ভোটের আগে না জানিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে! দলত্যাগ বিরোধী আইনে চিঠি শিশির-সুনীলকে
বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশির অধিকারী এবং সুনীল মন্ডল। এবার দলত্যাগ বিরোধী আইনে এই দুই সাংসদকে চিঠি দিল লোকসভার সচিবালয়।
বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশির অধিকারী এবং সুনীল মন্ডল। এবার দলত্যাগ বিরোধী আইনে এই দুই সাংসদকে চিঠি দিল লোকসভার সচিবালয়। এই বিষয়টিকে কার্যত নৈতিক জয় হিসাবেই দেখছে শাসকদল তৃণমূল। তবে একদম মুকুল এফেক্ট উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, বিধানসভায় বিজেপির টিকিটে জিতে দলবদল করেছেন মুকুল রায়। আর এই দলবদলের পর থেকেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দেওয়ার দাবি তুলতে থাকে বিজেপি। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে চুর চড়িয়েছেন।
দলত্যাগ বিরোধী আইনে কেন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। কিন্তু এক্ষেত্রে বারবার তাঁর বাবাকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে শুভেন্দুকে। কেন শিশির অধিকারীর ক্ষেত্রে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবে না তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন শাসকদল তৃণমূলের। এই অবস্থায় অস্বস্তি ঢাকতেই কি এই পদক্ষেপ? উঠছে প্রশ্ন।
চিঠি দুই সাংসদকে
জানা গিয়েছে, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। দলত্যাগ বিরোধী আইনে এই দুই সাংসদকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন না জানিয়ে দলবদল? এই বিষয়েই মূলত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। লোকসভার সচিবালয়ের তরফে দেওয়া চিঠিতে চূড়ান্ত ১৫দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে দুই সাংসদকে। এর মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। না হলে আইনের ব্যবস্থার পথেও সচিবালয় হাঁটতে পারে বলে জানা গিয়েছে। দুই সাংসদের পাশাপাশি চিঠি পাঠানো হয়েছে কে রঘু রাম কৃষ্ণম রাজু নামে এক সাংসদকেও। অন্ধ্রপ্রদেশের সাগসদ তিনি।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়েছিলেন
দুই সাংসদের সদস্যপদ খারিজের দাবি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে একাধিক চিঠি দিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি শিশির অধিকারী এবং সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের কথা বলেছিলেন। কেন দুই সাংসদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী কার্যকর হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তৃণমূলের। একই সঙ্গে তাঁদের সাংসদ পদ খারিজের আবেদনও জানানো হয়। যদিও ভোট পরবর্তী সময়ে শিশির অধিকারী নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেও সুনীল মণ্ডলের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কেননা ফরওয়ার্ড ব্লকে থাকা সুনীল মণ্ডল একটা সময়ে মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। আবার একইপথে তিনি ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন।
তৃণমূলের অভিযোগ
তৃণমূলের তরফে অভিযোগে বলা হয়েছে, সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দিয়ে তাদের হয়ে প্রচারেও সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু শিশির অধিকারীর ক্ষেত্রে তা হয়নি। তৃণমূলের অভিযোগ, শিশির অধিকারী বিজেপির মঞ্চে ছিলেন। তাই তাই সাংসদের সদস্যপদ খারিজ করা হোক। তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, একদলের সাংসদ হয়ে অন্যদলের মঞ্চে থাকাকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
শিশির অধিকারীর দাবি
শিশির অধিকারী এর আগে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছিলেন, কাঁথিতে অমিত শাহের মঞ্চে উঠেছিলেন। কিন্তু বিজেপির পতাকা হাতে নেননি কিংবা আর কোনও প্রচারেও সামিল হননি। শুধু তাই নয়, এরপরেও সাফ শিশিরবাবু জানিয়েছিলেন যে, সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। তিনি কোনও অন্যায় কাজও করেননি। তাই তিনি ইস্তফা দেবেন না।