'এক হাত' দূরত্বে দাঁড়িয়ে সিন্ধিয়া-পাইলট, বন্ধুত্ব ভুলে আনুগত্য প্রমাণের লড়াই মধ্যপ্রদেশে
রাজনীতি বড় বালাই। কয়েক মাস আগেই প্রায় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুকরণে রাজস্থানের গদি উল্টে দেওয়ার পথে হেঁটেছিলেন সচিন পাইলট। এহেন পাইলটই এবার মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের হয়ে প্রচারে নেমেছেন। তাও আবার পুরোনো বন্ধু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিপক্ষে। মধ্যপ্রদেশের এই উপ নির্বাচন যেন শুধু গদি বাঁচানোর লড়াই নয়। দুই তরুণ অথচ অভিজ্ঞ নেতার কাছে এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আনুগত্য প্রমাণের লড়াই।

২৮টি আসনে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি
কংগ্রেসের তরফ থেকে মধ্যপ্রদেশের ২৮টি আসনে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে৷ এই ২৮টি আসনের মধ্যে ৬টি আসন আগেই খালি ছিল৷ বাকি ২২টি আসনে সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ বিধায়কেরা দলত্যাগ করেছিলেন৷ এই ২৮টি আসনে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার লক্ষ্যে দল এমন কয়েকজনকে খুঁজছে যাঁরা সিন্ধিয়া বিরোধী। তবে এরই মধ্যে সিন্ধিয়ার বন্ধু হিসাবে পরিচিত সচিনকে ময়দানে নামিয়ে নয়া চমক দিতে চাইছে কংগ্রেস।

সিন্ধিয়া গড়ে কংগ্রেসের থাবা?
আসন্ন উপনির্বাচনে ১৬টি আসন গোয়ালিয়র-চম্বল এলাকায়। এই এলাকাকে রীতিমতো সিন্ধিয়া গড় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ক্ষমতায় থাকতে বিজেপির প্রয়োজন মাত্র ৮টি আসন। এদিকে কংগ্রেস ফুল মার্কস পেয়ে যদি নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে পারে তাহলে কমল নাথ ফের গদিতে বসার স্বপ্ন দেখতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের হয়ে ময়দানে নেমেছেন সচিন পাইলট।

সিন্ধিয়া-পাইলট বন্ধুত্ব
তবে সিন্ধিয়ার সঙ্গে নিজের বন্ধুত্বে চিড় ধরাতে যে সচিন রাজি নন, তা একপ্রকার বুঝিয়ে দেন চম্বলের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের প্রথম জনসভায়। পুরোনো বন্ধুকে আক্রমণ করা পথে না হেঁটে সচিন বলেন, 'জনগণ জানে কেন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি আমার দলের হয়ে প্রচারে এসেছি। আমার পুরোনো সহকর্মী তাঁর দলের হয়ে প্রচার করছে। এরপর মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'

সিন্ধিয়ার বিরুদ্ধে তুরুপের তাস পাইলট
এদিকে সচিন পাইলটকে মধ্যপ্রদেশের ময়দানে নামানোর পিছনে কংগ্রেসের আরও একটি চাল ছিল। হাত শিবির বোঝাতে চাইছে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া নিজের সমস্যার কথা হাইকমান্ডকে জানালে, তাঁকেও সচিনের মতো ফিরিয়ে আনা হল। তবে এই বিষয়ে সচিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ফের সিন্ধিয়াকে আক্রমণ করার পথ এড়িয়ে বলেন, 'আমাদের দলে সব কিছুর নিয়ম আছে। কংগ্রেস সভাপতি আণার কথা শুনেছেন, তাই আমি খুশি।'

কংগ্রেস বনাম কংগ্রেসের লড়াই?
এদিকে এই উপনির্বাচনের লড়াই কি কংগ্রেস বনাম কংগ্রেসেরহয়ে দাঁড়িয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে সিন্ধিয়া বলেন, 'এই উপনির্বাচনের লড়াই প্রতিটি বিজেপি কর্মীর লড়াই। দল সঙ্গবদ্ধ ভাবে লড়ছে। সব নেতা-কর্মী ময়দানে ঝাঁপিয়েছেন। আমি যখন কংগ্রেসে ছিলাম, তখন অনেক গোষ্ঠী কোন্দল দেখেছি। এখানে তা নেই।'

পালাবদল
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছিল৷ সেইসময় কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া৷ কিন্তু তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ও কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংয়ের জুড়ি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে তাঁকে দলে সঠিক জায়গা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া৷ তখন থেকেই দলের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়৷ এরপরই চলতি বছরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেন৷ তারপরেই সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ আরও অনেকেই দল ত্যাগ করেন৷ যার জেরে সংখ্যাগরিষ্টতা হারিয়ে গদিচ্যুত হন কমল নাথ।

তেজস্বীর 'ভোট ব্যাঙ্ক সমীকরণ'-এর তেজে ম্লান নীতীশ, বিহারে পালাবদল সময়ের অপেক্ষা?