মধ্যপ্রদেশে উপনির্বাচনের আগেই ঘায়েল বিজেপি সেনাপতি, করোনার ছোবল শিবরাজের উপর
করোনা পজিটিভ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। এই খবর নিজেই টুইট করে সবাইকে জানান শিবরাজ। তিনি সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে গেছেন বলেও জানান। লকডাউন জারিতে দেরি করিয়েই একপ্রকার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন শিবরাজ। আর চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর খুব একটা দিন পার না হতেই এল এই বাজপড়া সংবাদ।
করোনা আবহেই চূড়ান্ত নাটক হয় মধ্যপ্রদেশে
দেশের করোনা নিয়ে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই চূড়ান্ত নাটক দেখেছে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক আঙিনা। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই সময় করোনা সংক্রমণের কথা না ভেবে শুধু ক্ষমতা খলের লোভেই লকডাউন পিছইয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার কী তাহলে সেই কর্মযোগের ফেরেই করোনা আক্রান্ত শিবরাজ, প্রশ্ন তুলতেই পারেন বিরোধীরা।
মধ্যপ্রদেশের 'করোনা' রাজনীতি
এর আগে করোনা ভাইরাসের কারণ দেখিয়ে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন ১০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কংগ্রেস। আর কমলনাথ সরকারের এই সিদ্ধান্তেরই বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে গিয়ে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা পুনর্দখলের রাস্তা মসৃণ করে বিজেপি। এরপর করোনা ভাইরাসের জেরে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হলে সরকার গঠনের বিষয়টি কিছুটা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল বিজেপি। করোনা বিলম্ব দূরে সরিয়ে পরে চতুর্থবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন শিবরাজ সিং চৌহান।
করোনা লকডাউনের আগেই মসনদ দখল করে বিজেপি
দেশজুড়ে করোনা লকডাউন জারি করার আগেই আমূল পরিবর্তন হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে। কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সৈনিক ও সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া হাত শিবির ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন পদ্ম শিবিরে। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত ২২ জন বিধায়ক। এর জেরে মধ্যপ্রদেশে কমলনাথকে সরিয়ে মসনদে বসেছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান।
অঙ্কের খেলায় হেরে যান কমলনাথ
২৩০ সদস্য বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ২০৬। যার অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ছিল ১০৪। তবে কংগ্রেসের থেকে ২২ জন বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার পর তাদের কাছে ছিল মাত্র ৯২ জন বিধায়কের সমর্থন। হার নিশ্চিত জেনে আগেই পদত্যাগ করেছিলেন কমলনাথ।
উপনির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা বিজেপির
এদিকে মধ্যপ্রদেশের ২৪টি আসনের উপনির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই শিবরাজের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় কোন্দল। মূলত সমস্যাটি হল, বিজেপিকে সমর্থন করে কংগ্রেস ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া বিধায়কদের মন্ত্রিত্ব দেওয়া। এই অবস্থায় মন্ত্রিসভা সমপ্রসারণ করেছিলেন শিবরাজ। এবার করোনা আবহেই উপনির্বাচনের জন্য যখন বিজেপি তৈরি হবে, তখনই সেনাপতি ঘায়েল হলেন করোনা মারণাস্ত্রে।