করোনা না কি হারের ভয়? স্থগিত মধ্যপ্রদেশের আস্থা ভোট, মুলতুবি অধিবেশন!
করোনা আতঙ্কের ছায়া এবার মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায়। করোনা ভাইরাসের কারণ দেখিয়ে এদিন মধ্যপ্রদেশের অধিবেশন ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুলতুবি ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গত, আজই বিধানসভায় আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই ভোটের আগেই সভা মুলতুবি ঘোষণা করা হয়।
কমলনাথের শক্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল আজ
সোমবার মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় কমলনাথের শক্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। গত কয়েকদিন ধরেই এই নিয়ে জোর তৎপরতা দেখা গিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি শিবিরে। আজকের এই আস্থা ভোট টিভিতে সরাসরি সম্পরচারিত হওয়ার কথা ছিল। মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালাজি ট্যান্ডনের নির্দেশেই আজ এই আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল বিধানসভায়। তবে তাজ্জব কথা যে বিধানসভার কার্যপ্রণালীতে কিন্তু এই বিষয়টি 'লিস্টেড' বা তালিকাভুক্ত ছিল না। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণ দেখিয়ে সভা মুলতুবি ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ। মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক মোড় এখন কোন দিকে ঘোরে, তার দিকেই নজর সবার।
আস্থা ভোটের জন্য তৈরি ছিল বিজেপি
আজকের এই ফ্লোর টেস্টের কথা মাথায় রেখে আগেই বিজেপির দলীয় বিধায়কের প্রতি হুইপ জারি হয়েছিল। সবাইকে আজ বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের হাইকমান্ডের তরফে। এর আগে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়ে সোমবার আস্থা ভোটের আবেদন জানিয়েছিল বিজেপি। এরপর রাতেই আস্থা ভোটের দিন স্থির করে সেই মত নির্দেশ দেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে।
ভোপাল থেকে বিধায়ক ফিরিয়ে আনে কংগ্রেসও
এদিকে আস্থা ভোটের জন্য তৈরি হচ্ছিল কংগ্রেসও। জয়পুর থেকে তাদের বিধায়কদের ভোপাল ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভোপালেও তাদের এক পাঁচ তারা হোটেলে রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ইস্তফা দেওয়া ৬ বিধায়কের আবেদন গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। যার জেরে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভার সমীকরণ কিন্তু পাল্টে গিয়েছে পুরোপুরি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস না বিজেপি, কে জয়ী হয়, সেই দিকে নজর সবার।
বেঙ্গালুরুতে থাকা বিক্ষুব্ধ বিধাক ফ্যাক্টরে কাবু কংগ্রেস
তবে কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ে একটি ভিডিও বার্তায়। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যতই বলুক যে ইস্তফা দেওয়া বিধায়করা তাদের সঙ্গেই আছেন, সেই দাবি যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দিল একটি ভিডিও বার্তা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কংগ্রস ত্যাগী ২১ বিধায়কের সেই ভিডিও বার্তায় আরও ঘোলাটে হয়ে যায় মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন যে এখনও তাঁরা বেঙ্গালুরুতেই রয়েছেন। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হলে তবেই তাঁরা ভোপাল ফিরে যাবেন।
সময় কেনার কৌশল এই 'করোনা বিলম্ব'?
এরপরই কংগ্রেসের হার প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে করোনার কারণ দেখিয়ে এইভাবে সভা মুলতুবির বিষয়টি অনেকেই হার ফিচিয়ে দেওয়া বা বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ঘরে ফেরানোর জন্য সময় কিনে নেওয়ার হিসাবে দেখছেন। প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজ্যপালের কাছে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের বোঝানোর জন্য সময় চেয়েছিলেন কমলনাথ।
কংগ্রেসের জন্য কঠিন পরিস্থিতি
এদিকে এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ২২৮ সদস্যের বিধানসভায় ৬ জন বিধায়কের ইস্তফা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। এর জেরে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২২২-এ। যার অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ১১২। তবে ২১ জন বিধায়ক ছাড়া সেই সংখ্যার ধআরের কাছেও পৌঁছাবে না কমলনাথের সরকার।
মধ্যপ্রদেশের মসনদ দখলের খেলা জমে উঠেছে
এর আগে কংগ্রেসের দাবি করেছিল, পদত্যাগী ২২ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যেতে চান না। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আমরা মহারাজের সঙ্গে এসেছি, কিন্তু আমরা বিজেপিতে যেতে চাই না। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ অঙ্ক বদলাচ্ছে। কংগ্রেস জানায়, এই ১২ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। আর এই বৈঠকের পরই পাল্টা চাপে পড়ে বিজেপি। এদিকে বেঙ্গালুরুতে থাকা বিধায়কদের দাবি তাঁরা এখনও সেখানেই আছেন। যা নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। এখন দেখার কোন দল কোন সমীকরণের সাহায্যে মসনদ দখল করে।