মঙ্গলবারই মধ্যপ্রদেশের আস্থা ভোট? কমলনাথকে লেখা রাজ্যপালের চিঠি ঘিরে জোর জল্পনা!
সোমবার শুরু হয় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। আর শুরুর আগেই যেন শেষের প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল কংগ্রেস। মনে করা হচ্ছিল, আজ অধিবেশন শুরু হতেই আস্থা ভোট হবে বিধিনসভায়। জ্যোতিরাদিত্য দল ছাড়তেই ২২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছাড়েন। সেই পরিস্থিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর কথা কমলনাথের সরকারের। সেই বিষয়টি আজ নিশ্চিত হওয়ার কথা ছিল কাথায় কলমে। তবে তা হয়নি।
সরকার বাঁচাতে করোনার সাহায্য নিচ্ছেন কমলনাথ
বলা হচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে অধিবেশন মুলতুবি করা হয় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার। আর এর জেরেই আজ আস্থা ভোট হওয়ার কথা থাকলেও তা আপাতত হচ্ছে না। আর তাই স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারবেন কমলনাথ। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকারকে আপাতত বাঁচিয়ে দিল করোনা ভাইরাস।
আজই হওয়ার কথা ছিল আস্থা ভোট
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালাজি ট্যান্ডনের নির্দেশে আজই মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা ছিল মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের। তবে তাঁর হাতে তো শুধু মাত্র কংগ্রেসের ৯৪ জন বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে তিনি সরকার বাঁচাবেন। আস্থা ভোট নিয়ে দোনামনা দেখা যায় কংগ্রেসের অন্দরেও। রাজ্যপালের নির্দেশকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস বিধায়করা এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলেন কমলনাথকেই। এরপরই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে কমলনাথ জানান, অধ্যক্ষএর সিদ্ধান্তের উপর রাজ্যপাল কোনও ভাবে কথা বলতে পারেন না। সেটা তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে।
কমলনাথকে চিঠি রাজ্যপালের
তবে এবার কমলনাথকে এক পাল্টা চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল। যার জেরে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছে। আজ বিকালেই একটি চিঠি লিখে রাজ্যপাল কমলনাথকে বলেন, 'আগামীকাল (১৭ মার্চ) আস্থা ভওট করানো হোক। নয়ত লোকে ভাববে আপনার সরকারের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যা নেই।' চ্যালেঞ্জ মাখা এই চিঠিতেই এখন মধ্যপ্রদেশের পরবর্তী মোড় বোঝা মুশকিল হয়ে পড়ছে রাজনৈতিক মহলের কাছে।
সুপ্রিমকোর্টে বিজেপি
এদিকে আজ আস্থা ভোট হওয়ার কথা থাকলেও তাজ্জব কথা যে বিধানসভার কার্যপ্রণালীতে কিন্তু এই বিষয়টি 'লিস্টেড' বা তালিকাভুক্ত ছিল না। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কী কংগ্রেস আগের থেকেই আস্থা ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কৌশল ঠিক করে রেখেছিল? আর এই অভিযোগ এনেই সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। শিবরাজ সিং চৌহান সহ ১০ জন বিধআয়ক এই নিয়ে মামলা করেছেন সুপ্রিমকোর্টে। এখন দেখার কমলনাথ সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশের জন্য কতদিন অপেক্ষা করতে পারেন।
নজর বেঙ্গালুরুতে
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ে একটি ভিডিও বার্তায়। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যতই বলুক যে ইস্তফা দেওয়া বিধায়করা তাদের সঙ্গেই আছেন, সেই দাবি যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দিল একটি ভিডিও বার্তা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কংগ্রস ত্যাগী ২১ বিধায়কের সেই ভিডিও বার্তায় আরও ঘোলাটে হয়ে যায় মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন যে এখনও তাঁরা বেঙ্গালুরুতেই রয়েছেন। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হলে তবেই তাঁরা ভোপাল ফিরে যাবেন।
কংগ্রেসের অবস্থা কী রকম?
বর্তমান পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ২২৮ সদস্যের বিধানসভায় ৬ জন বিধায়কের ইস্তফা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। এর জেরে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২২২-এ। যার অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ১১২। তবে ২১ জন বিধায়ক ছাড়া সেই সংখ্যার ধআরের কাছেও পৌঁছাবে না কমলনাথের সরকার। আর যদি বাকি ১৬ জনের ইস্তফাও গ্রহণ হয়, তবে তো কংগ্রেসের আরও কোনও উপায় থাকবে না।