নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহারের দাবিতে পিটিশনে সই ১০০০ জনেরও বেশি বুদ্ধিজীবীর
বিতর্কিত
নাগরিকত্ব
সংশোধনী
বিল
প্রত্যাহারের
দাবিতে
এবার
একটি
পিটিশনে
সই
করলেন
১০০০
জন
বিজ্ঞানী
ও
বুদ্ধিজীবী।
একইসাথে
ওই
পিটিশনে
ভারতীয়
সংবিধানে
উল্লিখিত
সকল
ধর্মীয়
মানুষের
সমানাধিকারের
বিষয়েও
সওয়াল
করা
হয়েছে।
সোমবার
দীর্ঘ
৭
ঘণ্টার
ম্যারাথন
তর্কবিতর্ক
শেষে
মধ্যরাত্রে
নাগরিকত্ব
আইন
১৯৫৫-র
পরিবর্তিত
রূপ
হিসেবে
নাগরিকত্ব
সংশোধন
বিল
২০১৯
নিয়ে
আসে
বর্তমান
বিজেপি
শাসিত
কেন্দ্র
সরকার।
নতুন
এই
বিলের
মাধ্যমে
ভারতীয়
নাগরিকত্ব
প্রদানের
ক্ষেত্রে
অভিবাসীদের
৬
থেকে
১১
বছর
পর্যন্ত
ভারতে
বসবাসের
প্রয়োজনীয়তার
নিয়মকেও
অনেকটাই
শিথিল
করছে।
বুদ্ধিজীবীদের মতে, নাগরিক নির্ধারণের মাপকাঠি হিসাবে ধর্মকে বেছে নেওয়া হয়েছে যা চূড়ান্তভাবে অগণতান্ত্রিক ও সংবিধানের পরিপন্থী। রাজ্যসভায় আইন প্রণয়নের পর্যায় শেষে মানবাধিকার কর্মী হর্ষ মন্দার টুইট করেন, "আমি আইনি পথে নিজেকে মুসলিম হিসেবে নথিভুক্ত করব এবং এনআরসি সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা দিতে অস্বীকার করব। দরকার পড়লে নিজের এনআরসিতে বাদ পড়া মুসলিম ভাইদের সাথে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতেও রাজি আমি। আসুন, আপনারাও এই আইনি অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিন।"
শিক্ষাবিদ প্রতাপ ভানু মেহতাও এই বিলকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে যার দ্বারা একটি সংবিধান স্বীকৃত গণতন্ত্রকে সরাসরি সরকারিভাবে একটি অসাংবিধানিক অগণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষাবিদ রামচন্দ্র গুহর মতে, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বরাবরই সাভারকারপন্থী, আসলে উনি মহম্মদ-আলি-জিন্নার দ্বিজাতিতত্ত্বকে সমর্থনই করছেন।"
পিটিশনের বক্তব্যে লেখা হয়, "নাগরিকত্ব বিচারের মাপকাঠি হিসাবে ধর্মকে ব্যবহার করছে এই বিল। তা যে শুধুমাত্র ভারতের সর্বধর্ম-সমন্বয়য়ের ইতিহাসকে অবমাননা করে তাই নয়, বরং সাংবিধানিক কাঠামোকেও অগ্রাহ্য করে। অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে মুসলিমদের এইভাবে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চনা ভারতীয় বহুত্ববাদের ধারণাকে বিনষ্ট করবে"।
পিটিশনে সই করা ব্যক্তিত্বরা প্রত্যেকেই নামীদামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। তাদের মধ্যে অনেকেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটস অফ টেকনোলজি, দ্য ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটস অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, চেন্নাই ম্যাথম্যাটিকাল ইন্সটিটিউট, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরেটিকাল সায়েন্স, টাটা ইন্সটিটিউট ফর ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ, বন বিশ্ববিদ্যালয়, জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়, অসলো বিশ্ববিদ্যালয় সহ একাধিক নামজাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের যে সমস্ত মানুষেরা ভারতে এসেছিলেন তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যেই মূলত এই বিলটি পাস করানো হয় বলে সরকারি সূত্রে খবর। লোকসভায় বিলটির পক্ষে ৩১১টি এবং বিপক্ষে ৮০টি ভোট পড়ে।
চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিলটিকে বুধবার রাজ্যসভায় পাঠানো হতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও সোমবার লোকসভায় বিলটি পাশের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, "এই বিলের সঙ্গে ভারতীয় মুসলিমদের কোনও সম্পর্ক নেই। কেবলমাত্র পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বিলটি নিয়ে আসা হয়েছে।"