অযোধ্যায় মসজিদের জমির জন্য স্থির করা স্থান নিয়ে অখুশি মুসলিমরা!
বুধবার সংসদে রামমন্দিরের জন্য ট্রাস্ট গঠনের কথা ঘোষণা করেছইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মন্দির তৈরির এই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পেরোতেই ঘোষণা করা হয় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটি সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মসজিদ তৈরির স্থান নির্ধারণ। জানিয়ে দেওয়া হয় প্রস্তাবিত রামমন্দিরের থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে এই সমজিদ নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে যোগী সরকারের পছন্দ করা এই স্থানটি পছন্দ হয়নি মুসলিম পক্ষদের।
অযোধ্যার মসজিদের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ধন্নিপুরকে
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই মসজিদের জন্য জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। অযোধ্যা শহরের অদূরেই ধন্নিপুর গ্রামে এই মসজিদ তৈরির জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এলাকাটি লখনউ হাইওয়ের কাছে। এলাকায় মূলত মুসলিম ও যাদব সম্প্রদায়ের বাস। রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত স্থানের তালিকা কেন্দ্রকে পাঠানোর পর কেন্দ্রই এই জায়গাটিকে বেছে নেয়। পরে তার ঘোষণা করেন যোগী সরকারের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা।
মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ
তবে এই জমি নিয়ে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে মুসলিমদের মধ্যে। তাদের যুক্তি শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এখানে এসে নাামাজ আদায় করা খুব কঠি হতে চলেছে তাদের জন্য। এই নিয়ে সরব হয়েছে এল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়া এই জমি মুসলিমদের প্রতি অবিচার বলে আখ্যা দিয়েছে তারা।
সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহাসিক রায়
গত বছরের ৯ নভেম্বর বহু প্রতিক্ষিত অযোধ্যা জমি বিতর্কের রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ে সর্বসম্মতিক্রমে বিবাদের মূলে থাকা ২.৭৭ একর জমিটি হিন্দুদের দেওয়ার কথা বলা হয়। এবং তা তৈরির জন্য তিনমাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানায়, ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বেআইনি ছিল।
মুসলিম ভাবাবেগের উপর নজর দিয়েই মসজিদের জন্য ৫ একর জমি
আদালতের ১০৪৫ পাতার রায়তে বলা হয়, জমির উপর মালিকানার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিমদের দেওয়া প্রমাণের চেয়ে আরও ভালো প্রমাণ দিয়েছিল হিন্দু পক্ষ। জমির মালিকানা কখনও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেওয়া যায় না। মালিকানা স্থির করতে দরকার প্রমাণ। তাই বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য হস্তান্তর করা হচ্ছে। তবে এককালে সেই স্থানে সমজিদ ছিল এবং মুসলিমদের ভাবাবেগকে আহত না করতেই মুসলিম পক্ষকে মসজিদের জন্যে পাঁচ একর জমি দেওয়ার জন্যেও সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।
শুরু হয়ে গিয়েছে রামমন্দির তৈরির কাজ
এদিকে রামমন্দির ট্রাস্ট ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানা যায় ১৫ সদস্যের প্রস্তাবিতদের নাম। সদস্যদের মধ্যে ৯ জন হবেন স্থায়ী এবং ৬ জনকে মনোনীত করা হবে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হবেন কে পরাসরণ। আর আহ্বায়ক সদস্য হবেন অযোধ্যার জেলাশাসক অনুজ কুমার ঝা। অন্য সাত স্থায়ী সদস্য হলেন, শঙ্করাচার্য বাসুদেবানন্দ মহারাজ, পরমানন্দজি মহারাজা হরিদ্বার, স্বামী গোবিন্দগিরিজি পুনে, বিমলেন্দ্র মোহন প্রতাপ মিশ্র, ড. অনিল মিশ্র হোমিওপ্যাথিক অযোধ্যা, ড. কমলেশ্বর চাউপল পটনা এবং মহান্ত ধীনেন্দ্র দাস নির্মোহী আখড়া। মনোনীত সদস্যদের ঠিক করবে ট্রাস্টি বোর্ড।