লাদাখের বুকে সেনার কাছে দিল্লির কোন বিশেষ বার্তা যেতেই চিন-বৈঠকে দাপট ধরে রাখল ভারত! সীমান্তে উদ্বেগ
চিনা আগ্রাসনের পর থেকেই দিল্লিতে মোদী সরকারের অধীনে রয়েছে বিশেষ 'চায়না স্টাডি গ্রুপ'। সেই গোষ্ঠীতে ভারতের তাবড় প্রতিরক্ষা বিষয়ক অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। আর এই গোষ্ঠীর বৈঠক লাদাখে ১২ অক্টোবরের চিন-ভারত বৈঠকের আগেই হয়েছে। একনজররে দেখে নেওয়া যাক দুটি ভিন্ন বৈঠক কিভাবে লাদাক সংঘাতে তাৎপর্য বহন করছে।
সীমন্তে মোতায়েন দুপক্ষের মোট ১ লাখ সেনা!
মে মাসের ৫ তারিখ থেকে লাদাখে চিন ও ভারতের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। সেই সময় থেকেই চিনা আগ্রাসন ভারতে ধীরে ধীরে উদ্বেগের জন্ম দেয়। এরপর ১৫ জুন, ২৯ অগাস্ট দুই পক্ষের সেনার মধ্যে তুমুল সংঘাতের পর ভারত চিন ধীরে ধীরে ব্যাকফুটে চলে যায়। তবে সীমান্তে প্রবল পরিমাণে সেনা মোতায়েন করে। বর্তমানে অক্টোবরের মাঝামাঝি এসে দেখা যাচ্ছে লাদাখে এখন প্রায় দুপক্ষের মোট ১ লাখ সেনা রয়েছে।
দিল্লির বৈঠক থেকে বার্তা সেনাকে
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে লাদাখে চিনকে পিছু হঠাতে রণনীতি তৈরি হয় দিল্লিতে। ১২ অক্টোবর লাদাখে ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের সপ্তম বৈঠকের আগে, ভারতীয় সেনার রণনীতি কী হবে তা ঠিক হয় দিল্লির 'চায়না স্টাডি গ্রুপ' এর বৈঠকে। এই গোষ্ঠীতে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, রয়েছেন জাতীয় উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সিডিএস বিপিন রাওয়াত ও তিন সেনা প্রধান। গত ৯ অক্টোবর দিল্লিতে এই বৈঠক সম্পন্ন হয়।
দিল্লির বৈঠকে কোন নীতিকে গ্রিন সিগন্যাল?
জানা যায়, দিল্লির ওই বৈঠকে স্থির হয়, চিনকে বলা হবে, গোটা পূর্ব লাদাখ থেকে সেনা সরানোর জন্য। যেহেতেু মে মাসে চিনই লাদাখে আগ্রাসন দেখায়, সেহেতু সেই দেশকেই লাদাখ থেকে আগে সেনা সরাতে হবে। দিল্লির এই বার্তা সেনার কাছে পৌঁছে যেতেই তা ১২ অক্টোবর মলডো-চুশুলের বৈঠকে তুলে ধরে ভারতীয় সেনা। যারপর চিনও ভারতকে পাল্টা দাবি দাওয়া জানায়।
ভারতের শক্তিশালী উঁচু এলাকা দখল ও চিনের দাবি
দাপটের সঙ্গে লাদাখে রেচিন লা, টেবল টপ, রেজাং লা, মুকপারি সহ প্যানগংয়ের আশপাশের একাধিক জায়গা দখলে রেখে দিয়েছে ভারত। এই এলাকাগুলি উঁচু হওয়ার সেখান থেকে চিন সেনার গতিবিধির ওপর নদর রাখতে পারছে ভারতীয় সেনা। আর ১২ অক্টোবর মলডোর বৈঠকে চিন , দাবি তোলে এই সমস্ত এলাকা থেকে আগে ভারতকে সেনা সরাত হবে। তারপরই চিন সেনা সরাবে।
বৈঠক নিষ্ফলা নাকি ভারতের নীতিগত জয়!
প্রসঙ্গত, এই বৈঠকে ভারত নিজের দাবিতে অনড় থেকে বুঝিয়ে দিয়েছে আসন্ন শীতকালীন সংঘাত চিনের পক্ষে সুবিধাজনক হবে না। দিল্লির পাঠানো বিশেষ বার্তা পেয়ে সেই স্ট্র্য়াটেজিতেই ভারতীয় সেনা ১২ অক্টোবরের বৈঠকে নিজের দাপট ধরে রাখে। ফলে আপাতভাবে বৈঠকে রাফসূত্র বেরিয়ে না এলেও, চিন পরবর্তীকালে লাদাখে উত্তেজনা তৈরি করার থেকে বিরত থাকতে পারে এই বৈঠকরে পর। এমনই মত বিশেষজ্ঞদের।