বামপন্থী ও এবিভিপির দ্বন্দ্বে ফেঁসে ক্যাম্পাস ছাড়ছে জেএনইউ-র সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রবিবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রবিবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র ও আক্রান্ত শিক্ষকদের অভিযোগর তির আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দিকে। তবে এই ঘটনায় দোষ রয়েছে বামপন্থী ছআত্র সংগঠনেরও। এমনটাই বলছেন বহু ছাত্র-ছত্রীরাই। এদিকে ডান ও বামের এই দ্বন্দ্বে ক্যাম্পাস ছাড়ছেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা।
বাম বনাম ডান
জানা গিয়েছে এর আগে ৩ ও ৪ জানুয়ারি বামপন্থী সংগঠন ও এবিভিপির মাঝে ঝআমেলা বাধে ও সেটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এর মূলে রয়েছে বামপন্থীদের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন থেকে বিরত থাকতে বলা। বেশ কয়েক দিন ধরেই হস্টেল ফি বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিল বামপন্থীদের দ্বারা চালিত জেএনইউ ছাত্র সংসদ। এই সময় বামপন্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারেও গোলমাল করার অভিযোগ ওঠে যাতে সধারাণ ছাত্র-ছাত্রীরা রেজিস্ট্রেশন না করতে পারে।
কী বললেন সাধারণ এক ছাত্রী?
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভআগের ছাত্রী সুলোচনা বলেন, 'বামপন্থী ছাত্ররা সব ছাত্রদের হস্টেল ফি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রেজিস্ট্রেশন করা থেকে বিরত থাকতে বলছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ অনেকবার চেষ্টা করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার তবে বামপন্থীদের কারণে তারা তা করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ৫ জানুয়ারি সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। অভিযোগের আঙুল ওঠে বামপন্থী ছাত্রদের বিরুদ্ধে। এরপরেই এবিভিপির তরফে হিংসা ছড়ানো শুরু হয়।'
উপাচার্যকে দোষ দিল ছাত্র সংসদ
এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় জেএনইউ-এর রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় সরাসরি উপাচার্য মামিদালা দগদীশ কুমারকে দায়ি করে তাঁর পদত্যাগ চাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে ছাত্র সংসদের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, 'এই উপাচার্য হলেন এক কাপুরুষোচিত উপাচার্য। উনি পিছনের দরজা দিয়ে অবৈধ নীতিমালা প্রবর্তন করেন। শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের প্রশ্ন থেকে দূরে পালান। তিনি জেএনইউকে নষ্ট করার পরিস্থিতি তৈরি করছেন।'
ছাত্র সংসদের বক্তব্য
তারা আরও বলে, 'আমরা বিগত ৭০ দিন ধরে অনেক ধৈর্য্য ও সাহস যুগিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর জন্যে লড়াই চালাচ্ছি। আর এই উপাচার্য শুধুমাত্র একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ফি বৃদ্ধির কথা জানিয়ে আমাদেরকে বলতে চাইছেন যে পড়াশোনা সবার জন্যে নয়। তিনি ছাত্রদের উপর সহিংসতা চালাতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভাঙচুর করার জন্য গুন্ডা ব্যবহার করছেন।'
এবিভিপিকে দোষেরোপ
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ বিবৃতি দিয়ে বলে, 'এই হামলা চালিয়ে এবিভিপি-র গুন্ডারা। তাদের নিশানায় সাধারণ ছাত্র ছাড়া শিক্ষকরাও ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে ঘুরে তাণ্ডব চালিয়েছে এবিভিপি-র মুখোশধারীরা। এই তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছে পুলিশও। তারা সংঘ সমর্থক প্রফেসরদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে এবং তাণ্ডব করতে গুন্ডাদের সাহায্য করেছে।'
পাল্টা দাবি এবিভিপির
যদিও এবিভিপি পাল্টা দাবি করে যে এই ঘটনা বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি ঘটিয়েছে। তাদের বক্তব্য, নক্সালপন্থীরা হোস্টেলে ঢুকে ভাংচুর চালিয়েছে, এবং ছাত্রছাত্রীদের লোহার রড দিয়ে আঘাত করেছে। এবিভিপির সভাপতি নিধি ত্রিপাঠি এই বিষয়ে বিব়তি দিয়ে এএফএসআই, এআইসা ও ডিএসএফ-এর ঘাড়ে দোষ চাপান।
'পড়ুয়াদের ওপর চালানো প্রত্যেক লোহার রডের জবাব দেওয়া হবে তবে..', ঐশী ব্যাখ্যা করলেন 'পন্থা'