সামান্য মাংস ব্যবসায়ী থেকে প্রভাবশালী! ৩ সিবিআই প্রধানের অপসারণের পিছনে যে ব্যক্তি
একবছর ধরে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার মধ্যে লড়াই চলার পর তাদের দুজনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
একবছর ধরে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার মধ্যে লড়াই চলার পর তাদের দুজনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরমধ্যেই একটি নামকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মইন আখতার কুরেশি। পূর্বতন দুই সিবিআই প্রধান এপি সিং এবং রঞ্জিত সিনহার অপসারণের পিছনেও এই ব্যক্তি। মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
কানপুরের বহুকোটির মাংস রপ্তানিকারক মইন আখতার কুরেশির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি তদন্ত চলছে। ট্যাক্স ফাঁকি থেকে শুরু করে অর্থ পাচার কিংবা দুর্নীতি, অভিযোগ রয়েছে মইন আখতার কুরেশির বিরুদ্ধে। হাওলার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এছাড়াও সিবিআই-সহ সরকারি অফিসার এবং রাজনীতিবিদদের খুশি করার অভিযোগও রয়েছে মইন আখতার কুরেশির বিরুদ্ধে।
২০১৪-তে প্রথম প্রকাশ্যে আসে মইন আখতার কুরেশির নাম। যখন দেখা যায় তৎকালীন সিবিআই প্রধান রঞ্জিত সিনহার বাসভবনে ১৫ মাসে ৭০ বার গিয়েছিলেন মইন আখতার কুরেশি। বর্মা এবং আস্থানার মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধে হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী সতীশ বাবু সানার নাম প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, গতবছর ইডির কাছে সানা জানিয়েছেন, সিনহার মাধ্যমে নিজের এক বন্ধুর জামিনের জন্য কুরেশিকে তিনি এককোটি টাকা দিয়েছিলেন।
এই ঘটনার জেরে সুপ্রিম কোর্টের তরফেও সিনহাকে তিরষ্কার করা হয়। তিনি সিবিআই-এর স্ক্যানারে চলে আসেন। ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সিবিআই-এর প্রধান পদে ছিলেন সিনহা। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
২০১৪-তে দেখা যায়, কুরেশি অপর এক সিবিআই ডিরেক্টর এপি সিং-এর সঙ্গে বার্তা বিনিময় করেছেন। ২০১০ থেকে ২০১২-র মধ্যে সিবিআই-এর প্রধান পদে ছিলেন এপি সিং। আয়কর এবং ইডির তরফ থেকে প্রথমে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয় গতবছরের ফেব্রুয়ারিতে। কুরেশির সঙ্গে যোগসাজস প্রমাণে সিবিআই-এর তরফ থেকেও সিং-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠার জেরে ইউপিএসসির-এর সদস্যপদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সিং-কে। সিং-ও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগই করেনি।
[আরও পড়ুন:নির্বাসিত সিবিআই প্রধানের ওপরেই 'নজরদারি'! তারপর যা হল ]
এবার কুরেশির নাম জড়িয়ে যাওয়ায় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অলোক বর্মাকে। যুগ্ম ডিরেক্টরের অভিযোগ ছিল বর্মা সানার কাছ থেকে দুকোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। অন্যদিকে, বর্মার তরফ থেকেও আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে অভিযোগ করেন আস্থানা সানার কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা নিয়েছেন।
[আরও পড়ুন:গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণে মোদী সরকার ! প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শেষ নির্দিষ্ট সময়েই আগেই ]
উত্তর প্রদেশের রামপুরে ১৯৯৩ সালে একটি ছোল কষাইখানা দিয়ে ব্যবসা শুরু পর কুরেশি এখন ভারতের সব থেকে বড় মাংস রপ্তানিকারক। গত ২৫ বছরে নির্মাণ, ফ্যাশন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৫ টি কোম্পানি তৈরি করেছেন মইন আখতার কুরেশি।