ফুসফুসের ক্ষতি ও ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদেরও, চিন্তায় চিকিৎসক মহল
ফুসফুসের ক্ষতি ও ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদেরও, চিন্তায় চিকিৎসক মহল
গত পাঁচ মাস ধরে ভারতে করোনা ভাইরাস মহামারি মৃত্যু মিছিল লাগিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবারই করোনা সংক্রমণ প্রায় ১০ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলেছে। এরই মধ্যে চিকিৎসকরা কোভিড–১৯–এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন নতুন অবস্থার কথা জানাচ্ছেন।
এই অবস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে ফুসফুসের ক্ষতি, যা ফুসফস ফাইব্রোসিস নামে পরিচিত এবং পালমোনারি ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধা, যা পালমোনারি থ্রম্বো এম্বোলিজম বা পিটিই নামে পরিচিত, যা করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের মধ্যে দেখা যায়। বিশ্বের পালমোনোলজিস্টরা এই অবস্থা নিয়ে বেশ কিছু সপ্তাহ ধরে উদ্বিগ্ন রয়েছেন, যে ব্যক্তি কোভিড–১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি ফের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আবার হাসপাতালে আসছেন।
ফুসফুসের ফাইব্রোসিস
পালমোনোলজিস্টরা জানিয়েছেন যে করোনায় রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও স্থায়ীভাবে তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। করোনা সংক্রমণের ফলে ফুসফুসে যে প্রভাব পড়ে তা জীবনের ওপর দীর্ঘ মেয়াদি দাগ ছেড়ে যায়। ফুসফুসের ফাইব্রোসিসের জন্য করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠার পরও রোগীকে বাড়িতে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে, রোগীর হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে, যার ফলে ‘কর পালমনল' বা হৃৎপিণ্ডের ডান ভেন্ট্রিকলের ব্যর্থতা দেখা দেয়, যা দীর্ঘস্থায়ী গুরুতর ফুসফুসের ব্যাধিগুলির একটি গুরুতর জটিলতা।
পালমোনারি ফাইব্রোসিস আসলে কী? পালমোনারি ফাইব্রোসিস একধরণের রোগ যেখানে ফুসফুসের নরম অংশগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
এতে ফুসফুসের কলাগুলো (টিস্যু) মোটা ও শক্ত হয়ে যায়, ফলে ফুসফুসে বাতাসের থলিগুলো ঠিকমত কাজ করতে পারে না।
কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে এর ফলে নিঃশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে এবং ক্লান্তিবোধ দেখা দেয়। শুধু তাই নয় ভবিষ্যতে অন্য নানা ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই রোগ সারে না। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তা আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে অর্থাৎ দিনে দিনে এই রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
কোভিড-১৯-এর ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, তা নিয়ে গবেষণার কাজ এখনও খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।
পালমোনারি থ্রম্বো এম্বোলিজম
পালমোনারি থ্রম্বো এম্বোলিজম বা পিটিই হল আর এক ফুসফুসের সমস্যা যা কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার পরই এর প্রভাব দেখা যায়। পিটিই ফুসফুসীয় ধমনীতে বাধা বা জমাট বাধাকে বোঝায়, এটি ফুসফুসের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে চিকিৎসা চলাকালীন অস্থিরতা এবং সীমাবদ্ধ ক্রিয়াকলাপ এবং রোগ প্রক্রিয়ায় নিজেই এর প্রসার বেড়েছে। এইমসের পরিচালক ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে ‘শুরুর দিকে চিকিৎসকরা মনে করেছিলেন ভাইরাসটি কেবল শ্বাসকষ্টের সংক্রমণই ঘটায়। তবে এখন রক্ত জমাট বাঁধার রোগীও দেখা দিচ্ছে; ভাইরাস অক্সিজেন পরিবহনের লক্ষ্যবস্তু করে অন্য অঙ্গগুলির সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।' তিনি আরও জানান যে কোভিড -১৯ রক্তনালীগুলির অভ্যন্তরীণ আস্তরণের প্রদাহের মতো অনেক সিস্টেমিক প্রভাব সৃষ্টি করছে যার ফলে তাদের অঞ্চল সংকুচিত হয়ে যায়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
এই অবস্থার যত্ন নেওয়ার পদ্ধতিগুলির মধ্যে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্টস এবং অ্যান্টি-ফাইব্রোটিক ওষুধের পাশাপাশি বাড়িতে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজনও রয়েছে। অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্টগুলি সাধারণত রক্ত জমাট বাঁধার গঠন বা বৃদ্ধি রোধে সহায়তা করে, যেখানে অ্যান্টি-ফাইব্রোটিকগুলি তীব্র শ্বাসযন্ত্রের অবক্ষয়ের ঝুঁকি হ্রাস করে।
সংকট বাড়ছে কংগ্রেসে, রাজস্থানে টলমল অবস্থার মধ্যেই মধ্যপ্রদেশে পদত্যাগ কংগ্রেস বিধায়কের