সভাপতি হয়ে খাড়গে কি পারবেন কংগ্রেসে দলিত ভোট ফেরাতে, কর্নাটক নির্বাচনের আগে জল্পনা
মল্লিকার্জুন খাড়গে কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন। কংগ্রেস প্রধান হিসেবে খাড়গের দায়িত্ব নেওয়ার প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি পারবেন আসন্ন নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেসকে সাফল্যের সরণিতে ফিরিয়ে
মল্লিকার্জুন খাড়গে কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন। কংগ্রেস প্রধান হিসেবে খাড়গের দায়িত্ব নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি পারবেন আসন্ন নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেসকে সাফল্যের সরণিতে ফিরিয়ে আনতে। সামনেই হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাতের নির্বাচন। আর বছর ঘুরলেই তাঁর নিজের রাজ্য কর্নাটকে নির্বাচন। তিনি কি এই নির্বাচনে কংগ্রেসকে জয় উপহার দিয়ে ২০২৪-এর আগে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবেন বিজেপিকে?
দলিত ভোট বড় ফ্যাক্টর, তিনি নিজে দলিত নেতা
প্রায় আড়াই দশক পর কংগ্রেসের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব বর্তেছে এক দলিত নেতার উপর। সেই দলিত নেতা মল্লিকার্জুন খাড়কে কি পারবেন কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে দলিত ভোট ফিরিয়ে আনতে। এই দলিত ভোট সাফল্যের সরণিতে আনতে পারে কংগ্রেসকে। আসন্ন গুজরাত ও কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন দলিত ভোট বড় ফ্যাক্টর।
নিজের রাজ্যে দলকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে
তাই দলিত নেতা মল্লিকার্জুনকে সভাপতি করে কংগ্রেস একটা মস্ত চাল দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজতৈনিক মহল। কর্নাটকে ভোট, সেই কর্নটক পেয়েছে কংগ্রেসের সভাপতি। তারপর তিনি দলিত নেতা। এই দুই সুবিধা কাজে লাগিয়ে কংগ্রেস চাইবে কর্নাটকে ক্ষমতা দখল করতে। আর কর্নাটক যেহেতু কংগ্রেসের নয়া সভাপতির নিজের রাজ্য, ফলে তিনি চাইবেনই নিজের রাজ্যে দলকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে।
খাড়গেকে সভাপতি করে দলিতদের বিশেষ বার্তা কংগ্রেসের
মল্লিকার্জুন খাড়গে কংগ্রেসের দায়িত্ব পেয়েছেন এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন ২০২৪-এর নির্বাচনের পদধ্বনি শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন দোরগোড়ায়। মোদী-রাজ্য গুজরাত যেমন রয়েছে, রয়েছে নিজের রাজ্য কর্নাটক। তারপর তো বড় রাজ্যের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় রয়েছেই। এই অবস্থায় দলিত নেতাকে সর্বভারতীয় সভাপতি করে কংগ্রেস এক বিশেষ বার্তা দিয়েছে দলিতদের।
বছরের শুরুতেই কর্নাটকে ভোট, ফায়দা তুলতে পারবেন কি
এখন দেখার রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে এবং ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে দলিত ভোটে ভাগ বসাতে পারে কি না কংগ্রেস? কর্নাটকের দলিত নেতা খাড়গে চাইবেন তাঁর জাতির ভোটকে কংগ্রেসের দিকে ফেরাতে। সে জন্য তিনি কী পরিকল্পনা নেন, দলিত সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি বার্তা দেন, তা দেখার। সামনের বছরের শুরুতেই কর্নাটকে ভোট। এই ভোটে তিনি ফায়দা তুলতে পারেন কি না, তার উপর নির্ভর করবে অনেক কিছুই।
মল্লিকার্জুনের কাঁধে গুরুদায়িত্ব কংগ্রেসের হাল ফেরানোর
মল্লিকার্জুন কংগ্রেসের দায়িত্ব এলেন যখন, তখন কংগ্রেসের চরম দুর্দিন চলছে। কংগ্রেস লড়ছে অস্তিত্বরক্ষার লড়াই। মল্লিকার্জুনের কাঁধে গুরুদায়িত্ব কংগ্রেসের হাল ফেরানোর। গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির সুদিন ফেরাতে এবার কোন পন্থা অবলম্বন করে কংগ্রেস নেতৃত্ব, পার্টি প্রধান মল্লিকার্জুন কী কৌশল অবলম্বন করেন, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
কংগ্রেসকে কোন পথে পরিচালিত করেন মল্লিকার্জুন
২৫ বছর পর নেহরু-গান্ধী পরিবারের বাইরে কেউ কংগ্রেস সভাপতি হলেন। সীতারাম কেশরীর পর মল্লিকার্জুন খাড়গে। দলিত নেতা কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পথে হারালেন দক্ষিণেরই আর এক নেতা শশী থারুরকে। গান্ধী পরিবার সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে তাঁকেই ধরে নিয়েছিল বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁর হাতেই উঠল ব্যাটন। এখন তিনি কংগ্রেসকে কোন পথে পরিচালিত করে ফের প্রাসঙ্গিক করে তোলেন, তার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।
খাড়গের সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে যেখানে
মল্লিকার্জুনের কতটা গান্ধী পরিবারের প্রভাবমুক্ত থাকতে পারবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁর একটা মস্তবড় সুবিধাও থাকবে। তিনি কীভাবে দলকে পরিচালনা করেন, দলের নতুন কী কৌশল আনবেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব কতটা সক্রিয় হয়ে উঠবেন তাঁর নেতৃত্বে, তিনি কতটা দলকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মুক্ত রাখতে পারবেন তার উপরই নির্ভর করবে শতাব্দীপ্রাচীন দলটির সাফল্য।
প্রতিকূল অবস্থায় কংগ্রেসের দায়িত্ব
সম্প্রতি পাঞ্জাবে কংগ্রেস জোর ধাক্কা খেয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপের কাছে তাদের শোচনীয় পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে। ইত্যবসরে কোনও রাজ্যেই নির্বাচন জিততে পারেনি কংগ্রেস। উল্টে হারাতে হয়েছে পাঞ্জাব। গোয়ায় শাসক-বিরোধী হাওয়া থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস জিততে পারেনি। উত্তরাখণ্ডেও সুবিধাজনক জায়গায় থেকে হারতে হয়েছে কংগ্রেসকে। উত্তরপ্রদেশে তো কংগ্রেস মুছে গিয়েছে প্রায়। এই অবস্থায় মল্লিকার্জুনের সামনে জোড়া অগ্নিপরীক্ষা। সামনে হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাতের নির্বাচন। তারপরই নিজের রাজ্য কর্নাটক। আপাতত বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর হাত ধরে কংগ্রেস সাফল্য পায় কি না, সেদিকেই থাকল দৃষ্টি। তারপর বড় লক্ষ্য ২০২৪।
মল্লিকার্জুনের হাতে ব্যাটন! এবার কি সুদিন ফিরবে, ২০২৪-এর আগে সাফল্যের দিশারি কংগ্রেস