
'মার্কে'র ওষুধে কোভিডের মোকাবিলা! কেন গেমচেঞ্জার 'মোলনুপিরাভির'
করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের প্রথম ট্যাবলেট মোলনুপিরাভিরকে (Molnupiravir) ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে ব্রিটেন। বহুজাতিক ওষুধপ্রস্তুত কারক সংস্থা মার্কের তৈরি ওই ওষুধ অধিক উপসর্গযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে গেম চেঞ্জার হতে পারে। এছাড়াও শুরুতেই এই ওষুধের প্রয়োগে হাসপাতালে ভর্তি কমানোর পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যাও অর্ধেক করবে বলেই দাবি প্রস্তুত কারক সংস্থার।

মার্কের ওষুধ
সারা বিশ্বে করোনায় ৫০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে তা একেবারে নিয়ন্ত্রণে আসছে বলা যাবে না। টিকা দিয়ে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রয়েছে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করোনা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে, এমনটাও খবর পাওয়া গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যাঁদের এই রোগের উপসর্গ দেখা গিয়েছে কিংবা টিকা নেওয়ার পরেও আক্রান্ত হচ্ছে, তাঁদের জন্য এই মুহূর্তে জল দিয়ে গিলে খাওয়ার একমাত্র ওষুধ হচ্ছে মার্কের মোলনুপিরাভির।

তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে সাফল্য
আমেরিকার রিজব্যাক বায়োখেরাপিউটিকের সঙ্গে কাজ করে মার্ক মোলনুপিরাভির তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, এই ওষুধ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা যেমন কমিয়েছে, অন্যদিকে মৃত্যুর সংখ্যাও কমিয়েছে। মূলত স্বল্প থেকে মাঝারি উপসর্গের রোগীদের ওপরে এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়েছে।
সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে ৭৭৫ জন রোগীর ওপরে এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়েছিল। করোনা আক্রান্ত হয়ে উপসর্গ দেখা দেওয়ার ৫ দিনের মধ্যে এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়েছে। যা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধেক করে দিয়েছে। সংস্থার তরপে দাবি করা হয়েছে, যাঁদের ওপরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তার মধ্যে ৭.৩ শতাংশ রোগী যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। তবে যাঁদের প্লেসবো দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৪.১ শতাংশের মতো। সংস্থার দাবি মোলনুপিরাভির প্রয়োগের পরে কোনও মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসেনি। তুলনায় প্লেসবো দিয়ে যাঁদের চিকিৎসা হয়েছে, তার মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কীভাবে কাজ করে
সাধারণভাবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে আক্রান্তের আরএনএ রেপ্লিকেশনে জড়িয়ে পড়ে। সেই জায়গাতেই মোলনুপিরাভির বাধা তৈরি করে। ভাইরাসকে ফাঁকি দিয়ে আরএনএ-তে ঢুকে যায় এই ওষুধ, সেখান থেকে শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেয়। এর ফলে শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং রোগের প্রকোপও কমিয়ে দেয়।
মার্কের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের ল্যাবরেটরি এবং মানুষের ওপরে ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে মোলনুপিরাভির করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট্রের বিরুদ্ধে যথেষ্টই কার্যকরী। এই ডেল্টা প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল ২০২০-তে, ভারতে।
যাঁদের বয়স ৬০ বছরের বেশি কিংবা স্থূলতা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ওষুধের প্রয়োগ ক্ষতিকারক দিকটিকে কমিয়ে দেয়। এছাড়াও ব্রিটেনে লাজেভরিও নামের অপর একটি ওষুধ কার্যকরী হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

বাজারে কবে থেকে পাওয়া যাবে
মার্কের তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই ওষুধ তৈরি করছে। এবছরের শেষ নাগাদ এককোটি কোর্সের জন্য ওষুধ তৈরি করে ফেলতে পারবে। এই সংস্থা ইতিমধ্যেই আমেরিকা সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে সেখানে ১৭ লক্ষ কোর্সের ওষুধ সরবরাহের জন্য। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে তারা ওষুধ সরবরাহের ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই সংস্থাই আইভারমেকটিন তৈরি করেছিল, যা কিছুদিন করোনার জন্য ব্যবহারও করা হয়েছিল। পরে তা বাতিল করতে হয়। রোগীদের দিনে দুবার চারটে করে ওষুধ খেতে হবে, পরপর পাঁচদিন ধরে।
একাধিকবার ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক, থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশের তদন্ত শুরু