মমতাকেই সিপিএমের বিকল্প বাছলেন বাম নেতা! কুণাল-সাক্ষাতে জোর জল্পনা ত্রিপুরায়
মমতাকেই সিপিএমের বিকল্প বাছলেন বাম নেতা! কুণাল-সাক্ষাতে জোর জল্পনা ত্রিপুরায়
বাংলায় জিতে তৃণমূল চাইছে বিজেপিকে ত্রিপুরা থেকে উৎখাত করতে। আর সিপিএম ২০১৮-য় ত্রিপুরার ভোটে হেরে এবার বিজেপি শাসনের অবসান ঘটাতে বদ্ধপরিকর। এই অবস্থায় কি সিপিএমের পথ মিলবে তৃণমূলের সঙ্গে? নাকি সিপিএম ও তৃণমূল এককভাবে বিজেপির মোকাবিলা করবে? বিতর্কের মাঝেই জল্পনা উসকে দিল কুণাল ঘোষের সঙ্গে ত্রিপুরার বামনেতার সাক্ষাৎ।
২০২৩-এর ভোটে তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস একজোট?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা সফরে গিয়ে সুর বেঁধে দিয়ে এসেছেন। তিনি বিজেপিকে উৎখাত করতে কংগ্রেস-সিপিএমকেও এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন। তারপর তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে বাম নেতা অজয় বিশ্বাসের সাক্ষাৎ নয়া জল্পনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ২০২৩-এর ভোটে তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়বে ত্রিপুরা থেকে গেরুয়া শিবিরকে উৎখাত করতে?
ত্রিপুরায় বামনেতার দুয়ারে তৃণমূল নেতার আগমন
সম্প্রতি বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্ররা কেন্দ্রে বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্ব মেনে নিতেও রাজি বলে জানিয়েছিলেন। তারপর ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূলের সঙ্গ প্রসঙ্গটি একেবারে উড়িয়ে দেননি। তারপরই বামনেতা অজয় বিশ্বাসের দুয়ারে তৃণমূল নেতার আগমন, জল্পনার পারদ চড়াবেই।
তৃণমূলের নেতৃত্বে জোটের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখছে সিপিএম
সিপিএম এখন বিজেপিকেই প্রধান শত্রু মানছে। ত্রিপুরার মানিক সরকার হোন বা বাংলার সূর্যকান্ত মিশ্র, বিজেপিকেই প্রধান শক্র মেনে, রাজ্য ও কেন্দ্রের পরিস্থিতি উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর উপরই বিষয়টি ছেড়েছেন। অর্থাৎ তৃণমূলের নেতৃত্বে জোটের সম্ভাবনা একেবারে খারিজ করেননি কেউই।
নিছক সৌজন্যের বলে কুণাল-অজয় সাক্ষাৎকে ধরতে নারাজ
বুধবার দলীয় কর্মসূচিতে আগরতলায় পৌঁছেই কুণাল ঘোষ যান বান নেতা অজয় বিশ্বাসের বাড়ি। তিনি ত্রিপুরা সিপিএমের অন্যতম স্থপতি। সিপিএম সাংসদ-বিধায়ক ছিলেন। এখন তিনি পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর সঙ্গে বৈঠককে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে ব্যাখ্যা করেছেন কুণাল ঘোষ, তবু নিছক সৌজন্যের বলে এই সাক্ষাৎকে ধরতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।
ত্রিপুরাতেও বামেদের পিছনে ফেলে বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূল
আর কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকের পর বাম নেতা অজয় বিশ্বাস বিস্ফোরক সাক্ষাৎকরা দিয়েছেন। তিনি বলেন, সিপিএমকে যারা ভরসা করতেন, সেই কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, কর্মচারীরা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বন্ধু ভাবছেন। এই কারণেই বাংলায় সিপিএম শূন্যে নেমেছে। ত্রিপুরাতেও বামেদের পিছনে ফেলে বিজেপির মোকাবিলায় তৃণমূল তরতরিয়ে উঠে আসছে।
|
সিপিএম এবং তৃণমূল নিয়ে একটা সচিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে
এদিন কুণাল ঘোষ ত্রিপুরায় নামার পর অজয় বিশ্বাসের বাড়িতে যাওয়া রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলই মনে করা হচ্ছে। অজয় বিশ্বাস এখন আর সিপিএমে নেই। তিনি সিপিএম পার্টি ছেড়ে পিডিএসে এসেছেন। তিনিই পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক। ফলত তাঁর কাছে সিপিএম এবং তৃণমূল নিয়ে একটা সচিক মূল্যায়ন পাওয়া যেতে পারে বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে।
তৃণমূল ত্রিপুরায় জোয়ার আনার চেষ্টা চালাচ্ছে, নেতৃত্বে অভিষেক
তৃণমূল এখন পাখির চোখ করেছে ত্রিপুরাকে। ত্রিপুরায় আসন্ন ২০২৩-এর নির্বাচনে জিতে বিজেপিকে মোক্ষম ধাক্কা দেওয়ার খেলা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পিকের টিম পাঠিয়ে জল মাপতে চাইছে তৃণমূল। তারপর প্রতিনিধি দল ও পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে তৃণমূল ত্রিপুরায় জোয়ার আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
ত্রিপুরায় এসে বেঙ্গল মডেলে বিজেপিকে হারানোর পরিকল্পনা
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একদিনের সফরে ত্রিপুরায় এসে বেঙ্গল মডেলে বিজেপিকে হারানোর পরিকল্পনায় টোটকা দিয়ে গিয়েছেন। দলের তরফে ত্রিপুরা-জয়কে পাখির চোখ করে রোস্টার তৈর করা হয়েছে। নিয়ম করে ত্রিপুরা সফরে যাবেন বাংলার নেতা-নেত্রীরা। অভিষেকও ত্রিপুরায় যাবেন প্রতি মাসে একাধিকবার।
ত্রিপুরাতেও নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদের শাখা সংগঠনের তোড়জোড়
অভিষেক চলে আসার পর এদিন কুণাল ঘোষ গেলেন ত্রিপুরায়। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদকে নিয়ে আলোচনা হয়। উল্লেখ্য, মুকুল বৈরাগ্য নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদের নেতৃবৃন্দকে সংগঠিত করেছেন। ত্রিপুরাতে তার শাখা সংগঠন খোলা যায় কি না এদিন আলোচনা হয়।
ত্রিপুরারও বুঝবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধান বিকল্প ত্রিপুরায়
তৃণমূল প্রথমে এসেই ত্রিপুরার মহিলা ভোটারকে টার্গেট করছিল, এদিন আবার টার্গেট করল নমঃশূদ্রদের। মোট কথা, অঙ্ক কষে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলায় যেমন ভোটারদের টার্গেট করে প্রকল্প রূপায়ণ করা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে মহিলা ভোটারদের উপর। মহিলাদের কেন্দ্র করে একাধিক প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে, ত্রিপুরাতেও সেই আশ্বাস দিয়ে তৃণমূল বৈতরণী পার করতে চাইছে। তৃণমূলের বিশ্বাস বাংলাকে যে পথ দেখিয়েছেন মমতা, বাংলাভাষী ত্রিপুরার মানুষও বুঝবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধান বিকল্প ত্রিপুরায়।
তৃণমূল-বিজেপি এক নয়! বিজেমূল তত্ত্বেও আর বিশ্বাস নেই, পাঠচক্রে বার্তা পাঠাল সিপিএম
ছবি সৌ:ফেসবুক
Recommended Video