মুসলিমরা সংখ্যালঘু নয়, নাজমা হেপতুল্লার মন্তব্যে তীব্র সমালোচনা বাম শিবিরে
এদিন হেফতুল্লাকে প্রশ্ন করা হয়, মুসলিম সম্প্রদায়ের কল্যাণ স্বার্থে কী ধরেণর পরিকল্পনা রয়েছেন নয়া মন্ত্রীর। সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে হেপতুল্লা বলেন, শুধু মুসলিমদের কথা উঠছে কেন? এই মন্ত্রক সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক, মুসলিম সম্প্রদায় বিষয়ক মন্ত্রক নয়।
এর পরে অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে হেপতুল্লা বলেন, মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ রাখাটা কোনও সমস্যার সমাধান নয়, বরং পালিয়ে যাওয়ার পথ। আমরা কখনও মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের কথা বলিনি। কংগ্রেস এই পন্থা বের করেছিল। মুসলমান সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য এটা কোনও সমাধান নয়, বরং পালিয়ে যাওয়ার পথ। কিন্তু অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়ে এতদিন কী ভাবা হয়েছে।
আর হেপতুল্লার এই মন্তব্যবেই হৈ চৈ পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিশেষ করে হেপতুল্লায় এই মন্তব্য এবং মনোভাবে ক্ষুণ্ণ সিপিআইএম। তামিলনাডু়র সিপিআইএম হেপতুল্লার এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁরা বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য বর্তমান সংরক্ষণ নীতিতে আঘাত হানতে পারে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে,হেপতুল্লার মন্তব্যটি যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু সময় সঠিক নয়
বামপন্থীদের একাংশের ধারণা, বিজেপির হিন্দুত্ববাদ মনোভাবেরই প্রকাশ পাচ্ছে হেপতুল্লার মন্তব্যে। এবং নয়া সরকার মুসলিমদের নিয়ে অন্য কোনও গোপন পরিকল্পনা করে রেখেছে যাতে তাদের কোণঠাসা করে দেওয়া যায়। তাঁদের দাবি, তামিলনাড়ুতে ৩.৫ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া সময় থেকে তাঁদের সম্প্রদায়কে টিকিয়ে রাখতে এই নীতি নেওয়া হয়েছিল। এই ধরণের নীতি তাঁদের উন্নয়নের জন্যই ছিল।
হেপতুল্লার এই মন্তব্য সংরক্ষণ নিয়ে সাচার কমিটির সুপারিশকে অবজ্ঞা করে সামাজিক বিচার ব্যবস্থার উপর প্রশ্নচিহ্ন লাগিয়ে দিচ্ছে। এবং সংখ্যালঘুদের সুযোগসুবিধা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করছে বলেও অভিযোগ তোলেন তামিলনাড়ুর বামপন্থী শাখা।
যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে হেপতুল্লা যে মন্তব্যটি করেছেন তা সর্বৈব মিথ্যা নয়। বরং তাঁর কথার মধ্যে যুক্তি রয়েছে। কিন্তু যে সময়ে তিনি এই মন্তব্য করেছেন তা সঠিক সময় নয়। যদি সব ভারতীয় নাগরিকদের জন্য কিছুদিন বিভেদহীন কাজ করার পর হেপতুল্লা এই মন্তব্য করতেন তা হলে তা গ্রহণযোগ্য হোত। কিন্তু, দায়িত্বভার গ্রহণের ২দিনের মাথাতেই এই ধরণের মন্তব্য বিজেপির চিরকালীন মুসলিম বিরোধিতারই প্রতিচ্ছবি বলে মনে হচ্ছে। হেপতুল্লার এই ধরণের মন্তব্য মোদী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।