করোনা মোকাবিলায় পিএম কেয়ার্স ফান্ড! নতুন তহবিল গঠন নিয়ে উঠছে বহু প্রশ্ন
দেশের যে কোনও ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় এতদিন ছিল প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিল। কিন্তু ভারতের করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় গঠন করা হয়েছে পিএম কেয়ার্স ফান্ড। যা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছ
দেশের যে কোনও ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় এতদিন ছিল প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিল। কিন্তু ভারতের করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় গঠন করা হয়েছে পিএম কেয়ার্স ফান্ড। যা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সত্যিই কি এই পরিস্থিতিতে নতুন কোনও ফান্ড তৈরির প্রয়োজন ছিল। সত্যিই কি ট্রাস্ট মডেলের নতুন কোনও ফান্ড তৈরির প্রয়োজন ছিল, যেখানে আগে থেকেই ট্রাস্ট মডেলের পিএম এনআরএফ ফান্ড রয়েছে।
১৯৪৮ সাল থেকে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় বিপর্যয় তহবিল
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দেশে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিল। যার গঠন ট্রাস্ট মডেলে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিল দেশের মানুষের। ২০১৯-এর ডিসেম্বরের হিসেব অনুযায়ী, এই ফান্ডে খরট না হওয়া অবস্থায় রয়েছে প্রায় ৩৮০০ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে এই ফান্ড থেকে খরচ করা হয়েছে ২১২.৫ কোটি টাকা। সাধারণভাবে এই ফান্ডের টাকা খরচ করা হয় বন্যা, ঘূর্ণিঝড় কিংবা ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য। পাশাপাশি বড় দুর্ঘটনা কিংবা গোষ্ঠী সংঘর্ষের ক্ষেত্রেও এই ফান্ডের টাকা ব্যবহার করা হয়। এই ফান্ড সম্পূর্ণভাবে মানুষের সাহায্যের ওপরে নির্ভর করে। বাজেট থেকে কোনও টাকা এই ফান্ডে দেওয়া হয় না। আর এই ফান্ডে সাহায্য করলে তা আয়ক আইনের ৮০(জি) ধারায় ছাড় পাওয়া যায়।
নতুন পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন
ভারতে করোনা পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎই পিএম কেয়ার্স ফান্ড তৈরির কথা জানানো হয়। বলা হচ্ছে এই ফান্ডও ট্রাস্ট মডেলের। কিন্তু একটি ট্রাস্ট মডেলের ফান্ড থাকতে অপর একটি ফান্ড তৈরির প্রয়োজন হল কেন। প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। আবার অনেকেই বলছেন করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিলে টাকা জমা দেওয়া যাবে না। এই পরিস্থিতিতে কেই বা পিএম কেয়ার্স ফান্ড তৈরির উদ্যোগ নিল সেই প্রশ্নও উঠছে।
ইতিমধ্যেই মনোজ নামে এক অ্যাডভোকেট টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন, ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কি পিএম অফ ইন্ডিয়া, নাকি নরেন্দ্র মোদী। আর ন্য সদস্যরা কি নামের হিসেবে, নাকি অফিস হিসেবে। এই ট্রাস্টের রেজিস্টার্ড অফিসের ঠিকানাই বা কী।
ট্রাস্টে রাখা হয়নি বিরোধী কাউকে
সূত্রের খবর অনুযায়ী, পিএম কেয়ার্স ট্রাস্টে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার অপর ৩ সদস্য। কিন্তু এই ট্রাস্টে রাখা হয়নি দেশের কোনও বিরোধী নেতাকে কিংবা সিভিল সোসাইটির কোনো সদস্যকে।
পিএম কেয়ার্স ফান্ডের অনেক কিছুই জাতীয় বিপর্যয় তহবিলের মতোই
জরুরি প্রয়োজনে এই পিএম কেরার্স ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যার অনেক কিছুই ওই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিলের মতো। প্রাইম মিনিস্টার সিটিজেন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন এমারজেন্সি সিচুয়েশন ফান্ড নামে পাবলিক চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। যার চেয়ারম্যান হলেন প্রধানমন্ত্রী। আর বাকি তিন সদস্য হলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী। ২৮ মার্চ এমনটাই জানিয়েছে পিআইবি।
বেশিরভাগ শিল্পপতি গোষ্ঠী কিংবা ব্যক্তি এই ফান্ড তৈরির প্রথম দিন থেকেই সেখানেই টাকা জমা দিচ্ছেন।