পরিযায়ী শ্রমিকরা কেন ত্রস্ত, ব্যাখ্যা করলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়
পরিযায়ী শ্রমিকরা যে যেখানে ছিলেন, সেই শহর ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ির দিকে এগিয়ে চলেছেন পায়ে হেঁটে। প্রশ্ন উঠছে কেন ত্রস্ত এইসব পরিযায়ী শ্রমিকরা। কেননা লকডাউনে সরকার তাঁদের জন্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেই খবরটাই পৌঁছয়নি তাঁদের কাছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে পরিস্থিতির এমনটাই ব্যাখ্যা দিয়েছেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিস্মিত নন অভিজিৎ
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে একেবারেও বিস্মিত নন নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদ। তাঁর মতে গ্রামের বাড়িতে কিছু সংস্থান রয়েছে, যা বেঁচে থাকার রসদ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
তিনি বলেছেন অর্থনৈতিক চাপটা অবশ্যই। গ্রামের বাড়িতে প্রায় সবারই কিছু জমি কিংবা অন্য রসদ রয়েছে। বাইরের রাজ্যে থাকলেও এইসব মানুষগুলিই বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে গিয়েছে মাসের পর মাস ধরে। যেসব জায়গায় তাঁরা কাজ করত সেখানে থাকা ও খাওয়ার জায়গা ছিল। তাতেই এতদিন চলে গিয়েছে। কিন্তু সেগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় থাকার জায়গার অভাব দেখা গিয়েছে এইসব শ্রমিকদের।

বার্তা পরিষ্কার নয়, শ্রমিকদের কাছে
নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে নিয়মগুলি পরিষ্কার নয়। যেই কারণে এইসব মানুষগুলোকে আতঙ্ক গ্রাস করেছে। কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকারগুলি এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি যাতে মনে হয়, ব্যবসা বন্ধ হলেও, তাদের চাকরি সুরক্ষিত রয়েছে। তিনি মনে করেন, সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বার্তা আরও পরিষ্কার হওয়া উচিত ছিল।

পুলিশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
তিনি মনে করেন এই পরিস্থিতিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বার্তাও যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পুলিশের তরফ থেকে মিশ্র বার্তা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ মুদি দোকান খুলে রাখার জন্য লাঠি দিয়ে মারছে দোকান মালিককে এই ছবিও ধরা পড়েছে। তিনি বলেন এটা সন্ত্রাস মুক্ত করার সময় নয়।

প্রসঙ্গ সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় মনেব করেন, এটা এমন নয় যে পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ অবগত নয়। তাঁরা ভাল করেই জানে ভাইরাস কীভাবেব ছড়ায়। কিন্তু মানুষ বুঝতে পারছে না পরিবর্তটা কী। তিনি মনে করছেন মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকতা বোধটাই হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর জন্য তাঁরাই দায়ী নয়। তাদের জন্য কী নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে, তা তাঁরা জানেন না। এই পরিস্থিতিতে হোটেলগুলিকে অধিগ্রহণ করা যেতে পারে

শহুরে গরিবদের অবস্থা আরও খারাপ
এই পরিস্থিতিতে শহুরে গরিবদের অবস্থা আরও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবিকার পাশাপাশি জীবনও হারাতে হতে পারে তাঁদের। একইসঙ্গে যদি সংক্রমণ গ্রামীণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, তাহলেও তা ছড়াবে। কেননা টয়লেটগুলি পরিষ্কার নয়।