খরার থেকেও মারাত্মক অতিবৃষ্টি! কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে সমীক্ষায় উঠে এল ভয়াবহ তথ্য
শুধু খরা বা অনাবৃষ্টি নয়, কৃষক আত্মহত্যার পিছনে অন্যতম মূল কারণ অতিবৃষ্টিও। নয়া এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে অতিরিক্ত বর্ষণের ফলে ফসল নষ্ট হওয়ার জেরে বহু গ্রামে থাকা মানুষ, যাদের বেশিরভাগই কৃষক, আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। গত ১৫ বছরে এই সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে বলেও জানানো হয় সমীক্ষার রিপোর্টে।
বর্ষণের সময় আত্মহত্যার হার ১৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়
২০০১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এলোমেলোভাবে নির্বাচিত গ্রামীণ অঞ্চলে ৯৪৫৬ আত্মহত্যা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে বর্ষণের সময় আত্মহত্যার হার ১৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এবং খরার সময় স্বাভাবিকের থেকে মাত্র ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায় আত্মহত্যার হার। এতেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এই নয়া ট্রেন্ড নিয়ে।
মহামারীবিজ্ঞানীদের সমীক্ষা
মহামারীবিজ্ঞান বিভাগে রবিন এ রিচার্ডসনের নেতৃত্বে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলম্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইআইটি গান্ধীনগরের গবেষকরা মিলিয়ন ডেথ স্টাডি থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে এই সমীক্ষা চালান। ২০০১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এলোমেলোভাবে নির্বাচিত গ্রামীণ অঞ্চলের আত্মহত্যা নিয়ে তাঁরা গবেষণা চালান।
অতিবৃষ্টির ভয়াবহ উদাহরণ
অতিবৃষ্টি যে কতটা মারাত্মক তার একটি উদাহরণ মেলে মধ্যপ্রদেশেই। সম্প্রতি সেরাজ্যে অতিবৃষ্টির কারণেই এক সপ্তাহে আত্মহত্যা করেছেন ৮ জন কৃষক। মধ্যপ্রদেশে আসন্ন নির্বাচনের আবহে এক সপ্তাহে ৮ জনের বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। অত্যধিক বৃষ্টির কারণে ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই ফসল ফলানোর জন্য চাষিরা যে টাকা ঋণ নিয়েছিলেন, তা পরিশোধ করতে না পারার আশঙ্কায় এই আত্মহত্যা বলে জানি গিয়েছে।
গতবছর ৪৩ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছেন
এদিকে ভারতের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গতবছর কৃষি ক্ষেত্রে এবং দিন মজুরির সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে দিনমজুরের সংখ্যা ৩২ হাজার ৫৬৩। যা দেশে আত্মহত্যার পরিমাণের ২৩.৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ১৩২। ওই বছর কৃষি ক্ষেত্রে নিযুক্ত ১০ হাজার ৩৪৯ জন আত্মহত্যা করেন। অন্যদিকে কৃষির সঙ্গে যুক্ত ১০ হাজার ২৮১ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছেন ২০১৯ সালে। এর মধ্যে কৃষক রয়েছেন ৫ হাজার ৯৫৭ জন। কৃষির সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক রয়েছেন ৫ হাজার ৩২৪ জন। যা মোট আত্মহত্যার ৭.৪ শতাংশ।
কৃষক আত্মহত্যার বিশদ বিবরণ
২০১৯ সালে যে ৫ হাজার ৯৫৭ জন কৃষক আত্মঘাতী হন তাঁদের মধ্যে ৫ হাজার ৫৬৩ জন পুরুষ ও ৩৯৪ জন মহিলা। একই বছরে কৃষি ক্ষেত্রে যুক্ত যে ৪ হাজার ৩২৪ জন শ্রমিক আত্মঘাতী হন তাঁদের মধ্যে ৩ হাজার ৭৪৯ জন পুরুষ ও ৫৭৫ জন মহিলা। দেশের যেসব রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা সবথেকে বেশি তাদের মধ্যে মহারাষ্ট্র (৩৮.২ শতাংশ) সবার আগে রয়েছে। এরপরে রয়েছে কর্নাটক (১৯.৪ শতাংশ), অন্ধ্রপ্রদেশ (১০ শতাংশ), মধ্যপ্রদেশ (৫.৩ শতাংশ), ছত্তিশগড় (৪.৯ শতাংশ) ও তেলাঙ্গানা (৪.৯ শতাংশ)।
লাদাখে ড্রাগনদের সেনা বৃদ্ধির মাঝেই মস্কোতে বৈঠক, চিনা বিদেশমন্ত্রীকে কড়া বার্তা জয়শঙ্করের