‘মুশকিল আসান’ প্রণবে শ্রদ্ধাশীল মনমোহন, কৃতজ্ঞ চিত্তে জানালেন না বলা কথা
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্ররী কথা শুনে হাসি চাপতে পারেননি প্রণববাবুও। হাসছিলেন সোনিয়া, রাহুল, সীতারাম, অখিলেশ, সুধাকর রেড্ডিরাও। হেসে ফেললেন বক্তা মনমোহন সিংও।
সতীর্থ প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আজও তিনি সমান শ্রদ্ধাশীল। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কথায় প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কৃতজ্ঞতা ঝরে পড়ল আবারও। অকপটেই তিনি স্বীকার করে নিলেন, তাঁর থেকেও প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে উপযুক্ত ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রকাশ্যেই বললেন, 'প্রণববাবু আমার থেকেও দক্ষ ও অনেক বেশি যোগ্য।'
[আরও পড়ুন:কে সেরা, সোনিয়া-মনমোহন নিয়ে অকপট প্রণব, বাক্যবাণে বিঁধলেন কাকে]
তিনি প্রণববাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার বশে বলেই ফেললেন, 'কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। কারণ সিদ্ধান্তটা আমার ছিল না। আমি সিদ্ধান্ত নিলে বেছে নিতাম প্রণববাবুকেই। আমার নাম যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হল, তখন প্রণববাবু ভাবতেই পারেন, তিনি অনেক দক্ষ, অনেক বেশি যোগ্য।'
প্রণববাবুও তা শুনে হাসি চাপতে পারেননি। হাসছিলেন সোনিয়া, রাহুল, সীতারাম, অখিলেশ, সুধাকর রেড্ডিরাও। হেসে ফেললেন বক্তা মনমোহন সিংও। নিমেষেই বদলে গেল প্রণবাবুর বই প্রকাশের অনুষ্ঠানের ছবিটা। তারপর মনমোহন বলতে শুরু করলেন তাঁর ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কের রসায়নের কথা। তিনি বললেন, 'প্রণববাবু প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। তা কোনওদিন তাঁদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারেনি। আমি তাঁর প্রতি এজন্য চিরকৃতজ্ঞ।'
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'উনি যখন অর্থমন্ত্রকের জুনিয়র মন্ত্রী হয়ে আসেন, তখন আমি অর্থ দফতরের সচিব। তারপরে ঘটনাচক্রে আমার রাজনীতিতে আসা। প্রণববাবুর সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত সেই ১৯৭০ সাল থেকে। উনি মন্ত্রী, আমি সচিব। আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যখনই সমস্যা হয়েছে, তখনই ছুটে গিয়েছি প্রণববাবুর কাছে, উনি সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন।'
এই না বলা কথা, তিনি অনেকদিন ধরে জমিয়ে রেখেছিলেন। এদিন তা বলকে পেরে স্বভাবতই হালকা হলেন মনমোহন সিং। দুই গুণীর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার এক নমুনা উপস্থাপিত হল এই বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। একদিন আগেই প্রণববাবুর কণ্ঠে ঝরে পড়েছিল একরাশ শ্রদ্ধা। নিজের থেকে অনেক এগিয়ে রেখেছিলেন মনমোহন সিংকে। এদিন কৃতজ্ঞ চিত্তে সেই শ্রদ্ধা প্রত্যার্পণ করলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়কে।