গান্ধী ভীতিতে মুখে কুলুপ কংগ্রেস নেতাদের! সভাপতি ইস্যুতে অসন্তুষ্ট শতাধিক শীর্ষ নেতা
সভাপতির পদ থেকে এক বছর আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে এর জেরে কংগ্রেসের সংগঠনে রদবদল করতে কোনও অসুবিধা হয়নি রাহুল গান্ধীর। কারণ কংগ্রেস মানে এখনও সেই গান্ধী পরিবার। অন্তরবর্তিকালীন সভানেত্রী রাহুলের মা হওয়ায় আদতে ক্ষমতা থেকে গিয়েছে গান্ধীদের হাতেই। আর এর জেরেই অসন্তোষ জন্মাতে শুরু করে দলের অন্দরে।
অসন্তোষের ইঙ্গিত
এই অসন্তোষের ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। কয়েকদিন আগে বিস্ফোরক দাবি করেন বহিস্কৃত কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা। গত সপ্তাহের সোমবার সকালে কংগ্রেসের অভ্যন্তরের তথ্য ফাঁস করে সঞ্জয় ঝা টুইট করে জানান, বিধায়ক ও সাংদস মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়াকে নতুন করে কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্যে আবেদন জানান।
২৩ জন শীর্ষনেতার চিঠি সনিয়া গান্ধীর
পরে জানা যায় যে সত্যি সত্যিই দলের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের দাবি জানায় শীর্ষ নেতৃত্ব। ২৩ জন শীর্ষনেতা এই মর্মে সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন। পাশাপাশি তাঁরা ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের জন্যও আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের চিঠির উত্তরে সনিয়া গান্ধী জানিয়েছিলেন, বৈঠক হবে। সকলে মিলে নতুন সভাপতির খোঁজ করা হবে।
অসন্তুষ্ট কংগ্রেসের হেভিওয়েটরা
যে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে তাতে স্বাক্ষর রয়েছে কপিল সিব্বল, শশী থারুর, গুলাম নবি আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তানখা এবং আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতাদের। দাবি করা হয়েছে, রাহুল গান্ধী যদি দলের সভাপতি পদ গ্রহণে ইচ্ছুক না হন তবে দলের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে উপযুক্ত নেতা বেছে নেওয়া হোক ৷ সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্ব থেকে তৃণমূলস্তর,সব জায়গাতেই আমূল সংস্কারেরও দাবি তুলেছেন কংগ্রেসের ওই পোড়খাওয়া প্রবীণ নেতারাই৷ তবে চিঠিতে স্বাক্ষর না থাকলেও আদতে এই চিঠির সমর্থনে রয়েছে শতাধিক কংগ্রেস নেতা।
গান্ধী ভীতি
তাহলে ১০০ জন নেতাই কেন এই চিঠিতে স্বাক্ষর করলেন না। জানা গিয়েছে, শাস্তি পাওয়ার ভয়তেই গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে যেতে সাহস দেখাননি কংগ্রেস নেতারা। তবে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর সেই সনিয়ার হাতেই থাকল ক্ষমতার ছড়ি, আর তাতেই অসন্তোষ আরও বাড়তে শুরু করেছে দলের অন্দরে।
বদল চান ১০০ জনের বেশি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস শীর্ষ নেতা জানান, লোকসভার ১২ জন সাংসদ এবং রাজ্যসভার ১২ জন সদস্য ছাড়াও দেশজুড়ে ১০০ জনেরও বেশি কংগ্রেস নেতা এই চিঠিতে সই করতে প্রস্তুত ছিলেন। তবে তাঁরা পরবর্তীতে ভয়ে আর এই চিঠিতে সই করেননি, কারণ তাঁদের ভয় ছিল যে পরবর্তীতে তাঁদের আর দলের তরফে টিকিট দেওয়া হবে না বা সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
গোপন বৈঠকে চড়ছে পারদ
জানা গিয়েছে চিঠিতে স্বাক্ষর করা নেতাদের মধ্যে ৯ জন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর আজাদের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। যেই ২৩ জন নেতা চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা শুধু চান দল যেভাবে ক্রমাগত নানা দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, তার সমাধানে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং দলে সংস্কারের জন্য যেন উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অসন্তুষ্ট কপিল সিব্বল
এছাড়া কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট পদে সনিয়া গান্ধীর উপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কপিল সিব্বলও। কপিল সিব্বল অভিমানের কম্বল জড়ানো এক টুইটে বুঝিয়ে দিলেন যে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরও কংগ্রেস এখনও স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছায়নি। এবং অসন্তোষের আগুন এখন দলের অন্দরে ধিকধিক করে জ্বলছে।
কী বলেন কপিল সিব্বল
কোনও বিষয় স্পষ্ট না করেই কপিল সিব্বল শুধু টুইট করেন, 'এটা শুধুমাত্র কোনও পোস্টের (কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট) বিষয় না, এটা আমার দেশের বিষয়, যাকে আমি সব থেকে বেশি ভালোবাশি।' আর এরপরই ফের জল্পনা শুরু হয় যে, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা বলে এক দফা শান্তি ফিরলেও দীর্ঘক্ষণ তা বিরাজ করল না। কারণ কংগ্রেসের ক্ষমতা এখনও সেই গান্ধীদের হাতেই রয়েছে।
টার্গেটে সংসদভবন! নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা দিল্লিতে গ্রেফতার সন্দেহভাজন কাশ্মীরি