ভারতে কমছে চিতাবাঘ, উদ্বিগ্ন দেশের বন্যপ্রাণ সংগঠনগুলি
ভারতে ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ চিতাবাঘের সংখ্যা কমে গিয়েছে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে এক সমীক্ষায়। ওই সমীক্ষার পরামর্শ অনুযায়ী এ দেশে যেমন ব্যাঘ্র সংরক্ষণ রয়েছে তেমনি মানুষখেকো চিতা বাঘ সংরক্ষণেও মনোনিবেশ করা হোক। এই সমীক্ষা করেছে বন্যপ্রাণ স্টাডিজ (সিডব্লিউএস ইন্ডিয়া) ও দেশের বন্যপ্রাণ প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সাফল্য সত্ত্বেও ভারতে চিতাবাঘের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে৷ মানুষখেকো চিতাও অনেক ক্ষেত্রে মানুষের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে৷ তাদের সুরক্ষার লক্ষ্যে বিচ্ছিন্ন কিছু উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।

চিতাবাঘের জিনগত তথ্য নিয়ে গবেষণা
বিজ্ঞানীরা চিতাবাঘের সংখ্যা ও তাদের হ্রাস পাওয়ার কারণ তদন্ত করতে ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে এই প্রাণীর জিনগত তথ্য সংগ্রহ করেছে। বিজ্ঞানীরা তদন্তে চিতাবাঘের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ইতিহাসের সঙ্গে তাদের হ্রাস পাওয়ার জিনগত তথ্যের তুলনা করেছেন। এই সমীক্ষা করেছেন সুপ্রিয়া ভাট, শুভঙ্কর বিশ্বাস, ডঃ বিভাস পাণ্ডব, ডঃ সম্রাট মণ্ডল, এঁরা সকলেই বন্যপ্রাণি প্রতিষ্ঠানের গবেষক। এঁদের সঙ্গে ছিলেন ডঃ কীর্তি কারাত। তাঁরা এই সমীক্ষার মাধ্যমে এই তথ্য সামনে এনেছেন যে দেশে চিতা বাঘের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

প্রত্যেক বছরই হ্রাস পাচ্ছে চিতাবাঘ
উল্লেখ্য ২০১৮ সালে ভারতের মোট ১৮টা রাজ্যে চিতাবাঘের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবার প্রথমে রয়েছে উত্তরাখণ্ড। সেখানে ২৪টা চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থান, যেখানে যথাক্রমে ১৮টা এবং ১১টা চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে ৪৩১ এবং ২০১৬ সালে ৪৫০টি চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সেই দুই বছরে চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ গিয়েছিল ১৫৯ এবং ১২৬টি চিতাবাঘের। ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার'-এ ভারতের চিতাবাঘকে ‘বিপন্ন' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার পরই কড়া ব্যবস্থা নেয় সরকার। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। তা রিপোর্টেই স্পষ্ট।

সমীক্ষার ফলাফল উদ্বেগজনক
গবেষক কীর্তি কে কারান্থ বলেন, ‘আমাদের ফলাফলগুলি আকর্ষণীয় এবং উদ্বেগজনক উভয়ই। দুটি পৃথক পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা প্রতিষ্ঠিত করেছি যে ভারতে সবচেয়ে অভিযোজ্য একটি বড় বিড়ালের জনসংখ্যা কাঠামো এবং তাদের অস্তিত্ব হ্রাস পেয়েছে। দেশের জাতীয় পশু বাঘের মতোই এ প্রাণিরও সংরক্ষণ প্রয়োজন।'