মানব-ঢাল খ্যাত মেজর আগেও রাতে হানা দিয়েছিলেন কাশ্মীরি কিশোরীর বাড়িতে, বিস্তারিত জানুন
মেজর লীতুল গগৈ যে মেয়েটির সঙ্গে রাত কাটাতে চেয়েছিলেন সেই মেয়েটির মা দাবি করেছেন, মেজর এর আগেও তাঁদের বুড়গামের বাড়িতে রাত্রীবেলা সমীর আহমেদকে নিয়ে হানা দিয়েছেন।
'মানব-ঢাল খ্যাত' মেজর লীতুল গগৈ, এক কাশ্মীরি কিশোরীর সঙ্গে রাত কাটাতে গিয়ে ধরা পড়ায় মুখ পুড়েছে সেনাবাহিনীর। মান বাঁচাতে দাবি করা হয়েছে, মেয়েটি প্রাপ্ত বয়স্ক এবং রাত কাটানোয় তারও সম্মতি ছিল। কিন্তু মেয়েটির মায়ের দাবি, মেজর গগৈ এর আগেও দু-বার রাতে তাদের বাড়িতে হানা দেন। তাঁর মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্কও নয়, বয়স তার ১৭।
গত বুধবার (২৩ মে) মেজর লীতুল গগৈ শ্রীনগরের গ্র্যান্ড মমতা হোটেলে একজন স্থানীয় কিশোরীকে নিয়ে রাত কাটাতে গিয়ে ধরা পড়েন। হোটেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় ওই কিশোরীকে ঘরে থাকতে দিতে না চায়নি। মেজর ও ওই কিশোরীর সঙ্গে ছিলেন বুড়গামের সমীর আহমেদ নামে অপর এক ব্যক্তি। এর আগে ফারুক দার নামে এক কাশ্মীরি যুবককে জিপের সামনে ঢাল হিসেবে বেঁধে ভোটকর্মীদের এক ভোট গ্রহনকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে জিতে নিয়েছিলেন সেনার অন্যতম সম্মান 'কমেন্ডেশন কার্ড'। ওই কিশোরীর মায়ের মুখ থেকে সেই 'সম্মানীয়' মেজরের আরও কুকূর্তির কথা জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বুড়গামের বাড়িতে ওই কিশেরীর মা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন, 'ও (কিশোরী), সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল ব্যাঙ্কে যাবে বলে। বলেছিল তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে। আমরা ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে (শ্রীনগরের ঘটনা) কোন ধারণাই ছিল না। অনেক পরে বিকালে গ্রামের অন্যরা আমাদের খবর দেয়।'
তাঁর দাবি, মেজর গগৈ এর আগেও রাতে দু-বার তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। কিশোরীর মা জানান, 'তিনি (গগৈ) আমাদের বাড়িতে দু'বার হানা দেন। একবার তো আমি সেনার লোক দেখে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। দুবারই তার সঙ্গে সমীর ছিলেন। তিনি আমাদের এই হানার কথা কাউকে না বলার জন্য সতর্ক করেছিলেন।'
তিনি আরও জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে, একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। বুধবার, সে বাড়ির লোককে বলেছিল, ব্যাঙ্কে কিছু টাকা জমা দিতে হবে। তার জন্য কিশোরীর মা কিশোরীটিকে ৫০০ টাকাও দিয়েছিলেন। মেয়েটি বেরনোর সময় সঙ্গে তার ব্যাগ ও ব্যাঙঅকার কাগজপত্রও নাকি নিয়েছিল।
গতকাল দাবি করা হয়েছিল রাত কাটানোর বিষয়টিতে দুপক্ষেরই সম্মতি ছিল। কিন্তু মেয়েটির মায়ের এই দাবি সত্যি হলে 'দুপক্ষের সম্মতি'-র বিষয়ে প্রশ্ন এসেই যায়। পাশাপাশি কিশোরীর মা দাবি করেছেন তাঁর মেয়ের বয়স ১৭। কিন্তু পুলিশ বলছে সে প্রাপ্তবয়স্ক। সে কারণেই তার বক্তব্য রেকর্ড করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একটি সূত্রের দাবি, মেয়েটির স্কুল এবং আধার রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে তার জন্ম। মাজরের সম্মান বাঁচাতেই তাঁর বয়স বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে কিনে তা নিয়েই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে গেছে। এদিকে, ঘটনাটি পরই মেয়েটিকে দূরের গ্রামে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।