বিজেপিকে তোপ দাগতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতার মুখে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য, বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে
বিজেপিকে তোপ দাগতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতার মুখে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য, বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে
বিরোধী দলের সমালোচনা করতে গিয়ে নিজেই বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জিতু পাটওয়ারি। বিজেপি সরকারের কার্যক্রম নিয়ে বিরুদ্ধতা করতে গিয়ে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়েন জিতু। ইতিমধ্যেই তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে।
"পুত্রের বদলে মিলল ৫ কন্যা সন্তান", বিতর্কিত মন্তব্য জিতুর
বুধবার কেন্দ্র সরকারের ৫ টি ব্যর্থতাকে কংগ্রেস নেতা জিতু পাটওয়ারী কন্যা সন্তান প্রসবের সঙ্গে তুলনা করে একটি টুইট বার্তায় বলেন," কেন্দ্রের কাছে একটি পুত্র সন্তানের প্রত্যাশা করেছিল জনসাধারণ, বদলে মিলেছে ৫ টি কন্যাসন্তান।" নোটবন্দি, জিএসটি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং আর্থিক মন্দাকে এই পাঁচটি কন্যাসন্তান বলে কটাক্ষ করেন জিতু। তার কথায় হাজারো অপেক্ষা শেষে শুধুমাত্র পুত্রসন্তান "বিকাশের" জন্ম হল না। বিজেপির অভিযোগ এই বক্তব্যের মাধ্যমে জিতু নারীদের 'অবাঞ্চিত' হিসেবেই অভিহিত করছেন। তার এই নারীবিদ্বেষী মনোভাব সামনে আসতেই তীব্র সমালোনার মুখেও পড়েন তিনি।
টুইট ডিলিট করে দুঃখ প্রকাশ জিতুর
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের মতে কংগ্রেস নেতা স্পষ্টতই তাঁর বক্তব্যে নারীদের ব্যর্থতা এবং নেতিবাচক প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন। তার মন্তব্যের জেরে পরবর্তীতে তিনি নেটিজেনদের তীব্র আক্রমনের শিকারও হন । এরপরেই, বুধবার রাতে জিতু টুইটটি ডিলিট করে, দুঃখ প্রকাশ করেন। তীব্র সমালোচনার উত্তরে জিতু সাফাই গেয়ে জানান ,"কন্যারা আমার কাছে দেবীর মত, উন্নয়নের প্রত্যাশা নিয়ে আমি কিছু প্রশ্ন করেছি বিজেপি যা ভুলভাবে ব্যবহার করছে, আমি এখনও বলছি গোটা দেশ 'বিকাশের' অপেক্ষা করছে"।
সমালোচনায় সরব বিজেপি নেতামন্ত্রীরা
কংগ্রেস নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের বিরোধিতা করে সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা।বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র এই প্রসঙ্গে জাতীয় মহিলা কমিশনের সভাপতি রেখা শর্মাকে উল্লেখ করে একটি টুইট বার্তায় লেখেন, "দয়া করে একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির মেয়েদের সম্পর্কে এইরূপ দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করুন"। উত্তরে রেখা শর্মা জানান, "লজ্জাজনক!এরাই নিজেদের নেতা হিসেবে দাবী করে। তিনি তাদের অনুরাগীদের কি ব্যাখ্যা দেবেন সেটাই দেখার।" অন্যদিকে জিতুর ওই মন্তব্যের চরম নিন্দা করেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। জিতুর এই মন্তব্য নিয়ে তিনি কী মনে করেন, তা দলের নেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে জানতে চান শিবরাজ।
ভুল শুধরে নিজের বক্তব্যে অনড় জিতু
এত সমালোচনার পরেও নিজের বক্তব্যের সারমর্ম থেকে সরেননি জিতু। জিতুর টুইটের মূল লক্ষ্য ছিল ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' স্লোগানের ব্যর্থতাকে তুলে ধরা। মন্তব্যের ত্রুটি বুঝে ক্ষমা চাওয়ার পর নিজের বক্তব্যে অনড় থেকেছেন কংগ্রেস নেতা। তিনি জানিয়েছেন, "আমার বক্তব্যে কেউ আঘাত পেলে আমি দুঃখিত। মোদীজির প্রবর্তিত জিএসটি, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও মন্দা দেশের অর্থনীতিকে আরও পেছন দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জনগণ কেবলমাত্র উন্নয়নের আশায় এসব সহ্য করেছে।"
যৌথ কর্মসূচি শুরুর আগে 'ধাক্কা'! কংগ্রেসের প্রস্তাব ফেরাল বামেরা