কোথাও তাণ্ডব কোথাও করজোড়ে আবেদন, দেখুন মুম্বইয়ের বনধ চিত্র
মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রে বনধ ডেকেছে মারাঠা ক্রান্তি মোর্চা। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও বিভিন্ন জায়গায় চলল হিংসাত্মক ঘটনা।
কোথাও লাঠিসোটা নিয়ে তাণ্ডব কোথাও করজোড়ে আবেদন, এভাবেই চলছে মুম্বই তথা মহারাষ্ট্রের বনধ। শিক্ষা ও সরকারি কর্মক্ষেত্রে মারাঠাদের জন্য ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন বুধবার দ্বিতীয় দিনে পড়েছে। মুম্বই, নভি মুম্বই, থানে, কল্যান, সাতারা, পালঘর ও নাসিকের বিভইন্ন এলাকায় বনধের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। তবে মুম্বইয়ের স্থানীয় রেল পরিষেবা ও স্কুল-কলেজে সেভাবে বনধের প্রভাব দেখা যায়নি।
বনধে হিংসা
সবচেয়ে হিংসাত্মক আন্দোলন দেখা গিয়েছে লাতুর জেলার উদগিরে। মারাঠা ক্রান্তি মোর্চার বিরুদ্ধে অভিযোগ এই অঞ্চলে বনধ সফল করতে জুলুম চালায় তারা। একটি সবজির ট্রাক উল্টে দিলে স্থানীয়দের সঙ্গে মোর্চা সদস্যদের সংঘর্ষ বেধে যায়। তবে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ কর্মী মজুত ছিলেন সেখানে। তাদের তৎপড়তায় বড় কোনও ঘটনা ঘটার আগেই পরিস্থিতির সামাল দেওয়া গিয়েছে। থানের মাজিওয়াড়া ব্রিজের উপর টায়ারে আগুন ধরিয়ে পাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বাস্তব চিত্রটা আলাদা
তবে তাঁদের দাবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রটা মিলছে না। বুধবার সকালে বিক্ষোভকারীরা নবি মুম্বইয়ের ঘনশোলি ও থানের ওয়াগল এস্টেট এলাকায় একাধিক যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, বাসে বাঙচুর চালিয়েছে। যার জেরে ওইসব এলাকায় দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল ও বাস পরিষেবা বন্ধ থাকে। থানেতে লোকাল ট্রেনও অবরোধ করা হয়। আহমেদনগরে একটি বাসে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বিরোধীদের অভিযোগ
এদিকে বিরোধী কংগ্রেস মোর্চার এই আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠার জন্য মুখ্য়মন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা রাধাকৃষ্ণ ভিখে পাতিল অভিযোগ করেন, মোর্চা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালাচ্ছিল তখন তাদের অবজ্ঞআ করে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে সরকার। এনসিপির শরদ পাওয়ার এদিনই দিল্লিতে দলের সাংসদদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর জবাব
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এই আন্দোলনের জন্য মোর্চার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন মহারাষ্ট্রের মতো 'এগিয়ে থাকা' রাজ্যে এ ধরণের আন্দোলন লজ্জার। বিক্ষোভকারীদের দাবি নিয়ে কিছু না বলে তিনি আন্দোলনের কারণে পান্ধারপুরে আটকে পড়া মানুষদের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, 'পূজাপাঠকে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত। কিন্তু ১০ লক্ষ মানুষ পান্ধারিপুরে আটকে গিয়েছেন। কয়েকটি গোষ্ঠী ও কিছু ব্যক্তি সেখানে প্রাণ সংশয়ের মতো পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে।'
আন্দোলনের কারণ
মারাঠা ক্রান্তি মোর্চা ও সকল মারাঠা সমাজের প্রধান দাবি মারাঠাদের জন্য মহারাষ্ট্রে শিক্ষাক্ষেত্রে ও সরকারি কর্মক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি কৃষি ঋণ মকুবের দাবিতে এবং কোপার্ডি ধর্ষণ কাণ্ড ও বেকারত্ব নিয়েও তারা ক্ষোভ দেখাচ্ছে।