(ছবি) দেখে নিন ইউপিএ সরকারের আমলে হওয়া সেরা ৯ দুর্নীতি
নয়াদিল্লি, ২৭ মে : নীরবতা ভেঙে ফের মুখ খুললেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
"২জি টেলিকম লাইসেন্স বন্টনের ব্যাপারে সহযোগিতা না করলে বিপদে পড়তে হবে বলে মনমোহন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।" নিজের লেখা বইয়ে দাবি করেছেন টেলিকম রেগুলেটরি অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার (ট্রাই) প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ বাইজল। গতকাল এই খবর সামনে আসার পর থেকেই ফের একবার ইউপিএ সরকারের আমলে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে সরব হয় বিজেপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
তারই প্রেক্ষিতে এদিন মুখ খুলেছেন মনমোহন সিং। জানিয়েছেন, নিজের, নিজের পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে কখনই সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি।
মনমোহনের এদিনের জবাবের পরও অবশ্য বিতর্ক থামেনি। কেন এতদিন সরকারে থেকে তিনি মুখ খোলেননি, এখন কেন এসব বলছেন, তা নিয়ে তোপ দেগেছে বিরোধীরা। আসুন একঝলকে দেখে নেওয়া যাক ইউপিএ সরকারের আমলে হওয়া দুর্নীতিগুলি, যা থেকে চাইলেও মুখ ফেরাতে পারবেন না মনমোহন সিং।
২জি স্পেকট্রাম (২০০৮)
২০০৮ সালে কেন্দ্র দেশের ১২২ টি টেলিকম কোম্পানিকে নয়া লাইসেন্স ইস্যু করে। তবে এক্ষেত্রে ২০০১ সালের পুরনো দামই ধরে রাখা হয়।
পরে এই কেলেঙ্কারির খবর সামনে আসলে দেখা যায়, কেন্দ্রের ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
সত্যম কেলেঙ্কারি (২০০৯)
২০০৯ সালে সত্যম কম্পিউটার সার্ভিসের বিরুদ্ধে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। সেই বছরই জানুয়ারিতে ওই অভিযোগ ওঠার পর সত্যমের প্রতিষ্ঠাতা রাজু ও তাঁর ভাই সহ সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের গ্রেফতার করে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের অপরাধদমন শাখা।
কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারি (২০১০)
২০১০ সালে রাজধানী দিল্লিতে বসেছিল কমনওয়েলথ গেমসের আসর।
কমনওয়েলথ গেমসের আয়োজক কমিটির প্রধান ছিলেন সুরেশ কালমাদি। সেখানে ৯০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয় বলে কালমাদি সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
ভোটের সময় টাকা দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি (২০১১)
২০০৮ সালে তিন বিজেপি সাংসদ অশোক অরগল, ফগ্গন সিং কুলাস্তে ও মহাবীর ভগোরা লোকসভার মধ্যে ১ কোটি টাকার বান্ডিল দেখিয়ে বলেন, এই টাকা ইউপিএ সরকারের তরফে তাদের দেওয়া হয়েছিল।
ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির সময় ইউপিএ সরকারের পক্ষে আস্থা ভোটের সময় ভোট দেওয়ার জন্যই এই টাকা দেওয়া হয়েছিল।
রাজ্যসভা সাংসদ অমর সিংয়ের বাড়িতেই টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
কয়লা কেলেঙ্কারি (২০১২)
কম্পট্রোলার অ্যান্ড এডিটর জেনারেলের রিপোর্টে উঠে আসে ১৯৪ টি কয়লা ব্লকে বিশাল কেলেঙ্কারির কথা। জানা যায়, ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারির কথা।
২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার ১৯৪ টি কয়লা ব্লক নিলাম করেনি। যার ফলে সরকারের বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হয়। প্রথমে ভাবা হয়েছিল কেলেঙ্কারির পরিমাণ ১০ লক্ষ কোটি টাকা। পরে ক্যাগ রিপোর্টে জানা যায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকার কথা।
চপার কেলেঙ্কারি (২০১২)
ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন অধ্যক্ষ এস পি ত্যাগী সহ মোট ১৩ জনের নাম চপার কেলেঙ্কারিতে উঠে আসে।
অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড নামের ইতালীয় সংস্থা ৩৬০০ কোটি টাকায় ১২ টি চপার বেচার জন্য ঘুষ দেয় যার মধ্যে বায়ুসেনার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সহ অনেকের নাম উঠে আসে।
টাটরা ট্রাক কেলেঙ্কারি (২০১২)
২০১৩ সালের এপ্রিলে ভেক্ট্রার চেয়ারম্য়ান রবি ঋষি সহ আরও কয়েকদনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট আর্থিক তছরূপের ধারা অর্থাৎ 'প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট'-এ মামলা দায়ের করে।
কারণ প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভিকে সিং অভিযোগ করেন, ২০১০ সালে ১৬৭৬ টি টাটরা ট্রাক কেনার জন্য তাঁকে ১০ কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
আদর্শ হাউসিং কেলেঙ্কারি (২০১২)
ইউপিএ জমানার শেষদিকে এই কেলেঙ্কারির কথা জানা যায়। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের জমি অবৈধভাবে হাউসিং তৈরিতে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল যেখানে আমলারা জন্য ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছিল। সেখানে নেতারাও সমানতালে ফ্ল্যাট বাগিয়েছিলেন।
আইপিএল কেলেঙ্কারি (২০১৩)
এটা সরাসরি ইউপিএ সরকারের সঙ্গে জড়িত না হলেও এই সরকারের আমলেই আইপিএল কেলেঙ্কারি হয়েছিল। ২০১৩ সালে দিল্লি পুলিশ প্রথম এই ঘটনা সামনে এনেছিল।