কৃষকদের ঋণ মকুব, শপথ নিয়েই আর কী বললেন কুমারস্বামী
কৃষকদের ঋণ মকুব করবো। যে কোনও এক দলীয় সরকারের থেকে এই জোট সরকার ভাল প্রশাসন চালাবে।' কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই বললেন নতুনমুখ্।মন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।
'কৃষকদের ঋণ মকুব করবো। যে কোনও এক দলীয় সরকারের থেকে এই জোট সরকার ভাল প্রশাসন চালাবে।' কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই বললেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামী।
সাতদিনের মধ্যেই আবার এক শপথ গ্রহনের সাক্ষী হল কন্নড়ভূমি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার পুত্র কুমারস্বামী বুধবার বিকেল সাড়ে চারটের সময় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। দিনকয়েক আগেও কংগ্রেস-জেডি(এস) নেতাদের আক্রমণের মুখে থাকা রাজ্যপাল বাজুভাই ভালাই তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। তাঁর সঙ্গেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি পরমেশ্বরও।
I am going to waive-off farmers' loans: Karnataka Chief Minister HD Kumaraswamy in Bengaluru pic.twitter.com/pkVo9mKICs
— ANI (@ANI) May 23, 2018
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি হয় কর্ণাটক বিধানসৌধের সামনে। শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সুদৃশ্য পাথরের ভবনটির সামনে একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। লাগানো হয়েছিল বেশ কয়েকটি জায়ান্ট স্ক্রিন। এদিনের মঞ্চ ছিল ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিকে বার্তা পাঠানোর মঞ্চ। জাতীয় ও আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সেই উদ্দেশ্য একপ্রকার সফলই হল বলা চলে। শপথ গ্রহনের পর কুমারস্বামী বলেন, 'সারা দেশ থেকে আজ নেতারা এসেছিলেন দেশকে একটি বার্তা দিতে, আমরা একসঙ্গে আছি, এবং ২০১৯ সালে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে। তাঁরা এই সরকারকে রক্ষা করতে এখানে আসেননি। এই সরকারকে স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা এবং আমাদের দলের নেতারাই সুরক্ষিত রাখবেন।'
This coalition government (Congress-JD(S)) will run better than any one party govt and we will concentrate on working for the public. We have decided to work together for the betterment of the state.: Karnataka CM HD Kumaraswamy. pic.twitter.com/ZVKaDtUwQ0
— ANI (@ANI) May 23, 2018
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, তাঁর মা তথা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পশ্চিমবঙ্গে যতই বিরোধিতা থাক বিজেপি-কে ঠেকানোর দায়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই একমঞ্চে দেখা গিয়েছে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকেও। এছাড়া ছিলেন বিহারের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব, মাক্কাল নিধি মৈয়ম প্রধান কমল হাসান এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর বর্ষীয়ান নেতা ফারুক আবদুল্লা। এর আগে বিজেপিকে আটকাতে নিজেদের ব্যবধান সরিয়ে রেখে জোটের পথ দেখিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের দুই নেতা বসপা সুপ্রিমো প্রধান মায়াবতী এবং সপা-র নেতা অখিলেশ যাদব। এদিনের মঞ্চে ছিলেন তাঁরাও।
Congress-JDS leaders met and discussed about the cabinet formation, out of 34 ministries, 22 ministries will go with Congress Party and 12 ministries, including CM will be with be with JDS. Portfolio allocation to be decided after floor test: KC Venugopal, Congress #Karnataka pic.twitter.com/SEY9wej2n0
— ANI (@ANI) May 22, 2018
এত নক্ষত্র সমাবেশেও বিজেপি বিরোধী সবাইকে শেষ পর্যন্ত একমঞ্চে হাজির করানো যায়নি। অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। এদিন তাঁর উপস্থিতি আশা করা হয়েছিল। কিন্তু, তুতিকোরিনের ভয়ঙ্কর ঘটনার পর তিনি বেঙ্গলুরু সফর বাতিল করেন বলে জানা গিয়েছে। পরিবর্তে এদিন তিনি তুতিকোরিনে যান। আসতে পারেননি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও। এদিন হায়দরাবাদে কালেক্টরদের এক সম্মেলন পূর্বনির্ধারিত ছিল। সেখানে যোগ দেওয়ার কারণেই তিনি বেঙ্গালুরুর শপথ অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না বলে তিনি কুমারস্বামীকে জানান। তবে এক লিখিত বার্তায় তিনি কুমারস্বামীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এনডিএ-র অন্যতম সঙ্গী শিব সেনা নেতা সঞ্জয় রাউতও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কুমারস্বামীকে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সব বড় নেতাই এখন পালঘর লোকসভা উপ-নির্বাচনে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই ইচ্ছা সত্ত্বেও বেঙ্গালুরু আসতে পারবেন না কোনও শিবসেনা নেতা।
তবে, বিজেপি, এদিনও কংগ্রেস-জেডি (এস)'এর এই জোটকে 'অপবিত্র' বলে নিন্দা করেছে। তাদের দাবি এ সরকার বেশিদিন টিকবে না। মেয়াদ সম্পূর্ণ করা তো অনেক দূরের ব্যাপার। গেরুয়া পার্টি এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। বদলে এই জোট সরকার গঠনের প্রতিবাদে কর্ণাটকে তারা সারাদিন 'অ্যান্টি-পিপল্স মানডেট ডে' বা 'জনমত বিরোধী দিবস' পালন করে।
শপথ অনুষ্ঠান শুরুর আগেই অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল জানান, মঙ্গলবার রাতেই কংগ্রেস-জেডি (এস) নেতারা বৈঠক করে মন্ত্রীসভা চুড়ান্ত করে ফেলেছেন। মন্ত্রী হবেন কংগ্রেসের ২২ জন এবং জেডি (এস)-এর ১২ জন। নতুন সরকার বিধানসৌধে শক্তির পরীক্ষা দেবে। তারপরই শপথ গ্রহণ করবেন এই মন্ত্রীরা।
আগে ঠিক ছিল বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথের পরই কুমারস্বামী সরকার বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটে যাবে। কিন্তু তা একদিন পিছিয়ে গিয়েছে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী আস্থা ভোটের আগে স্পিকার নির্বাচন করতে হবে। কেসি ভেনুগোপাল জানিয়েছেন, স্পিকার পদে বসবেন কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী রমেশ কুমার। আর ডেপুটি স্পিকারের পদটি থাকছে জেডি (এস) -এর হাতে।