নেহেরু, অযোধ্যা ও গুজরাত সাম্প্রদায়িক হিংসার মতো বহু বিষয় বাদ অসমের দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রম থেকে
বহু বিষয় বাদ অসমের দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রম থেকে
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে প্রায় ছ’মাসের ওপর বন্ধ ছিল স্কুল–কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। তাই পড়ুয়াদের ওপর থেকে বোঝা কমানোর জন্য অসম সরকার দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রম থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের পরীক্ষা বোর্ডের অন্তর্গত দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জওহরলাল নেহেরুর নীতি, অযোধ্যা বিতর্ক ও গুজরাতের হিংসাত্মক ঘটনা সহ বেশ কিছু অধ্যায়। এই অধ্যায়গুলি বাদ দিয়েছে অসম হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন কাউন্সিল (এএইচএসইসি)। তাদের মতে, কোভিড মহামারির কারণে পঠন পাঠন সেভাবে হয়নি তাই পড়ুয়াদের মাথার ওপর থেকে ৩০ শতাংশ বোঝা হ্রাস করানো হয়েছে। বিজ্ঞান, কলা বিভাগ ও কমার্সের অধ্যায়গুলি ছোট করে দেওয়া হয়েছে।
পড়ুয়াদের চাপ কমাতে এই সিদ্ধান্ত
দ্বাদশ শ্রেণীর যে অধ্যায়গুলি বাদ পড়েছে তার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে এএইচএসইসির ওয়েবসাইটে। এএইচএসইসির সচিব মনোরঞ্জন কাকাতি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে এই মহামারি পরিস্থিতিতে ও পড়াশোনায় বিশাল ফাঁক থেকে যাওয়ার কারণে পড়ুয়াদের ওপর থেকে ২০২০-২১ সালের পরীক্ষার চাপ কমানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে হওয়া দ্বাদশ শ্রেণীর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার কারণে পঠ্যক্রম থেকে এই অধ্যায়গুলি হ্রাস করা হয়েছে যাতে পড়ুয়ারা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।' তিনি এও জানিয়েছেন যে পাঠ্যক্রম থেকে যে সব বিষয়ের অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে তার আগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে সুপারিশ নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ বহু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়
রাষ্ট্রবিজ্ঞান পেপারে, প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর জাতি গঠনে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী ও তাঁর বিদেশ নীতি, নেহেরুর পর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারি, গরীবি হটাও নীতি এবং প্রথম তিনটে সাধারণ নির্বাচন বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাদ গিয়েছে, মন্ডল কমিশনের রিপোর্টের বাস্তবায়ন (ওবিসিদের জন্য চাকরি সংরক্ষণ), পাঞ্জাব সমস্যা এবং ১৯৮৪ সালে শিখ-বিরোধী হিংসাত্মক ঘটনা, যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকার, এনডিএ ও ইউপিএ সরকারের প্রথমদিকের শাসনকাল, অযোধ্যা বিতর্ক, গুজরাত সাম্প্রদায়িক হংসার ঘটনা ও পাঁচ বছরের পরিকল্পনা স্থগিত।
এডুকেশন থেকে বাদ বহু বিষয়
২০২১ সালের পরীক্ষার জন্য এডুকেশন পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ভারত ও তার ঠান্ডা লড়াই, অন্যান্য সাম্যবাদী দেশসমূহ, অর্থনীতি ও আদর্শে আমেরিকার কাছে আধিপত্য ও চ্যালেঞ্জ, মাও-পরবর্তী যুগে অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে চিনের উত্থান, দক্ষিণ এশিয়ায় সংঘাত ও শান্তির প্রচেষ্টা, নিরস্ত্রীকরণের রাজনীতি, বিশ্বায়নবিরোধী পরিনিতি ও বিশ-বিরোধীতা আন্দোলন। এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি ১৯৮৬ সালের প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং মহিলা ক্ষমতায়নের অধ্যায়গুলি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের নতুন শিক্ষানীতি
বিজেপি শাসিত কেন্দ্র তথআ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় এ বছরের ২৯ জুলাই নতুন শিক্ষানীতি ২০২০ অনুমোদন পেয়েছে। যেখানে উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একক নিয়ন্ত্রক, ভারতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় কোর্সে একাধিক প্রবেশ ও প্রস্থান ও ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রস্তাব ছিল। অ্যাকাডেমিক কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর বারাক উপত্যকা সহ অসমের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কলা বিভাগ, বিজ্ঞান ও কর্মাসের শিক্ষকদের অনরোধ করা হয় যে কোন বিষয়ের কোন অধ্যায় বাদ দিলে পড়ুয়াদের ওপর চাপ কমবে তা যেন তাঁরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে তাঁরা কোন কোন অধ্যায় বাদ দিচ্ছে তার চূড়ান্ত তালিকা করে এএইচএসইসি-এর দপ্তরে জমা দেন।
প্রতীকী ছবি
কৃষি বিল নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, ভারত বনধের আবহে নাম না করে বিরোধীদের আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী মোদীর