সংসদে মমতার সঙ্গে দেখা কুণালের! পাঁচ বছর পর সাক্ষাতেও ধরা পড়ল পুরনো আবেগ
সংসদের সেন্ট্রাল হলে কুণাল ঘোষকে দেখেই কাছে ডেকে নিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘কুণাল, কতদিন পর তোমার সঙ্গে দেখা, এসো।’
আবার বছর পাঁচেক পরে দেখা হল দু'জনের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ। একজন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা জননেত্রী। অন্যজন ছিলেন তাঁর দলেরই বহিষ্কৃত সাংসদ। যিনি সম্প্রতি প্রাক্তন হয়েছেন। তবে আজও তৃণমূলেই রয়েছেন। মঙ্গলবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে দুজনে মুখোমুখি হতেই মুহূর্তে কেটে গেল এতদিনের গুমোটভাব। একেবারেই স্বাভাবিক আলাপচারিতায় যেন ফিরে এল পুরনো সেই দিনের কথা।
[আরও পড়ুন:বিজেপির বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে, মসনদ থেকে মোদীকে সরানোর সূত্র দিলেন মমতা]
এদিন সংসদের সেন্ট্রাল হলে কুণাল ঘোষকে দেখেই কাছে ডেকে নিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, 'কুণাল, কতদিন পর তোমার সঙ্গে দেখা, এসো।' কুণাল ঘোষ বলে ওঠেন, 'হ্যাঁ, দিদি অনেক দিন পর। পাঁচ বছর।' মমতা বলেন, 'পাঁচ বছর, অনেক দিন। এতদিনে একটা বাচ্চাও বড় হয়ে যায়।' এরপরই কুণাল প্রণাম করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতা বললেন, 'ভালো থেকো, বসো।' সবাই তখন বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেদিকেই।
এরপর বেশ কিছুক্ষণ সংসদের সেন্ট্রাল হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই বসে গল্পগুজব করেন কুণাল ঘোষ। কথা হয় অন্যান্যদের সঙ্গেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাওয়া মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, অরূপ বিশ্বাসদের সঙ্গেও আলাপচারিতা করতে দেখা যায় কুণালকে। কথা হয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও।
আর সেন্ট্রাল হলে ঢোকার আগেই তো দেখা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দুজনের দেখা হতেই একসঙ্গেই তাঁরা বলে ওঠেন- 'কেমন আছো।' রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সবেমাত্র বেরিয়েছেন কুণাল। তখনই দেখা হয়ে গেল সাংসদ তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কুণাল জিজ্ঞাসা করেন, 'তোমার চোখ কেমন আছে?' অভিষেক বলেন, 'এই তো তিনবার অপারেশন হয়ে গেল।' এরপর দুজনেই একসঙ্গে ঢোকেন সেন্ট্রাল হলে। ভিড়ের মধ্যেও মমতার চোখ খুঁজে নেয় কুণালকে। তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে আগ্রহ চোখে পড়ে সেন্ট্রাল হলে। এরপর কুণাল বলেন, 'দিদি, আজ উঠি।' তখন মমতা বলেন, 'কোথায় যাবে?' কুণাল প্রত্যুত্তরে বলেন, 'আমার ক'জন বন্ধু এসেছে, তাঁদেরকে একটু সংসদটা ঘুরিয়ে দেখাব।' এরপর আসি বলে বেরিয়ে যান কুণাল।
[আরও পড়ুন: 'সৌভাগ্য' আসছে বাংলার বুকে! পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আরও এক উদ্যোগ মমতার]
এদিনের এই সাক্ষাৎ পর্বের পর স্বাভাবিভাবেই কুণাল ঘোষকে নিয়ে জল্পনার পারদ চড়েছে। তবে কি তাঁর সাসপেনশন উঠতে চলেছে? ফের তৃণমূলে সক্রিয় হচ্ছেন তিনি? এর আগে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারপর এদিন সংসদে সেন্ট্রাল হলে দেখা হল নেত্রীর সঙ্গে, কথাও হল। দীর্ঘদিনের জমে থাকা অভিমানও দূর হয়ে গেল। এরপর কুণালের সাসপেনশন ওঠা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
যদিও এই সাক্ষাৎ নিয়ে কুণাল ঘোষ জানালেন, 'এটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ। আমি তৃণমূলে ছিলাম, আজও তৃণমূলে আছি। বন্দি অবস্থাতেও তৃণমূলের পার্টি ফান্ডে টাকা দিয়েছি। একজন তৃণমূলের সদস্য হিসেবে আমি শুনেছি, আমার দলের নেত্রী সংসদে আসছেন। সেই কারণেই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসি। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলাপচারিতা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আমি খুশি।'
[আরও পড়ুন:বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরছেন দলত্যাগী আরও এক! মুকুলের প্রতিক্রিয়ায় উল্টো জল্পনা]