পার হয়েছে পাঁচ মাসেরও বেশি সময়, এখনও জ্বলছে বাগজান অয়েল ফিল্ড! ক্ষোভে ফুঁসছে অসম
অতিক্রান্ত হয়েছে পাঁচ মাসেরও বেশি সময়। কিন্তু এখনও জ্বলছে অসমের তিনসুকিয়ার বাগজান অয়েল ফিল্ড। অয়েলফিল্ডে বিস্ফোরণের জেরে ভয়াবহ আগুন ক্রমেই গ্রাস করছে গ্রামের পর গ্রাম৷ ইতিমধ্যে আশেপাশের জঙ্গল ও জলাজমিতে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন।
এদিকে বিধ্বংসী আগুনের লেলিহান শিখাকে বাগে আনতে ব্যর্থ হয়েছে সমস্ত সরকারি প্রচেষ্টাই। যার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন। তিনসুকিয়ার একটা বড় অংশের মানুষ। এদিকে বাগজান অয়েল ফিল্ডের এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের জেরে ডিব্রু শইখোয়া জাতীয় উদ্যান এবং মাগুরি মোটাপাং জলাভূমির জীব বৈচিত্র্য এখন চরম সংকটের মুখে।
এদিকে অয়েলফিল্ডের মতো সহজদাহ্য এলাকায় পাঁচের উপর আগুন জ্বলতে থাকায় তিনসুকিয়া সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বায়ুদূষণের পরিমাণও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সব থেকে বেশি সমস্যা বেড়েছে বয়ষ্কদের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জুনের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ১৪ দিন ধরে গ্যাস লিকের পরই বিধ্বংসে আগুনের করাল গ্রাসে চলে যায় বাগজান অয়েল ফিল্ড। তারপর থেকে বিরামহীন ভাবেই জ্বলে চলেছে গোটা এলাকা।
এতদিন ধরে কোনও নির্দিষ্ট এলাকা কেন্দ্র করে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শুধু অসম কেনো গোটা দেশের ক্ষেত্রেই আর দ্বিতীয় কোনও নজির নেই বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলে। দীর্ঘসময় গ্যাস লিকের পর প্রথমে একটি তেলের কুয়োয় আগুন লাগে বলে জানা যায়। তারপর ক্রমেই গোটা ওয়েলফিল্ডই আগুনের গ্রাসে চলে যায়। পরবর্তী আগুন নেভানোর কাজে ডাক পড়ে বায়ুসেনারও। কিন্তু হাজারো চেষ্টা-চরিত্র করেও এখনও থামেনি অগ্নিদেবের গর্জন।
এদিকে গোটা ঘটনা নিয়েই ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা একাধিকবার কথা বলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। ওই তেলের কুয়োয় লিকেজ শুরুর পরেই ৭০০ পরিবারকে ৩টি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও প্রাথমিক ভাবে জানা যায়। তবে এখও উদ্ধার কাজ চলছে। অন্যদিকে দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব না হলে জঙ্গলের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বড় অংশের চাষযোগ্য জমিও আগুনের গ্রাসে চলে যাবে বলেই জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এদিকে ইতিমধ্যেই গোটা অসম জুড়েই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ প্রতিবাদ। গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে ন্যাশ্যানাল গ্রিন ট্রাইবুনালের তরফে একটি কমিটিও ঘঠন করা হয়েছে। তাদের রিপোর্টেই জানা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে তেলের কুয়ো ব্যবহারের কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড। অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমের হাত ধরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও ক্ষোভে ফুঁসছে নেটিজেন মহলের একটা বড় অংশ।