মিড ডে মিল প্রকল্প : 'আধার'-এ ফাঁস ৩ রাজ্যের ৪.৪ লক্ষ 'ভূতুড়ে ছাত্রছাত্রী'
মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করাতে হইচই পড়ে গিয়েছিল। অথচ, এই আধার কার্ডের সাহায্যে ঝাড়খণ্ড, মণিপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের স্কুলগুলিতে ৪.৪ লক্ষ 'ভূতুড়ে ছাত্রছাত্রীর' খোঁজ মিলল।
নয়াদিল্লি, ২৭ মার্চ : মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করাতে হইচই পড়ে গিয়েছিল। অথচ, এই আধার কার্ডই মিড ডে মিল প্রকল্পের বড়সড় দুর্নীতি ফাঁস করল। ১২ সংখ্যার আধার নম্বরের সাহায্য়ে ঝাড়খণ্ড, মণিপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের স্কুলগুলিতে ৪.৪ লক্ষ 'ভূতুড়ে ছাত্রছাত্রীর' খোঁজ মিলল।
কেন্দ্রীয় সরকারের মিড ডে মিল প্রকল্পের আওতায় স্কুলগুলিতে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের কর্মরত দিনগুলিতে বিনামূল্যে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়।
মার্চ মাসেই কেন্দ্রীয় সরকার ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিলের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করে। সরকারি এই সিদ্ধান্তে জেরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সমাজকর্মীরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অভিযোগ তোলেন এই সিদ্ধান্তের জেরে বহু ছাত্রছাত্রীই মিড ডে মিল প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
যদিও কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ মন্ত্রকের প্রকাশ করা ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭- সালের সমীক্ষা বলছে দেশের তিনটি রাজ্যে ছাত্রছাত্রীদের একটা অংশ যারা নিয়মিত মিড ডে মিলের সুবিধা গ্রহণ করছে বলে অতিরিক্ত তহবিল খরচ করা হচ্ছে তাদের বাস্তবে কোনও অস্তিত্বই নেই। যেমন, অন্ধ্রপ্রদেশের ক্ষেত্রে ২৯ লক্ষ সরকারি স্কুলের প্রত্যেকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আধার নম্বর যোগ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২.১ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর শুধুমাত্র কাগজে কলমে অস্তিত্ব রয়েছে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসার পর তা যাচাই করে দেখে এই ২.১ লক্ষ নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর নাম বাতিল করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের ক্ষেত্রে এই ধরণের ভূতুড়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২.২ লক্ষ। রাজ্যের সরকারি স্কুলের ৪৮লক্ষ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৮৯ শতাংশের আধার নম্বর রয়েছে। মণিপুরের স্কুলগুলিতে ১৫০০ ছাত্রছাত্রীর অস্তিত্ব শুধু খাতায় কলমে রয়েছে।
ভারতের ১১.৫ লক্ষ স্কুলে ১৩.১৬ কোটি ছাত্রছাত্রীর নাম নথিভুক্ত রয়েছে। যাদের মধ্যে ১০.০৩ কোটি ২০১৫-১৬ সালে মিড ডে মিল প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছে। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে যদিও এখনও এই ভুয়ো ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিলের জন্য কত টাকা মোট খরচ হয়েছে তা হিসাব করে দেখতে হবে।
এই মুহূর্তে এই ১১ তোটি ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৩০ শতাংশ পড়ুয়ার সরকারি স্কুলে নাম নথিভুক্ত রয়েছে যাদের কাছে আধার কার্ড আছে। এই জুন মাসের মধ্যে কেন্দ্র সমস্ত ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আধারের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।