বিলকিস বানো মামলায় দোষীরা ‘সংস্কারী হিন্দু’! গুজরাত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী বিতর্কিত বিধায়ক
বিলকিস বানো মামলায় যিনি দোষী দোষীদের সংস্কারী হিন্দু বলেছিলেন, গুজরাত নির্বাচনে তিনি বিজেপি প্রার্থী,
বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তে যে বিজেপি নেতা যুক্ত ছিলেন, গুজরাত নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের 'সংস্কারী ব্রাহ্মণ' বলে উল্লেখ করেছিলেন। গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে গোধরা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
প্রাক্তন মন্ত্রী চন্দ্রসিংহ রাউলজি গোধরা থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। তিনি এই আসন থেকে ছয়বারের বিধায়ক। ২০০২ সালে দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের নয় জনকে হত্যার মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দোষীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকারের এক কমিটি। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন চন্দ্রসিং রাউলজি। বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের 'সংস্কারী হিন্দু' বলে উল্লেখ করেছিলেন। এই মন্তব্যের জেরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
এক সাক্ষাৎকারে চন্দ্রসিং রাউলজি বলেছিলেন, 'দোষীরা হিন্দু ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণদের শিক্ষা ও সংস্কার সব সময় উচ্চমানের হয়। কেউ তাঁদের ষড়যন্ত্র করে ফাসিয়েছিল।' পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন, দোষীরা জেলের ভিতর অত্যন্ত ভালো আচরণ করেছিলেন। ১৫ অগাস্ট ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তি দেওয়া হয়।
বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তি দেওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, মুক্তি দেওয়ার পর গোধরার বিজেপি নেতা কর্মীরা দোষীদের বীরের সম্মান দেয়। তাঁদের ফুলের মালা পরিয়ে মিষ্টি মুখ করিয়ে অভিনন্দন জানায় বিজেপি।
২০১৭
সালে
বিধানসভা
নির্বাচনের
আগে
চন্দ্রসিং
রাউলজি
কংগ্রস
ছেড়ে
বিজেপিতে
যোগদেন।
বিজেপির
হয়ে
তিনি
গোধরা
থেকে
প্রার্থী
হয়েছিলেন।
তিনি
গোধরা
বিধানসভা
কেন্দ্রের
কংগ্রেস
প্রার্থীকে
২৫৮
ব্যবধানে
হারিয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের
মুখোমুখি
হয়ে
বিলকিস
বানো
মামলায়
অন্যতম
দোষী
বলেন,
'আমি
নির্দোষ।'
এরপরেই
তিনি
মন্তব্য
করেন,
'আপনি
কখনও
শুনেছেন
কাকা
ভাইপো
একে
অপরের
সামনে
ধর্ষণ
করছে,
শোনেনি।
কারণ
হিন্দুরা
এই
ধরনের
কাজ
করে
না।'
অন্যদিকে
বিলকিস
বানো
মামলায়
অন্যতম
দোষীর
বিরুদ্ধে
একাধিক
অভিযোগ
ছিল।
তাঁর
বিরুদ্ধে
অভিযোগ
ছিল,
প্যারোলে
মুক্তি
পেয়ে
বাইরে
বেরিয়ে
সাক্ষীদের
হুমকি
দিয়েছিলেন।
যদিও
তাঁরা
জেলের
ভিতর
ভালো
ব্যবহারের
জন্য
মুক্তি
পেয়েছেন।
গোবিন্দ
নাই
বা
তাঁর
বাবা
এই
বিষয়ে
কোনও
কথা
বলতে
অস্বীকার
করেন।
তাঁরা
সাংবাদিকদের
গ্রাম
থেকে
বেরিয়ে
যাওয়ার
হুমকি
নেই।
চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের মুক্তি দেওয়া হয়। দোষীদের বিরুদ্ধে বিলকিস বানো সহ একাধিক মহিলাকে গণধর্ষণ ও একই পরিবারের সাতজনকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। বিলকিস বানোর বাড়ির আশেপাশেই দোষীদের বাড়ি। প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে একাধিকবার সাজাপ্রাপ্তরা সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু তারা একেবারে মুক্তি পেয়ে গিয়েছে চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট। কারণ হিসেবে জেলে ভালো ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছে গুজরাত সরকারের কমিটি। ঘটনার বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। গ্রাম ছাড়া হয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে, বিলকিস বানোর বাড়ির উল্টোদিকে বাজির দোকান দিয়েছে, রাধেশ্যাম শাহ। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ২০০২ সালের নির্মম ঘটনার পর থেকেই বিলকিস বানো তাঁদের গ্রামে থাকে না। বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবার নিজেদের বাড়িটিকে একটি হিন্দু পরিবারকে ভাড়া দিয়েছেন।