মুম্বইয়ে লতার পিছু নিয়েছিলেন ভারত-বিখ্যাত গায়ক, পরে তাঁরা হয়ে ওঠেন শ্রেষ্ঠ যুগলবন্দি
মুম্বইয়ে লতার পিছু নিয়েছিলেন ভারত-বিখ্যাত গায়ক, পরে তাঁরা হয়ে ওঠেন শ্রেষ্ঠ যুগলবন্দি
একজন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম সেরা পুরুষ কণ্ঠ, অন্যজন সেরা মহিলা কণ্ঠী। তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যুগলবন্দি। হিন্দি সিনেমা জগৎ থেকে বাংলা সঙ্গীত জগতেও তাঁদের অবাধ বিচরণ ছিল। তাঁদের কণ্ঠ-মাধুর্য্যে তাঁরা জয় করে নিয়েছিলেন সঙ্গীত অনুরাগীদের মন। কিন্তু তাঁর নেপথ্যে এমন এক কাহিনি ছিল, যা শুধু মজারই নয়, তার মধ্যে ছিল অদ্ভুত এক নাটকীয়তা।
একজন লতা, অন্যজন কিশোর
একজন অবশ্যই লতা মঙ্গেশকর, আর অন্যজন কিশোর কুমার। দুজনেই ভারতীয় সঙ্গীত জগতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। তাঁদের যে যুগলবন্দি সঙ্গীত-দুনিয়া দেখেছে, তার শুরুতে লুকিয়ে রয়েছে এক অনন্য কাহিনি। যে কাহিনি অনেকের কাছে অজানা আজও। অনেক সঙ্গীত অনুরাগী তা জানেনও। রবিবার লতার প্রয়াণের পর আবার তা নতুন করে সামনে এল।
প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে
লতাকে সাক্ষাৎ সরস্বতী মনে করেন সঙ্গীত জগতের শুভানুধ্যায়ীরা। তিনি তাঁর জীবদ্দশাতেই লিজেন্ড হয়ে গিয়েছেন। এহেন সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী সারা জীবনই একা রয়ে গেলেন। তবে জীবনে যে তাঁর প্রেম আসেনি, তা নয়। কিন্তু সেই প্রেম বিয়ে পর্যন্ত পৌঁছয়নি। ডুঙ্গরগড়ের মহারাজার সঙ্গে তাঁর প্রেমের কথা সবাই জানে।
কিশোর কুমারকে তখন চিনতেন না লতা
কিন্তু সেই প্রেম ছাড়াও আরও একটি প্রেম এসেছিল নীরবে। তবে লতা মঙ্গেশকর সেই প্রেমকে অস্বীকার করেন। বলিউডের এক বিখ্যাত গায়ক তাঁর প্রেমে পাগল ছিলেন। তিনি লতা মঙ্গেশকরের পিছুও নিয়েছিলেন। তিনি আর কেউ নন ভারত-বিখ্যাত গায়ক কিশোর কুমার। কিশোর কুমারকে তখন চিনতেন না লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু লতাকে চিনতেন কিশোর।
লতার পিছু নিতেন কিশোর কুমার
কিশোর কুমার প্রায়ই লতার পিছু নিতেন। লতার পিছু নিয়ে তিনি পৌঁছে যেতেন স্টুডিওতে। প্রথম প্রথম লতা জানতেন না সে কথা। জানতেন না তিনি কিশোর কুমার বলেও। পরে লতা তা জানার পর কিশোর কুমারকে আপত্তি জানান। শোনা যায়, এই কারণে প্রথমের দিকে কিশোর কুমারের সঙ্গে লতা গাইতে চাইতেন না। কোন ডুয়েট গান তো নয়ই।
কিশোর গায়কিতে মনোসংযোগ নষ্ট
তবে কিশোর কুমারের সঙ্গে গান গাইতে আপত্তির একটা অন্যতম কারণ ছিল, কিশোর কুমারের গায়কি। লতা মঙ্গেশকর কোনও গান রেকর্ডিংয়ের সময় খুব সিরিয়াস থাকতেন। কিন্তু কিশোরকুমার ঠিক বিপরীত। তিনি রেকর্ডিং হোক বা কোনও অনুষ্ঠান, থাকতেন আড্ডার মেজাজে। নানারকম অঙ্গভঙ্গিও করতে গান গাওয়ার সময়। যা দেখে নাকি খুব হাসতেন লতা মঙ্গেশকর। গানে মনোসংযোগ করতে পারতেন না। তাই তাঁর আপত্তি ছিল।
কালজয়ী গান উপহার যুগলবন্দিতে
যদিও পরে সেই বাধা কেটে যায়। বহু কালজয়ী গান উপহার দেন তাঁরা। লতা ও কিশোরের কণ্ঠে বহু ডুয়েট গান জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছে। তাঁদের দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- তেরে বিনা জিন্দেগি, তুম আ গ্যয়ে হো নূর আ গ্যয়া হ্যায়, ভিগি ভিগি রাতো মে, ওয়াদা করো নাহি ছোড়দোগে মেরে সাথ কালজয়ী গান হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলা সঙ্গীত জগতেও তাঁরা অনেক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন।
ছবি
সৌজন্য:লতা
মঙ্গেশকর
/ফেসবুক
পেজ