প্রতিশ্রুতি
দিয়েছেন।
তাতে
অবস্থাটা
পাল্টাবে
বলে
কংগ্রেসের
আশা।
কংগ্রেস
ও
বিজেপি
নেতারা
মঠপ্রধানের
জন্মদিনে
তাঁর
আশীর্বাদ
হামলে
পড়ে।
রাহুল
গান্ধী
এবং
অমিত
শাহ-ও
আসেন।
এছাড়া
চিত্রদুর্গ
জেলার
স্রিগার
মঠ
ও
মুরুঘা
মঠেরও
লিঙ্গায়েতদের
ওপর
ভাল
প্রভাব
রয়েছে।
গত
মার্চে
অমিত
শাহ
মুরুঘা
মঠে
গিয়েছিলেন।
তাঁকে
মঠপ্রধান
লিঙ্গায়াতদের
সংখ্যালঘু
ধর্মের
মর্যাদা
দেওয়ার
জন্য
একটি
স্মারকলিপি
ধরিয়ে
দেন।
মাদরা
গুরু
পীঠ,
চিত্রদুর্গ
আহিন্দা
সম্প্রদায়ের
এই
মঠে
এসেছেন
বিজেপি
সভাপতি
অমিত
শাহ।
তাৎপর্য
প্রধানত
দালিত
মাদিগা
সম্প্রদায়
এই
মঠকে
মেনে
চলে।
লিঙ্গায়েতদের
মতো
অতবড়
না
হলেও
দেড়
কোটি
জনসংখ্য়ার
মাদিগারাও
যথেষ্ট
আকর্ষণীয়
ভোটব্যাঙ্ক।
মঠ
প্রধান
মাদার
চেন্নাইয়াস্বামী।
রাজনীতি
এসসি
কোটাতে
মাদিগা
সম্প্রদায়
অভ্যন্তরীণ
সংরক্ষণ
চায়।
সিদ্দারামাইয়া
মাদিগা
উন্নয়ন
কর্পোরেশন
গঠন
করলেও
তাতে
ভোলেনি
তারা।
তার
ওপর
মঠপ্রধানের
সঙ্গে
সমাজ
কল্যাণ
মন্ত্রী
এমএইচ
আঞ্জানেয়া
তর্কে
জড়িয়েছেন।
তার
আগে
মঠের
কোষাধ্যক্ষের
সঙ্গেও
ঝামেবা
বেধেছিল
এই
কংগ্রেস
মন্ত্রীর।
এই
সুযোগে
অমিত
শাহকে
মঠপ্রধানের
মন
পাওয়ার
চেষ্টায়
খামতি
রাখেননি।
চেষ্টা
করেছেন
মুখ্যমন্ত্রীর
অহিন্দা
ভোটব্যাঙ্কে
ভাভন
ধরানোর।
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র
মোদীও
মঠপ্রধানের
কথা
তুলেছেন
ভাষণে।
আদিচুঞ্চানাগিরি
মঠ,
মাণ্ড্য
এ
মঠে
পা
পড়েছে
উত্তরপ্রদেশের
মুখ্যমন্ত্রী
যোগি
আদিত্যনাথ,
বিজেপি
সভাপতি
অমিত
শাহ
ও
কংগ্রেস
সভাপতি
রাহুল
গান্ধীর।
তাৎপর্য
কর্ণাটকের
দ্বিতীয়
বৃহত্তম
সম্প্রদায়
(জনসংখ্যার
১২-১৫%)
ভোক্কালিগাসদের
জন্য
এই
মঠ
খুব
গুরুত্বপূর্ণ।
আইআইটি-
মাদ্রাজের
প্রাক্তন
ছাত্র
শ্রী
নির্মলানন্দনাথ
বর্তমানে
মঠটির
প্রধান।
রাজনীতি
এমনিতে
কংগ্রেস
এবং
জেডি
(এস)-কেই
সমর্থন
করে
এসেছে
এই
মঠ।
রাহুল
গান্ধী
এমঠে
এসেছেন।
অমিত
শাহ-ও
গত
বছর
মঠ
পরিদর্শনে
এসেছিলেন।
কিন্তু
মঠপ্রধানের
সামনে
তার
পা
মুড়ে
বসা
নিয়ে
শিষ্যরা
খেপে
গিয়েছিল।
ড্যামেজ
কন্ট্রোলে
এমঠে
এসেছেন
যোগী
আদিত্যনাথও,
তাতে
বিশেষ
কাজ
হয়েছে
বলে
মনে
করেন
না
সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিরা।
শ্রী
কৃষ্ণ
মঠ,
উদুপি
অমিত
শাহ-এর
পা
পড়লেও
কংগ্রেসের
ধরা
ছোঁয়ার
বাইরেই
থেকে
গিয়েছে
এই
মঠ।
তাৎপর্য
কৃষ্ণ
ভক্তদের
কাছে
এ
মঠই
শেষ
কথা।
এ
মঠের
পরিচালনায়
রয়েছে
কন্নড়
ব্রাহ্মণরা।
রাজনীতি
খোলাখুলি
বিজেপিকে
সমর্থনের
কথা
বলা
হয়েছে
মঠের
তরফে।
গত
ফেব্রুয়ারি
মাসে
অমিত
শাহ
মঠে
এলেও
প্রধানমন্ত্রী
না
আসায়
হতাশ
হন
মঠের
পরিচালকরা।
রাহুল
গান্ধীর
সফর
সুচীতে
এই
মঠ
তো
নয়ই,
এমনকি
শহরটিও
বাদ
পড়েছে।
আগে
মুখ্যমন্ত্রী
সিদ্দারামাইয়া
মঠের
সঙ্গে
যোগাযোগ
রাখলেও
২০০৪-এ
উদুপির
অপর
একটি
মঠের
গোপুরা
ভাঙাকে
কেন্দ্র
করে
কুরুবা
সম্প্রদায়ের
সঙ্গে
মতপার্থক্য
হওয়ার
থেকে
সিদ্দারমাইয়ার
যোগাযোগও
কমেছে।
কনক
গুরু
পীঠ,
ক্যাগিনেলে
এমঠে
এসেছেন
রাহুল
গান্ধী
ও
অমিত
শাহ।
তাৎপর্য
কুরুবা
সম্প্রদায়ের
মঠ।
কুরুবারা
কর্ণাটকের
তৃতীয়
বৃহত্তম
জাতিগোষ্ঠী
এবং
মুখ্যমন্ত্রী
সিদ্দারামাইয়াও
এই
সম্প্রদায়েরই
মানুষ।
রাজনীতি
এপ্রিলের
শুরুতে
রাহুল
গান্ধী
এবং
অমিত
শাহ
দুজনেই
একই
দিনে
মঠপ্রধান
নিরজানন্দ
স্বামীর
সঙ্গে
সাক্ষাৎ
করতে
চেয়েছিলেন।
নিরজানন্দ
স্বামী
অবশ্য
খোলাখুলিই
কংগ্রেস
দলকে
সমর্থনের
কথা
বলেন।
কংগ্রেস
সভাপতি
রাহুল
ও
মুখ্যমন্ত্রী
সিদ্ধারামাইয়ার
সঙ্গে
দেখা
করতে
তিনি
দাওয়ানগেরের
বেল্লুদিতে
চলে
যান।
বিজেপি
সভাপতিকে
মঠে
স্বাগত
জানানোর
দায়িত্ব
দিয়ে
যান
অন্যান্য
সন্নাসীদের।
শোনা
যায়
এর
জন্য
কুরুবা
সম্প্রদায়ের
বিজেপি
নেতা
কে
এস
এশ্বরাপ্পাকে
ধমক
খেতে
হয়
শাহের
কাছে।
পরে
নিরজানন্দ
বলেন,
রাহুল
এবং
মুখ্যমন্ত্রীর
সঙ্গে
তাঁর
সাক্ষাতের
বিষযটি
আগেই
ঠিক
করা
ছিল।
তবে
এও
বলেন
যে,
বিজেপি
কুরুবা
নেতা
বিজয়শঙ্করের
সঙ্গে
যে
ব্যবহার
করেছে
তাতে
তিনি
হতাশ।