
ফাঁকা আশ্বাস, ভেঙেছে প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস! ৮০ শতাংশের বেশি কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার ছেড়েছেন উপত্যকা
একের পর এক টার্গেট কিলিং। সরকারের নিরাপত্তার প্রতি বিশ্বাস ভেঙেছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের (Kashmiri Pandit)। ফলে শতকের পর শতক ধরে বসবাসের পরে এবার পিতৃপুরুষের ভিটা ছাড়ছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। অনন্তনাগের মতো কোনও কোনও জায়গায় প্রায় ৮০ শতাংশের ওপরে কাশ্মীরি পণ্ডিত এলাকা ছেড়েছেন। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা ছাড়ার ঘটনায় আঙুল উঠেছে মোদী সরকারের প্রতিও।

রাজ্যের প্রধান বিচারপতির কাছে হস্তক্ষেপ দাবি
কাশ্মীর থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রের কাছে। সে দাবি মানেনি মোদী সরকার। টার্গেট কিলিং শুরু হওয়ার পর থেকে আস্তে আস্তে উপত্যকা ছাড়া শুরু করেছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। শুক্রবার এই সংখ্যাটা ছিল চোখে পড়ার মতো।
শতশত মানুষ উপত্যকা ছেড়ে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মুতে চলে গিয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সংগঠন কাশ্মীরি পণ্ডিত সংগ্রাম সমিতি জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কাছে খোলা চিঠি দিয়ে পণ্ডিতদের উপত্যকা ছেড়ে
যাওয়ার অনুমতি দেওয়া জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছে। চিঠিতে সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা জঙ্গিদের কাছ থেকে সরাসরি হুমকি পাচ্ছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসন তাঁদের জীবন রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করা
হয়েছে।

অনন্তনাগ ছেড়েছেন ৮০ শতাংশের বেশি পরিবার
দক্ষিণ কাশ্মীরের মাত্তান এবং ভেসু, শ্রীনদরের শেখপোরা এবং উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লা ও কুপওয়ারার কলোনিগুলি থেকে পণ্ডিত-সরকারি কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহনে উপত্যকা ছাড়ছেন এবং ছেড়েছেন। অনন্তনাগের মাত্তান কলোনি ছেড়েছেন ৮০ শতাংশের বেশি পরিবার। যাঁরা এলাকায় ছেড়েছেন, তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে তাঁরা ফাঁকা আশ্বাসই শুনতে পান। সাম্প্রতিক টার্গেট কিলিংয়ের পরে তারা একেবারের নিরাপদ বোধ করছেন না বলেও জানিয়েছেন। মাত্তান কলোনিতে বসবাসকারী
৯৬ টি পরিবারের মধ্যে কমবেশি ১২ টি পরিবার এখনও রয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আগামী দিনে তাঁরা এলাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
মাত্তান এলাকায় বসবাসকারী ২৫০ জন কাশ্মীরি পণ্ডিতদের অধিকারংশই সূর্য ওঠার আগে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে প্রায় ২৯০ কিমি দূরে গাড়ি ভাড়া করে জম্মুতে চলে যান।

টার্গেট কিলিং-এ সন্ত্রস্ত
উপত্যকার একের পর এক খুন হচ্ছে। স্কুল শিক্ষক ছাড়াও ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে খুন করা হয়েছে। যার জেরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস ভেঙে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কর্মীদের কাশ্মীরের বাইরে স্থানান্তর করা হোক। শুধুমাত্র কর্মীদের জেলা সদরে সরিয়ে দিলেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলেও মনে করছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা।

জম্মুর ক্যাম্পেই যাচ্ছেন
১৯৯০ সালে কাশ্মীর অশান্ত হয়ে ওঠার সময় জম্মুর জাগতি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। সেই ক্যাম্পেই কুপওয়ারা এবং বারামুল্লা থেকে প্রায় ১২০ টি পণ্ডিত পরিবার সেখানে গিয়েছেন। কাশ্মীরি পণ্ডিতরা বলছেন ১৯৯০-এর পর থেকে পণ্ডিতদের হত্যা বন্ধ হয়নি। তবে এই মুহূর্তে তাঁরা নিশ্চিত
নন কোন জায়গাটি নিরাপদ, বলছেন তাঁরা।
অনন্তনাগের জামা মসজিদের ইমাম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে হামলা ও হত্যার ঘটনার নিন্দা করেছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দেওয়ার আবদেন তিনি করেছেন।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত ঘনিষ্ঠ একাধিক বিধায়ককে জেরা সিবিআইয়ের