'আরেকটা রাজীব গান্ধী ঘটনা' ঘটাতে চায় মাওবাদীরা, নিশানায় মোদীর রোড শো
একটি চিঠি থেকে জানা গেছে রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে মোদী জমানার অবসান ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল মাওবাদীরা। চিঠিটি মানবাধিকার কর্মী রোনা উইলসনের বাড়ি থেকে পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ।
রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটিয়ে মোদী জমানার অবসান ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল মাওবাদীরা। পুনের এক দায়রা আদালতে পুনে পুলিশ বিভাগের পেশ করা এক চিঠি থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে। পুলিশের দাবি চিঠিটি উদ্ধার হয়েছে সম্প্রতি মাওবাদীদের সঙ্গে যোগ থাকার সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া মানবাধিকার কর্মী রোনা উইলসনের বাড়ি থেকে।
গত বুধবার মাও-যোগের অভিযোগে শুধু নয়াদিল্লির রোনাকেই নয়, মুম্বইয়ের পরিচিত দলিত অধিকার কর্মী তথা প্রকাশক সুধীর ধাওয়ালে, বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবি সুরেন্দ্র গাদলিং, সাঁওতাল অধিকার রক্ষা কর্মী মহেশ রাউত ও নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী ভাষার অধ্যাপিকা সোমা সেনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নকশালপন্থীদের সঙ্গে যোগ থাকার পাশাপাশি গত ৩১ ডিসেম্বর 'এলগার পরিষদ' আয়োজন এবং তার পরদিন 'ভিমা-কোরেগাঁও'এর হিংসাত্মক ঘটনায় তাদের বিশেষ ভূমিকার থাকার অভিযোগ করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার তাদের এই পাঁচজনকে আদালতে তোলা হয়। সেসময়ই আদালতে পুলিশ চিঠিটি পেশ করে। চিঠিটির কয়েকটি অংশ আদালতে পড়েও শোনান বিশেষ সরকারি আইনজীবি উজ্জ্বলা পাওয়ার। তাতে আরও বিভইন্ন প্রসঙ্গের সঙ্গে এক জায়গায় বলা হয়েছে, 'ওঁর (প্রধানমন্ত্রী মোদীর) রোড শোকে নিশানা করে আমরা আরেকটা রাজীব গান্ধীর মতো কাণ্ড ঘটানোর কথা ভাবছি। এটা আত্মহত্যা করার মতো শোনাতে পারে, এবং শেষ অবধি আমরা সফল নাও হতে পারি। কিন্তু তাও আমাদের মনে হয়, পার্টির পলিটব্যুরো ও সেন্ট্রাল কমিটির আমাদের প্রস্তাব ভেবে দেখা উচিত।'
পাঁচজনকেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করে পুলিশ। এর জন্য পাওয়ার আদালতে আরও কয়েকটি চিঠি পেশ করেন। সেই চিঠিগুলির বয়ান তুলে আদালতে পাওয়ার দাবি করেন এলগার পরিষদ গঠন ও 'ভিমা-কোরেগাঁও'এর হিংসাত্মক ঘটনায় অভিযুক্তরা সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তবে অভিযুক্তদের আইনজীবী তৌসিফ শেখের দাবি এ চিঠিগুলি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাজানো হয়েছে। চিঠির বয়ানের সত্যতা এবং কারা সেগুলি লিখেছে, তা এখনও প্রমাণিত নয়। তাঁর যুক্তি, পুলিশ গত এপ্রিল মাসেই অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা গিয়ে ল্যাপটপ ও অন্যান্য কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস-সহ বহু নথি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল। চিঠিতে যদি এমন ভয়ঙ্কর তথ্যই থেকে থাকে, তাহলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে এত সময় লাগালো কেন পুলিশ?
তাঁর দাবি পুলিশ শুধু চিঠিগুলি সাজিয়েছে তাই নয়, এই 'নির্দোষ' ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে পুলিশ ভিমা-কোরেগাঁও ঘটনার আসল দোষীদের না ধরতে পারার ব্যর্থতাকে আড়াল করতে চাইছে। তবে দুপক্ষের ষুক্তি শুনে আদালত এবিষয়ে আরও তদন্তের স্বার্থে ধৃত পাঁচজনকেই ১৪ জুন তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।