মধ্যপ্রদেশে কমলনাথের সরকার ফেলতে কত কোটি টাকার খেলা হয়েছে! কংগ্রেসের একাধিক দাবি এল প্রকাশ্যে
মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ সরকার ফেলতে কত কোটি টাকার খেলা হয়েছে! কংগ্রেসের একাধিক দাবি প্রকাশ্যে
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসে যে ভাঙন ছিল, তা মূলত দুটি শিবিরকে ঘিরে। যার একদিকে পোড় খাওয়া নেতা কমলনাথ, অন্যদিকে সিন্ধিয়া রাজবংশের সন্তান তথা যুব নেতা জ্যোতিরাদিত্য। দলে এমন ফাটল যখন স্পষ্ট, তখন লোহা গরম থাকতে থাকতেই হাতুড়ি মারার চেষ্টায় ছিল বিজেপি দল। আর সময়ের সদ্ব্যবহার করে সেই লক্ষ্য পূরণেই সমর্থ হয়েছে বিজেপি। এদিকে, উত্তরপূর্ব ভারত, কর্ণাটক, গোয়ার পর একই মডেলের পুনরাবৃত্তি করে বিজেপিমধ্যপ্রদেশ দখল করতে চাইছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। অভিযোগ উঠছে কোটি কোটি টাকার খেলার।
বিজেপির বিরুদ্ধে কোটি টাকার খেলার অভিযোগ
মধ্যপ্রদেশ সরকারের কংগ্রেস বিধায়কদের অপহরণের অভিযোগের আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে ঘুষ 'অফার' করার অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ভোপালের দুঁদে নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেন, তাঁদের দলের প্রতিটি বিধায়ককে প্রায় ২৩- ২৫ কোটি টাকার অফার করা হয়েছে। এমন বক্তব্য পেশের দুদিনের মধ্যেই মধ্যপ্রদেশে শাসক শিবিরের বিধায়কদের অপহরণের তত্ত্ব উঠে আসতে থাকে।
১০০ কোটি টাকার খেলা!
কংগ্রেস শিবিরের অভিযোগ তাঁদের দল ভেঙে বিধায়ক তুলে 'ঘোড়া কেনবেচা'র জন্য বিজেপি ১০০ কোটি টাকার খেলা শুরু করেছে। বিজেপির বহু নেতাই কংগ্রেসের একাধিক তাবড় বিধায়ককে পূর্ণশক্তি দিয়ে বিজেপি শিবিরে নিয়ে আসার জন্য ১০০ কোটি টাকার 'অফার' দিতে শুরু করেছে। যদিও বিজেপি বিষয়টি নিয়ে 'স্পিকটি নট ' পরিস্থিতিতে রয়েছে।
কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ আস্থা ভোট নিয়ে
এদিকে, ২৩১ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা দিতে এখনই আস্থা ভোটের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। তাদের দাবি বিজেপি কর্ণাটকে যা করেছে, তা করতে পারবে না মধ্যপ্রদেশে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি কালো টাকা ছড়িয়ে এমনটা করছে। খুব শিগিগিরই মধ্যপ্রদেশের কমলনাথ সরকার কিছু বিজেপি নেতার মুখোশ খুলে দেবে দুর্নীতির , এমন ভয় পেয়েই বিজেপি সরকার ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে বলে দাবি কংগেরেসের।
মধ্যপ্রদেশের ভোট-গণিত
মধ্যপ্রদেশে ভোট গণিত বলছে, ২৩১ টি আসনের ম্যাজিক ফিগার ১১৫ টি আসন। এই পরিমাণ আসন যার দখলে থাকবে, তিনিই মধ্যপ্রদেশের তখতে বসবেন। সেই মতো কংগ্রেস ১১৪ জন বিধায়ক নিয়ে মধ্যপ্রদেশের শাসকের আসনে রয়েছে। কংগ্রেসের রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। এদিকে, শোনা যাচ্ছে কংগ্রেসের ঘর ভেঙে ১০ জনকে নিজের দিকে করেছে বিজেপি। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশে বিধায়কের সংখ্যা ২২৮ জন। দুই বিধায়কের মৃত্যুতে মাঝে রয়েছে ২ টি শূন্যস্থান।
সরকারের পতন ও বিজেপির চেনা মডেল!
ভোটে বিরোধীপক্ষ জিতেছে অথচ তখত দখল করেছে বিজেপি বা বিজেপির জোট সরকার, এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। বিহারে জেডিইউ বিপক্ষে থাকার পর লালু প্রসাদের জেলযাত্রা হতেই বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ জোট গঠন করে সরকার গড়েছে। উত্তরপূর্বেও কার্যত একই মডেল। ২০১৭ সালের গোয়া বিধানসভাতেও বিজেপি পিছিয়ে ছিল। কংগ্রেস সেখানের সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হিসাবে নির্বাচিত হয়। কিন্তু ভোট পরবর্তী অঙ্কে মাত দেয় বিজেপি। কংগ্রেসের দুই তৃতীয়াংশ শিবির যোগ দেয় বিজেপিতে। আর তার জেরেই গোয়া দখল করে বিজেপি। চেনা ছকে কন্নড়ভূম কর্ণাটকেও বিজেপির ইয়েদুরাপ্পা শিবির দীর্ঘ নাটকীয়তার পর দখল করে মসনদ। এরপর মহারাষ্ট্রেরও একই মডেল বিজেপি লাগু করতে গিয়ে খানিকটা ব্যকফুটে চলে যায়। ফলে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোট জয়ী হলেও, বিজেপিকে ছেড়ে সরকার গড়ে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি। যদিও সেই জোট থেকে শিবিরে বিধায়ক টানার চেষ্টা বিজেপি করেও ছিল। তবে শেষে তালাভের লাভ হয়নি।
বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার আদর্শগত জোট! মুসলিম সংরক্ষণ প্রশ্নে কংগ্রেস-এনসিপিকে খোঁচা