লকডাউনের জন্য ধুঁকছে অধিকাংশ ছোট ব্যবসা, ঋণ পরিশোধের জন্য ছ’মাসের সময় চাইছে ব্যাঙ্কগুলি
লকডাউনের জন্য ধুঁকছে অধিকাংশ ছোট ব্যবসা, ঋণ পরিশোধের জন্য ছ’মাসের সময় চাইছে ব্যাঙ্কগুলি
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য গোটা দেশে লকডাউন চলছে। এই সময় একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে লেন–দেন সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়গুলি। কর্পোরেট থেকে খুচরো ব্যবসায়ী সব ক্ষেত্রেই ঋণ খেলাপিরা রয়েছে যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ঋণদাতাদের জন্য একটি মূল বিকাশের ক্ষেত্র। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষদের সম্প্রতি পর্যালোচনামূলক বৈঠকে কিছু উদ্বেগের বিষয় উঠে এসেছে।
লকডাউনের প্রভাব পড়েছে খুচরো ব্যবসায়
উৎপাদন ও পরিষেবা কেন্দ্রে বর্ধিত লকডাউন, যার ফলস্বরূপ কর্মী ছাঁটাই সহ বেতন কাটা, নতুন প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া, যার জেরে ঋণগ্রহীতারা ব্যাঙ্ককে ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হবে। গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে আরবিআইয়ের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। যেখানে খুচরো ব্যবসায়ীদের ঋণশোধ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তার কারণ হল লকডাউন কার্যকর হওয়ার কারণে কর্পোরেট ও ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের ব্যবসাগুলি একেবারে বসে গিয়েছে। যার জন্য ব্যাঙ্ককে ঋণ শোধ করতেও তারা ব্যর্থ হবেন। জানা গিয়েছে যে ২০১২-১৩ সাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি কর্পোরেট ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে খুচরো ঋণের দিকে উভয় ব্যাঙ্কই মনোনিবেশ করেছিল। ব্যাঙ্কগুলি সতর্ক করে জানিয়েছে যে লকডাউনের প্রভাবে চাহিদার পতন ও বেসরকারি ব্যবহারে মন্দা, এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পরিষেবা ও উৎপাদন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে, যার জন্য খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রেও ঋণ শোধ না করার সম্ভাবনা রয়েছে।
খুচরো ঋণের মধ্যে পড়ছে এই ঋণগুলি
গৃহ ঋণ হল খুচরা ঋণের সবচেয়ে বড় অংশ, যা উদ্বেগের প্রথম সূত্র। এরপর প্রথম পর্যায়ে খুচরো বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ হল ক্রেডিট কার্ড, ব্যক্তিগত ঋণ, ভোক্তাদের জন্য ঋণ, গাড়ি ও সম্পত্তির জন্য ঋণ।
তিন মাসের সময় যথেষ্ট নয়
আরবিআই যখন ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ পরিশোধে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত তিন মাসের স্থগিতাদেশের প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে ব্যাঙ্কিং সেক্টররা। কারণ লকডাউন ইতিমধ্যেই বেড়ে ৩ মে হয়ে গিয়েছে। এরপরও রেস্তোরাঁ, শপিং মল, সিনেমা হলের মতো ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল কার্যক্রম ও পরিষেবা শীঘ্রই চালু হয়ে যাবে বলেও আশা করা যাচ্ছে না। তাই আরবিআইকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য ব্যাঙ্কগুলির আরও সময় চাই বলেই বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি আরবিআইকে ৬ মাসের সময় দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই ছ'মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করবে ব্যাঙ্কগুলি।
আরবিআইয়ের কাছে ছ’মাসের সময় চেয়েছে ব্যাঙ্কগুলি
খুচরো ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধ (গৃহ, অটো, শিক্ষা এবং এফডির বিরুদ্ধে অগ্রিম ঋণ) বাকি রয়েছে ২৪.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। অধিকাংশ ব্যাঙ্কই বলেছে যে, ‘এই পরিস্থিতিতে তিনমাস পর্যাপ্ত সময় নয় ঋণ পরিশোধের জন্য। অনেক দেশের মতো এই দেশেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ৬ মাস সময়সীমা করে দিক। কারণ লকডাউনের সময় প্রচুর সংস্থাই এখন ধুঁকছে। তারা কোনওভাবেই এখন ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না।' যদিও আরবিআই এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি।