কুলভূষণের কনসুলার অ্য়াকসেসে পাক 'নজরদারি', ইসলামাবাদকে পাল্টা তোপ ভারতের
ভারতের চাপে পড়ে দ্বিতীয়বারের জন্য কুলভূষণ যাদবকে কনসুলার অ্যাকসেস দিলেও তা ফলপ্রসু হল না। পাক নজরদারিতে এই নামকা ওয়াস্তে অ্যাকসেস নিয়ে সরব হয়েছে দিল্লি। ভারত জানিয়েছে, কুলভূষণ দৃশ্যত চাপে, অবাধে কথা বলতে পারেননি দূতাবাসকর্মীরা, কারণ পুরো আলোচনা রেকর্ড করে রাখা হয়েছে পাকিস্তানের তরফে।
ভারতীয় কূটনীতিকদের দুঘণ্টা সময় দেওয়া হয়
ভারতীয় কূটনীতিকদের দুঘণ্টার সময় দেওয়া হয় বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কূটনৈতিক সহায়তা পেলেন তিনি, ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে প্রথমবার কূটনৈটিক সহায়তা পেয়েছিলেন কুলভূষণ যাদব। সূত্র মারফর আরও জানা গিয়েছে, কুলভূষণ যাদবকে নিঃশর্তে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে বলেছিল ভারত, তারপরেই এই পদক্ষেপ করে ইসলামাবাদ।
কুলভূষণ মামলায় পাকিস্তানের দাবি
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল পাকিস্তানের সেনা আদালত। পাকিস্তান গত সপ্তাহে দাবি করে, সাজার রায়ের পনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে চাননি কুলভূষণ যাদব, বরং প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতেই চান তিনি। পাকিস্তানের দাবি খারিজ করে ভারত বলে, এতেই প্রমাণ হয়, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় কার্যকর করতে চায় না পাকিস্তান। এরপরই ইসলামাবাদের উপর পাল্টা চাপ তৈরি শুরু করে ভারত।
বিদেশমন্ত্রকের পাল্টা তোপ
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, যেভাবে কুলভূষণ যাদবের মামলার রায় এসেছে তা একপ্রকার প্রহসন৷ তারপর ইসলামাবাদের দাবি উড়িয়ে দিল্লি বলে, 'মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি করেননি কুলভূষণ যাদব ৷ তিনি সাজা মুকুবের আবেদন করতে চাইছেন৷' এই আবহে এবারে নিঃশর্ত ভাবে কুলভূষণের কাছে কনসুলার অ্যাকসেস চাইল ভারত।
আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ
এর আগে আন্তর্জাতিক আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা করার সময়ে ভারতেরও প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে৷ এরপর কেটে গেছে প্রায় এক বছর৷ এই অবস্থায় ইসলামাবাদের থেকে এমন দাবি নিছক একটা পরিহাস বলেই মনে করছে দিল্লি৷ আর পাকিস্তানের এই চাল নষ্ট করতে এবং ইসলামাবাদের মুখোশ টেনে ছিঁড়ে ফেলতেই কনসুলার অ্যাকসেস দাবি জানায় দিল্লি। তবে পাক নজরদারিতে এই অ্যাকসেস চাওয়ার মূল লক্ষ্যই অধরা রয়ে গেল।
কুলভূষণ একজন প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক
কুলভূষণ যাদব একজন প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিক৷ ২০১৬ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হন তিনি৷ এর এক বছর পর পাকিস্তানের মিলিটারি কোর্টে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়৷ এরপর ২০১৭ সালে কুলভূষণের মামলা নিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়৷ গত বছরের জুলাইতে আন্তর্জাতিক আদালতের থেকে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানকে কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের রায় অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করতে হবে৷ ততদিন পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখতে হবে৷ পাশাপাশি মামলায় ভারতীয় আইনজীবীর প্রতিনিধিত্ব না থাকতে দেওয়া নিয়েও ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিল আন্তর্জাতিক আদালত৷ ভারতের তরফে বারবার বলা হচ্ছিল, ভারতীয় আইনজীবীর প্রতিনিধিত্ব না থাকাটা ভিয়েনা সম্মেলনের চুক্তিবিরুদ্ধ৷ আন্তর্জাতিক আদালত কার্যত দিল্লির এই দাবিতেই সিলমোহর দিয়েছিল৷
ভারতের গুপ্তচর নয় কুলভূষণ
কুলভূষণ যে ভারতের গুপ্তচর নয়, সেকথা বারবার বলে এসেছে দিল্লি৷ কুলভূষণ নৌসেনা থেকে অবসর নেওয়ার পর ইরানে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবসা চালাতেন৷ সেখান থেকেই তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে বারবার জানানো হয়েছে দিল্লি থেকে৷ কিন্তু পাকিস্তান বলছে, তাঁকে বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল৷
চিনের জনগণকে ভালোবাসেন, লাদাখ ইস্যুতে চাপানউতোরের মাঝেই ট্রাম্পের মন্তব্যে তোলপাড় বিশ্ব