প্রশান্ত মহাসাগরে পুনরায় ফিরছে লা নিনা! গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাইক্লোনে উত্তাল হবে সমুদ্র-উপকূল
প্রশান্ত মহাসাগরে পুনরায় ফিরছে লা নিনা! গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাইক্লোনে উত্তাল হবে সমুদ্র-উপকূল
সমু্দ্রে উপরিভাগের জলের তাপমাত্রার পরিবর্তনে লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে। ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথমদিকে নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে নেতিবাচক বিভেদগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পেরু উপকূলের নিকটবর্তী পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে তা ফের শক্তিশালী হয়েছে। ফলে পূর্ব-কেন্দ্রীয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় শান্ত সমুদ্র ফের উত্তাল হতে চলেছে।
লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে
সমুদ্রপৃষ্ঠের গড়পড়তা তাপমাত্রা যখন কমপক্ষে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ০.৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে তখনই লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলা হয়। যখন এটি পাঁচ মাসের কম সময় ধরে সংঘটিত হয়, তখন এটি লা নিনার শর্ত পূরণ করে। যদি এই ব্যতিক্রম পাঁচ মাস বা তারও অধিক সময় ধরে চলতে থাকে এল নিনো নামে অভিহিত করা হয়।
এল নিনোর ফলে যে সকল পরিবর্তন হতে পারে
সাধারণত এটি ২-৭ বছরের যে কোন সময়ে ৯ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। এই এল নিনোর ফলে ভারত মহাসাগর, ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার উপরিভাগের জলের চাপের পরিবর্তন ঘটে। মধ্য-পূর্ব শান্ত সমুদ্রের বায়ুচাপের হ্রাস হয়। বিষুবরেখা বরাবর বাণিজ্যিক বায়ু যখন উত্তর শান্ত সমুদ্রে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েস তখন পেরুতে গরম বাতাসের উদয় হয় এবং উত্তর পেরুভিয়ান মরুভূমিতে বৃষ্টির সূত্রপাত ঘটায়।
ভারতীয় সমুদ্র থেকে উত্তরে শান্ত সমুদ্রে উষ্ণ জলের বিস্তার
এই লা নিনা পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এবং ভারতীয় সমুদ্র থেকে উত্তরে শান্ত সমুদ্রে উষ্ণ জলের বিস্তার ঘটে। এটি বৃষ্টির জল সাথে নিয়ে চলে এবং দক্ষিণ শান্ত সমুদ্রে অনাবৃষ্টি আর সাধারণত শুষ্ক উত্তর শান্ত সমুদ্রে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এল নিনো সমুদ্রে কয়েক মাস যাবৎ বিরাজ করে, তখন অত্যধিক গরম সামুদ্রিক জলরাশি দেখা যায় এবং স্থানীয় মাছ ধরার ব্যবসার উপর বড় একটি প্রভাবও পড়ে।
ভারত শুষ্ক থেকে শুষ্কতর হতে থাকে লা নিনার ফলে
লা নিনার ফলে সাগরের তাপমাত্রা সাধারণত শীতল থাকে নিচ থেকে জলের উর্ধগমনের জন্য।শান্ত সমুদ্র তাপ সংরক্ষণ করে রাখে যা বৈশ্বিক বায়ুপ্রবাহের দিক পরিবর্তন করে এবং ফলশ্রুতিতে এর তাপমাত্রার পরিবর্তন বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখে। বৃষ্টিপ্রবাহ দক্ষিণ শান্ত সমুদ্র থেকে আমেরিকার দিকে পরিবর্তিত হয়। ভারত শুষ্ক থেকে শুষ্কতর হতে থাকে।
শক্তিশালী বাতাসের কারণে সাগর উত্তাল থাকে
বেশির ভাগ গ্রীষ্মমন্ডলীয় সাইক্লোনই অয়নান্তবৃত্তের পাহাড়ী ঢাল থেকে উৎপন্ন হয়ে ইকুয়েটরের নিকটবর্তী হয়। সেপ্টেম্বর-নভেম্বর মাসে এসব সাইক্লোন জাপান এবং কোরিয়াতে আঘাত হানে। এছাড়া গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিনোর বছরগুলোতে উল্লম্বভাবে আনত শক্তিশালী বাতাসের কারণে সাগর উত্তাল থাকে।
দক্ষিণাঞ্চলকে শুষ্ক করে উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়
উল্লেখ্য, এল নিনো বা লা নিনা তাদের শক্তি একই থাকলেও তারা সমান নয়। এগুলি একই অঞ্চলে একই ধরণের প্রভাব ফেলবে না এবং প্রচুর পরিমাণে পরিবর্তনশীল। সর্বোপরি, বর্ষাকে এরা প্রভাবিত করে। দক্ষিণাঞ্চলকে শুষ্ক করে উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে এবার লা নিনা আবহাওয়ার রকমফের ঘটাবে বিস্তর।
রক্ত ঝরে চলেছে বাংলায়, মমতার সভার আগে গুলিতে মৃত্যু ব্যবসায়ীর! অগ্নিগর্ভ কোচবিহার