জিও-র জন্য বিশ্ব বদলের কারিগরদের তালিকায় শীর্ষস্থানে মুকেশ অম্বানী! কারা দিল এমন সম্মান, জানুন
রিলায়েন্স জিও-র আত্মপ্রকাশেই দাবিটা করেছিলেন মুকেশ অম্বানী। বলেছিলেন, বিশ্বজুড়ে মোবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবার সংজ্ঞাটাই বদলে দেবে জিও। এর ফল হিসাবে এবার মুকেশের মুকুটে আরও এক আন্তর্জাতিক সম্মান।
বাজার যখন তাঁর বিরুদ্ধে, ভয় পাননি মুকেশ ধীরুভাই অম্বানী। ক্ষতির অঙ্ক যখন সংস্থার ব্যালান্স শিটে বাড়তে বাড়তে আতঙ্ক তৈরি করেছিল তখনও বিশ্বাসটা হারাননি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির প্রাণোধা ধীরুভাই অম্বানীর বড় পুত্র মুকেশ। তাঁর বিশ্বাস ছিল রিলায়েন্স জিও ইন্টারনেট ব্যবহারে যে নয়া দিশা উন্মোচন করেছে, তাকে গ্রহণ করবে মানুষ। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে যখন নিজের মুখে রিলায়েন্স জিও-র ৪জি পরিষেবাকে সমক্ষে নিয়ে এসেছিলেন তখন ভারতীয় টেলি যোগাযোগ ক্ষেত্রে ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে গিয়েছিল।
'জিও ওয়েলকাম ফ্রি অফার' থেকে শুরু করে 'হ্যাপি নিউ ইয়ার জিও অফার', 'জিও প্রাইম', 'জিও ধন ধনা ধন'- একের পর এক ফ্রি অফার দিয়ে গিয়েছেন মুকেশ। তাঁর একটাই ইচ্ছা আগে মানুষ যাচাই করে নিক জিও ৪জি পরিষেবা কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ইচ্ছাগুলিকে। সেই কাজে তিনি যে অনেকটাই সফল হয়েছেন তার প্রমাণ এই মুহূর্তে রিলায়েন্স জিও-তে নথিভুক্ত হওয়া প্রায় ১৫ কোটি গ্রাহক।
রিলায়েন্স জিও দিয়ে ভারতে বসবাসকারী কোটি কোটি মানুষের ব্যবহারিক জীবনটাকেই যে মুকেশ বদলে দিয়েছেন তা মানছে বিখ্যাত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ম্যাগাজিন ফোর্বস। তাই ফোর্বস-এর করা 'গ্লোবাল গেম চেঞ্জার্স'-এর তালিকায় শীর্ষস্থান পেয়েছেন মুকেশ। বিশ্বজুড়ে বহু শিল্পপতিকেই এই তালিকায় আনা হয়েছিল।
কিন্তু, সবাইকে পিছনে ফেলে ১ নম্বর স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার মুকেশ অম্বানী। হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস সংস্থা ডাইসন-এর কর্ণধার জেমস ডাইসন, মার্কিন বিশ্ব বিনিয়োগ সংস্থা ব্ল্যাক রক-এর সহকারী নির্মাতা ল্যারি ফিঙ্ক, সৌদি আরবের সহকারি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমন, সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা স্ন্যাপ-এর সহকারি নির্মাতা ইভান স্পিজেল, চিনের চেং ওই এবং আফ্রিকার খুচরো শিল্পের টাইকুন ক্রিস্টো উয়েসেরা সকলেই তালিকায় মুকেশের পরে স্থান পেয়েছেন।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে ফোর্বস জানিয়েছে, 'মাত্র ৬ মাসে ইন্টারনেট পরিষেবায় ১০ কোটিরও বেশি মানুষকে নথিভুক্ত করানো চাট্টিখানি কথা নয়। যখন অধিকাংশ সংস্থার মাথারা রেকর্ড মুনাফার জন্য শিরোনামে আসেন, ঠিক সেই ময়দানে দাঁড়িয়ে মানব সমাজের ভবিষ্যত জীবনকে আরও উন্নত করতে ক্ষতির অঙ্ক সহ্য করতে পিছপা হননি মুকেশ। এরাই সত্যিকারের সমাজ পরিবর্তক।'
আসলে মুকেশের ডিকশনারিতে অসম্ভব বলে কোনও শব্দই নেই। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই অম্বানীরও ডিকশনারিতে অসম্ভব বলে কোনও শব্দ ছিল না। বর্তমানের উপর দাঁড়িয়ে নয় ভবিষ্যতে ব্যবসার কথা ভেবে মুনাফার অঙ্ক ঠিক করো। এটাই ছিল ধীরুভাই অম্বানীর আদর্শ। মুকেশও যে তাঁর বাবার সেই দেখানো পথকে অনুসরণ করছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। নাহলে তেল আর গ্যাসের ব্যবসা করা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রি আজ টেলি যোগাযোগ নয়া দৃষ্টান্ত খাড়া করতে পারত না।