রাত পোহালেই শেষ দফার ভোট, বাংলায় মতদান ১৭টি আসনে
আগামীকালের ভোটে সবার নজর থাকবে বারাণসীর দিকে। কারণ এখানে নরেন্দ্র মোদী দাঁড়িয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও কংগ্রেসের অজয় রাই। বিদেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও তাই ভিড় জমিয়েছেন বারাণসীতে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন, তিনি রেকর্ড ভোটে হারাবেন নরেন্দ্র মোদীকে এবং দ্বিতীয়জনের জামানত জব্দ হবে!
পশ্চিমবঙ্গে আগামীকাল পঞ্চম তথা শেষ দফার ভোট। যে আসনগুলিতে ভোট নেওয়া হবে, সেইগুলি হল: বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রাণাঘাট, বনগাঁ, বারাকপুর, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ, কলকাতা উত্তর, তমলুক, কাঁথি এবং ঘাটাল। কালকের ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কাছে অ্যাসিড টেস্ট। কারণ সারদা কেলেঙ্কারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সিংহভাগই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ। পঞ্চায়েত ভোটেই ইঙ্গিত মিলেছিল, এই তিন জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুঠি শিথিল হচ্ছে। সারদা কেলেঙ্কারিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় রাজ্য সরকারের বিপক্ষে যাওয়ায় কী হবে, সেই আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে রয়েছে শাসকদল।
এই ১৭টি আসনের মধ্যে কৃষ্ণনগর ও দমদম পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে বিজেপি। এই দুই আসনে দলের প্রার্থী যথাক্রমে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ও তপন শিকদার। এ ছাড়া বহরমপুর, যাদবপুর ও ঘাটালের ওপর বিশেষ নজর থাকবে। কারণ মোদী-হাওয়ায় কংগ্রেস হেভিওয়েট অধীররঞ্জন চৌধুরী বহরমপুর ধরে রাখতে পারেন কি না, সেটাই দেখার। যাদবপুর থেকে গতবার জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কবীর সুমন। কিন্তু অচিরে দলের সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হওয়ায় তিনি একঘরে হয়ে পড়েন। সাংসদ থাকার সময় তিনি তেমন কাজ করেননি বলেও অভিযোগ। এবার তাঁর জায়গায় দল প্রার্থী করেছে সুগত বসুকে। তিনিও কতটা এলাকায় সময় দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী তাই মনে করছেন, এবার তিনি জিতবেন। লড়াইটা তাই হাড্ডাহাড্ডি।
ঘাটালের ওপরও নজর থাকছে, কারণ এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের 'পাগলু' হার্টথ্রব দেবকে। দেবের জনপ্রিয়তা বিপুল। বিশেষত তরুণীদের মধ্যে। এই জনপ্রিয়তার প্রতিফলন ইভিএমে কতটা পড়বে, সেটা দেখতে হবে। ঘাটালে কংগ্রেসের প্রার্থী মানস ভুঁইঞা। বামেদের প্রার্থী হলেন সন্তোষ রানা। লড়াই তাই ত্রিমুখী।
কালকের ভোটের পর তিনদিন রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। ১৬ মে সকাল থেকে এক-এক করে প্রার্থীদের ভাগ্য জানা যাবে। দুপুর নাগাদই পরিষ্কার হয়ে যাবে প্রবণতা। গোটা দেশের সম্পূর্ণ ফলাফল জানতে জানতে সন্ধে গড়িয়ে যাবে।