লকডাউনের জেরে কাজ হারাতে পারেন ৭০ লক্ষ মানুষ, সর্বাধিক ক্ষতি কোন সেক্টরে
লকডাউনের জেরে কাজ হারাতে পারেন ৭০ লক্ষ মানুষ, সর্বাধিক ক্ষতি রেস্তোরাঁ গুলিতে
বর্ধিত ৪০ দিনের লকডাউনের জেরে ভারত জুড়ে রেস্টুরেন্টগুলিতে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ কাজ হারাতে চলেছেন। দরকারি সামগ্রী ও কাঁচামালের জোগান নেই, শ্রমিক সংখ্যা কমছে, বরাত কমছে, খদ্দেররা বাড়িবন্দি, ফলত প্রতিদিন হুহু করে নামছে লভ্যাংশ।
মহানগর গুলিতে কবে খুলতে পারে রেস্টুরেন্ট ?
করোনায় মৃতদের প্রায় ৬৫% ভারতের ৬টি মহানগরী মুম্বাই, পুনে, দিল্লি, ইন্দোর, আহমেদাবাদ ও হায়দ্রাবাদের। বড় শহরগুলিতে প্রায় ৫ লক্ষ রেস্টুরেন্ট আছে, যেগুলি এইমুহূর্তে খোলার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ফলে রাঁধুনি, ঝাড়ুদার থেকে অন্যান্য কর্মচারীরা চূড়ান্ত বিপাকে পড়েছেন। এদিকে রেস্টুরেন্টগুলিতে গড় মাইনে ১৫ থেকে ২৫০০০-এর মধ্যে, যা অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট মার্চ মাস পর্যন্ত দিয়ে রেখেছে। লকডাউনে লাভের পরিমাণ ০-এ গিয়ে ঠেকায় এপ্রিলে কিভাবে কাটবে কর্মচারীদের, তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই।
রেস্টুরেন্টগুলি বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক কাঠামোয় ধাক্কা
গত কয়েক দশকে' রেস্টুরেন্ট চেইন' ভারতের ব্যবসার প্রথম সারিতে এসেছে। পর্যটন শিল্প এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় চূড়ান্ত ক্ষতির সম্মুখীন প্রশাসন। জাতীয় দুগ্ধ উৎপাদন সংস্থার মতে ভারতে উৎপন্ন মোট দুগ্ধের ১২% ও এফআইসিসিআইয়ের মতে মোট শাকসবজির ১% রেস্টুরেন্টগুলি ব্যবহার করে, ফলত চিন্তায় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা।
কর আদায় কমেছে, অর্থভাণ্ডারে টানের সম্ভাবনা
রেস্টুরেন্টগুলি ভাড়ার ক্ষেত্রে প্রায় ১৮% জিএসটি দেয়। ফলে কর আদায় কমেছে। অন্যদিকে রেস্টুরেন্টগুলি যে সংস্থাগুলির মাধ্যমে খাবার বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, সুযোগ বুঝে তারাও কমিশন বর্ধিত করায় লাভ আরও কমছে বলে জানান দে গাস্টিবাস হসপিটালিটি প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও অনুরাগ কাটরিয়ার। তাঁর মতে রেস্টুরেন্টগুলি পুনরায় চালু হলেও আগের মত রমরমিয়ে ব্যবসা শুরু হতে লাগবে ঢের সময়।
'দু'মাস অনেক বড় সময়', জানালেন নিকেশ লাম্বা
অনুরাগ কাটরিয়ারের মত অন্যান্য বড় বড় রেস্টুরেন্ট চেইনের মালিক নিকেশ লাম্বা, জোড়াওয়ার কালরা, পঙ্কজ কাপুরদের মতে এই দু'মাস অনেক বড় সময়। এই সময়ের লভ্যাংশ ০%-এ ঠেকায় কর্মী ছাঁটাই থেকে বড়সড় আর্থিক বিপর্যয়, সবই ঘটা সম্ভব। রেস্টুরেন্টগুলির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানান হয়েছে, যাতে কর্মীদের এপ্রিলের মাইনের ৫০% সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। লকডাউনের জেরে মদ্যশিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত, তাই সরকারের কাছে মদের লাইসেন্সে ৫০% ছাড়ের আর্জি জানান হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতীয় সংস্থার বিদেশে অবস্থিত রেস্টুরেন্ট চেইনগুলিও বন্ধ। ফলত চরম আর্থিক দুর্গতির মুখে রেস্টুরেন্ট মালিকেরা। আগামী দিনে তাই রেস্টুরেন্ট খুললেও ডাল-ভাত হোক বা চাউমিন, দাম কতটা লাফাবে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় মালিক-কর্মচারী থেকে ভোজনরসিক।