আন্দোলনার জের! তুতিকোরিনে স্টারলাইট কারখানার নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ দিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট
আগামী ২৩ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাদ্রাজ হাইকোর্ট তুতিকোরিনে স্টারলাইট-এর দ্বিতীয় কপার কারখানা নির্মাণের কাজ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। তার মধ্যে সংস্থাকে পরিবেশগত অনুমোদন আদায় করতে হবে।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট তুতিকোরিনে স্টারলাইট-এর দ্বিতীয় কপার কারখানা নির্মাণের কাজ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। এই বন্দর নগরীতে গতকাল এই কারখানা নির্মাণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিচালনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। তার জেরেই আগামী ২৩ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে আদালত জানিয়েছে। তার মধ্যে স্টারলাইট সংস্থাকে পরিবেশগত অনুমোদন আদায় করতে হবে।
এদিন আদালত আরও জানিয়েছে ২৩-এ সেপ্টেম্বর একটি পাবলিক হিয়ারিং হবে, সেখানে ওই পরিবেশগত অনুমোদন পেশ করতে পারলে তবেই ফের নির্মাণকাজ শুরু হবে। আদালতে এই স্থগিতাদেশ চেয়ে একটি পিটিশনদায়ের করা হয়। অভিযোগকারীদের দাবি, স্টারলাইটের প্রথম কপার বা তামার কারখানাটির ক্ষেত্রে ওই অনুমোদন আছে। সংস্থাটি তাকে সামনে রেখেই দালিয়াতি করে দ্বিতায় একটি স্থানে অপর কারখানাটি নির্মাণ করছে। ওই স্থানে কপার কারখানা গড়ার পরিবেশগত ছাড়পত্র তাদের হাতে নেই।
তবে স্টারলাইটের বর্তমান কারখানাটি নিয়েও বড় বিতর্ক রয়েছে। কেন্দ্র থেকে সেখানে কারখানা গড়ার ছাড়পত্র পেয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু তুতিকোরিনের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই কারখানার কারণে এলাকায় বড় আকারের দূষণ ছড়াচ্ছে। আশপাশের অন্তত ১৮টি গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে এ অঞ্চলে একসঙ্গে কয়েকশ' মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাদের প্রত্যেকেরই মধ্যেই শ্বাসকষ্ট, বমি-বমি ভাব এবং গলা সংক্রমণের মতো উপস্বর্গ দেখা গিয়েছিল। সাধারণত বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে এরকম লক্ষণ দেখা যায়। এই অসুস্থতার ঠিক আগ দিয়েই কারখানা থেকে গ্যাস লিক করার অভিযোগও উঠেছিল।
দূষণ নিয়ন্ত্রণের নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগে এই কারখানাটি বন্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল, শেষ পর্যন্ত ফের কারখানাটিকে চালু করার অনুমতি দেয়। এই একই বছরে আরেকটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সারা বছরের অতিরিক্ত দূষণের জন্য স্টারলাইট কারখানাকে ১০০ কোটি টাকার জরিমানাও করেছিল। যদিও স্টারলাইট বরাবরই দাবি করেছে তারা দূষণ নিয়ন্ত্রণের নিয়ম অনুসরণ করে।
এদিকে গতকালই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে, অন্তত ১১ জন স্টারলাইট বিরোধী আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। মুখ্যমন্ত্রী এডাপ্পাডি কে পলানিস্বামী ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী একে 'হত্যা' এবং 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস' বলে সমালোচনা করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় গভর্নর বনোয়ারিলাল পূরোহিত একটি শোক বার্তা প্রকাশ করেন।
১৯৯৭ সালে স্টারলাইট কপারের প্রথম কারখানাটি স্থাপিত হয়েছিল। কপার উৎপাদনের সময় বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে সীসা, আর্সেনিক এবং সালফার অক্সাইডের মত বিষাক্ত উপজাত উৎপন্ন হয়। এলাকার জল, মাটি এবং বায়ু দুষিত হয়।