বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের জন্যই এই সিদ্ধান্ত, তৃণমূলে যোগ দিয়ে বার্তা মুকুল সাংমার
বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের জন্যই এই সিদ্ধান্ত, তৃণমূলে যোগ দিয়ে বার্তা মুকুল সাংমা
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন মুকুল সাংমা সহ ১২ জন বিধায়ক। গতকাল থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই জল্পনাই সত্যি হল। ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিলেন মুকুল সাংমা। মেঘালয়ের এবার বিরোধী দলের জায়গা নিেয় নিল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলে মুকুল সাংমা
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। তাঁর সঙ্গে আরও ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। যার জেরে এখন মেঘালয়ের প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগেই মুকুল সাংমা তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেবার রাহুল গান্ধী গিয়ে মুকুল সাংমার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যার জেরে থমকে গিয়েছিল পরিকল্পনা।কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড বেশিদিন আটকে রাখতে পারল না। শেষ পর্যন্ত মেঘালয় হাতছাড়া হল কংগ্রেসের।
প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস
মেঘালয়ে এখন প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস। মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা দাবি করেছেন,'২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমরাই সরকারে আসব। কিন্তু কোনও কারণে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও ভোটের ফলে সর্ববৃহৎ দল হিসেবে আমরাই আত্মপ্রকাশ করি। কিন্তু তারপর কোন পদ্ধতিতে মেঘালয়ে সরকার গঠন হয়েছিল তা আপনারা সকলেই জানেন। গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অপরিসীম। জনবিরোধী কাজকে বাধা দেওয়া ও সরকারে ভুল গুলি তুলে ধরাই বিরোধী দলের প্রধান দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা সঠিকভাবে বিরোধী দলের নীতি পালন করতে পারিনি। দলীয় নীতি মেনে চলতে গিয়ে জনস্বার্থের সঙ্গে আপোশ করতে হয়েছে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
নেপথ্যে কী প্রশান্ত কিশোর
হঠাৎ করে মেঘালয়ে রাজনৈতিক মানচিত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিশালী পদক্ষেপের নেপথ্যে রয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ত্রিপুরার, গোয়ার মত মেঘালয়ও তাঁদের টার্গেটে রয়েছে। সেকারণে মেঘালয়ে প্রথম থেকেই নজর ছিল তৃণমূল কংগ্রেসে। গোয়ায় সংগঠন খোলার আগেই থেকেই নাকি আইপ্যাক টিম মেঘালয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছিল। তার জেরেই এই দল বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মেঘালয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি
২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয়ে রাজনৈিতক লড়াই ছিল কংগ্রেস ও ন্যাশানাল পিপলস্ পার্টির মধ্যে। ন্যাশানাল পিপলস্ পার্টিরকে সমর্থন করে বিজেপি। মেঘালয়ের ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছিল মুকুল সাংমা নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। ২১ টি আসনে নির্বাচিত হন কংগ্রেস প্রার্থীরা। অন্যদিকে ২০ আসন পায় এনপিপি। বিজেপির পেয়েছিল ২ টি আসন। এরপর বিজেপি ও আঞ্চলিক কিছু দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে এনপিপি। কংগ্রেস বৃহত্তম দল হলেও সরকার গড়তে পারেনি মেঘালয়ে। প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল কংগ্রেস। এরপর থেকে ৩ কংগ্রেস বিধায়ক শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমে ১৭ হয়ে গিয়েছিল। সেই ১৭ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জনই তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে গিয়েছে। মেঘালয়ে সরকার গড়তে প্রচুর টাকা ছড়িয়েছিল বিজেপি এমনই অভিযোগ উঠেছে।