'আমার ছেলে খুন হওয়ার এক মাস বাদে খবর পাই, তারপর থেকে..' পদ্মশ্রী পেতে চলা মহম্মদ শরিফের অজানা কাহিনি
'আমার ছেলে খুন হওয়ার এক মাস বাদে খবর পাই, তারপর.. ' পদ্মশ্রী পেতে চলা মহম্মদ শরিফ জানালেন কোন কাহিনি
স্থানীয়দের মধ্যে তাঁর পরিচিতি বহুদিনের । তবে পদ্মশ্রী পেতে চলা মহম্মদ শরিফ রাতারাতি প্রচারের আলোয় এসে গিয়েছেন চলতি বছরের পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকা প্রকাশ হতেই। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের নানান ব্যক্তিত্বদের এই সম্মান তুলে দেওয়া হয় প্রতিবারই । আর সেই পরম্পরা মেনে এবারেও ঘোষিত হয়েছে পদ্মশ্রীপ্রাপকদের তালিকা। যার মধ্যে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মহম্মদ শেরিফ। যিনি স্থানীয়দের কাছে আদরের 'শেরিফ চাচা' নমে সম্মানিত ও পরিচিত। সেই মহম্মদ শেরিফই এবার বললেন তাঁর করুণ কাহিনি।
২৭ বছর ধরে বেওয়ারিশ মৃতদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন মহম্মদ শরিফ
ফৈজাবাদের ছোট্ট একটি এলাকা। যেখানে পাড়ার মানুষ মহম্মদ শরিফকে 'শরিফ চাচা' বলে ডাকেন। এমনই এক এলাকায় মহম্মদ শরিফের একটি সাইকেলের দোকান রয়েছে। পেশায় তিনি সাইকেল মেকানিক। তবে এক মর্মান্তিক ঘটনা তাঁকে নিয়ে গিয়েছে বেওরিস দেহ সৎকারের কাজের দিকে। যে ঘটনা আজও করুণ-কাতর কণ্ঠে স্মরণ করেন মহম্মদ শরিফ।
|
'আমার ছেলে খুন হওয়ার এক মাস বাদে খবর পাই, তারপর.. '
কেন আচমকা বেওয়ারিস লাশেরই সৎকার করেন মহম্মদ শরিফ? প্রশ্নের উত্তরে এই বৃদ্ধ ব্যক্তির দাবি, 'আমার ছেলের খুন হয়েছে ২৭ বছর আগে। ওঁর খুনের এক মাস পর জানতে পারি যে ও মারা গিয়েছে। তারপর থেকেই আমি মৃতদেহ সৎকারের কাজ হাতে নিয়েছি। '
'ছেলের পচাগলা মৃতদেহ এসেছিল বাড়িতে...'
বুক চাপা আবেগ সঙ্গে নিয়ে মহম্মদ শরিফ বলেন, সুলতানপুরে কাজ করতে গিয়ে আচমকা গুম হয়ে যায় তাঁর বড় ছেলে। পরে বাড়িতে একমাস পর এসেছিল সেই ছেলের পচা গলা দেহ। যার খানিকটা অংশ তখন ছিঁড়ে কুঁড়ে খেয়ে নিয়েছে কুকুর বেড়াল। এরপর থেকেই বেওয়ারিস মৃতদেহকে শেষ সৎকার টুকু দেওয়ার মহান উদ্যোগ নেন এই ৮২ বছরের বৃদ্ধ।
আরও এক করুণ কাহিনি..
'আমি এপর্যন্ত ৩০০০ জন হিন্দুর দেহ সৎকার করেছি। আর ২৫০০ জন মুসলিমের দেহ সৎকার করেছি ।' এমন কথা অকপটেই বলে চলেন মহম্মদ শরিফ। সন্তানহারা পিতার শোক, যন্ত্রণা মুছে ফেলে , ধর্মের ভেদাভেদ না দেখে অক্লান্ত ভাবে গত ২৭ বছর ধরে সমাজকে এক অন্য রকমের 'সেবা' দিয়ে গিয়েছেন মহম্মদ শরিফ।
সিএএ নিয়ে অমিত শাহকে দেওয়া হবে সম্বর্ধনা, আয়োজনে বাঙালি উদ্ধাস্তু সংগঠন