নির্লজ্জ, মর্যাদাহানিকর, যৌন বিকৃত, গগৈকে আক্রমণ কাটজুর
নির্লজ্জ, মর্যাদাহানিকর, যৌন বিকৃত, গগৈকে আক্রমণ কাটজুর
রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর থেকেই বিতর্কে দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। এ সিদ্ধান্তে গগৌকে কটাক্ষ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ। এবার সেই একই পথে হাঁটলেন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারক মরকান্দে কাটজু।
গগৈকে নিয়ে কাটজুর প্রতিক্রিয়া
কাটজু টুইটারে গগৈকে ‘যৌন বিকৃত' বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি জীবনের ২০ বছর একজন আইনজীবী হিসাবে এবং বিচরপতি হিসাবে ২০ বছর কাটিয়েছি। আমি এরকম অনেক ভালো ও মন্দ বিচারপতিদের চিনি। কিন্তু ভারতের বিচারব্যবস্থায় আমি এরকম কোনও নির্লজ্জ ও মর্যাদাহানিকর তথা রঞ্জন গগৈয়ের মতো যৌন বিকৃত মনস্ক বিচরপতিকে দেখিনি। এই ব্যক্তির মধ্যে সব ধরনের কলঙ্ক রয়েছে।' গগৈয়ের বিরুদ্ধে কাটজু এর আগেও বহু কটুক্তি করেছেন। এ বছরের জানুয়ারিতেই গগৈকে ‘বদমাশ ও শঠ' বলে আক্রমণ করেন কাটজু। প্রসঙ্গত, গগৈয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে এক মহিলা কর্মীকে যৌন হেনস্থা করার। এই অভিযোগের পরই ওই কর্মীকে বহিস্কার করে দেওয়া হয় ও পরে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে তাঁকে পুর্নবহাল করা হয়।
কুরিয়ান জোসেফও সরব
কাটজুর আগেই কুরিয়ান জোসেফ সহ বেশ কিছু প্রাক্তন বিচারপতি গগৈয়ের রাজ্য সভায় মনোনীত হওয়ার জন্য তাঁর তীব্র নিন্দা করেন। ২০১৮ সালের ১২ জানুয়ারি জোসেফের সঙ্গে গগৈ ও অন্য দুই বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, মদন বি লোকুর (সকলেই অবসরপ্রাপ্ত) সকলেই চাপের মুখে পড়ে তৎকালীন সিজেআইয়ের অধীনে শীর্ষ আদালতের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং জানান গগৌ ‘স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগীয় মহৎ নীতিগুলির সঙ্গে আপোস করেন।' এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘রাজ্যসভার মনোনয়ন গ্রহণ করে দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ভিত নড়িয়ে দিয়েছেন।'
নিন্দা বিচারপতি মহলে
দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি এপি শাহ ও আরএস সোধিও এ বিষয়ে গগৈয়ের তীব্র নিন্দা করতে পিছুপা হননি। সরকার দ্বারা গগৈয়ের মনোনয়নের বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিচারপতি সোধি জানিয়েছিলেন যে কোনও বিচারপতি কখনও অবসর গ্রহণ করেন না বা অবসর গ্রহণের পরেও তিনি তাঁর অবস্থানেই থাকেন। এর আগে, গগৈয়ের প্রাক্তন সহকর্মী তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন বি লোকুরও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন। বিচারপতি লোকুর বলেন, ‘বিচারপতি গগৈকে কী সম্মান প্রদান করা হবে তাই নিয়ে কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। সুতরাং এই মনোনয়নে অবাক হচ্ছি না, তবে এত দ্রুত হবে, সেটা ভাবিনি। এতে অবাক হচ্ছি বটে। এর ফলে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা এবং সততার নতুন সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। শেষ স্তম্ভেরও কি পতন ঘটল?'