জন্মদিনেও জন্মভিটেতে ব্রাত্য রইলেন মির্জা গালিব
আগ্রা, ২৮ ডিসেম্বর: ২১৮ বছর আগে তাঁকে কেউ চিনত না। ২১৮ বছর পর তাঁকে কেউ মনে রাখেনি। মির্জা গালিব এখনও ব্রাত্যই রয়ে গেলেন। গতকাল তাঁর জন্মদিনে আগ্রাতে হল না কোনও অনুষ্ঠান। কেউ জন্মস্থানে একটা মালাও দিল না।
১৭৯৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর আগ্রায় জন্মেছিলেন মির্জা গালিব। আসল নাম মির্জা আসাদুল্লাহ বেগ খান। ১১ বছর বয়স থেকে শায়েরি লেখা শুরু করেন। ১৮১০ সাল পর্যন্ত কাটিয়েছিলেন আগ্রায়। এর পর ভাগ্যান্বেষণে দিল্লি পাড়ি দেন। প্রথমে মুঘল বাদশাহ দ্বিতীয় আকবর এবং তার পরে বাহাদুর শাহ জাফরের স্নেহধন্য ছিলেন। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহে বাহাদুর শাহ জাফর বিদ্রোহীদের পক্ষ নেন। কিন্তু যুদ্ধ হেরে গিয়ে সব খুইয়ে নির্বাসিত হন রেঙ্গুনে। বাদশাহী আনুকূল্য থেকে বঞ্চিত গালিব তলিয়ে যান দারিদ্র্যে।
উর্দু সাহিত্যের সুষমা যাঁরা বাড়িয়েছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন মির্জা গালিব। বাকি দেশ তো ছাড়, জন্মভিটে আগ্রায় মানুষই তাঁকে মনে রাখেনি। এখনও আগ্রা শহরে তাঁর নামে কোনও সৌধ নেই। যে বাড়িতে গালিবের জন্ম হয়েছিল, সেখানে এখন কলেজ হয়েছে। অথচ কবির নামে নেই কোনও স্মৃতিফলক। পর্যটন দফতর পরিকল্পনা নিয়েছিল, ওই বাড়ি থেকে কলেজ সরিয়ে একটি সংগ্রহশালা বানাবে। অজানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এখানেই শেষ নয়। গালিবপ্রেমীরা আগ্রা পুরসভার কাছে দাবি তুলেছিলেন যে, তাঁর নামে একটি অডিটোরিয়াম বানানো হোক। সটান সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু ভাষা পড়ানো হয়। সেখানে গালিবের নামে একটি 'চেয়ার' তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীরা। মানতেই চায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদেশিরা আগ্রা বেড়াতে এসে গালিবকে নিয়ে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রশ্ন করে। সে সব শুনে ভ্রমণ সংস্থাগুলিকে মুখ লুকিয়ে বেড়াতে হয়।