রানওয়েতে ফাটল! দশ বছর আগের সতর্কবাণীতে আমল না দেওয়াতেই কোঝিকোড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা?
কেরলের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পিছনে ইতিমধ্যেই কোঝিকোড় বিমানবন্দরের পরিকাঠামো নিয়েই একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠে গেছে। কোঝিকোড়ের একাধিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত বছরেই ডিজিসিএ কর্তৃক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল বলেো জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে এই বিমান দুর্ঘটনার ফলে ফের ফিরে আসছে ২০১০ সালে ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনার স্মৃতি। সূত্রের খবর সেই সময়েও সতর্ক করা হয়েছিল কোঝিকোড় বিমান বন্দ কর্তৃপক্ষকে।
কেন্দ্রের তরফে বিশেষ দুটি তদন্তকারী দল গঠন
এদিকে এই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যেই দুটি তদন্তকারী দল গঠন করেছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। এদিকে গতকাল সন্ধ্যে ৭টা ৪০ মিনিট নাগাদ কোঝিকোড় বন্দরে অবতরণের সময়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এক্স ১৩৪৪ বিমান। অবতরণের সময় পিছলে গিয়ে দু'টুকরো হয়ে যায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। ১৯১ যাত্রীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় ১৮ জন। যার মধ্যে রয়েছেন বিমানের দুই চালকও।
শুধুই কি দৃশ্যমানতার অভাবে বিপত্তি?
এদিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেই কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়ের নিরাপত্তা নিয়েই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন শুধুমাত্র বৃষ্টিতে দৃশ্যমানতার অভাবে এই বিপর্যয় ঘটেনি। এদিকে ১০ বছর আগে কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়েকে নিরাপদ নয় বলে উল্লেখ করেছিলেন বিমান চলাচল মন্ত্রক দ্বারা গঠিত নিরাপত্তা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথ। পাশাপাশি ম্যাঙ্গালোর দুর্ঘটনার পরেও ‘টেবিলটপ' এয়ার পোর্ট গুলির নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক করতে দেখা যায় এয়ার মার্শাল বিএন গোখলেকে।
দশ বছর আগের সেই সতর্কবাণীত কান না দেওয়াতেই বিপদ
অনেকেই বলছেন দশ বছর আগের সেই সতর্কবাণীতে আমল না দেওয়াতেই বর্তমানের এই বিপত্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়েটি বেশ ঢালু। রানওয়ের শেষ মাথায় রয়েছে প্রায় ২০০ মিটার গভীর খাদ। যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক অবস্থায় সেখানে পৌঁছানোও দুষ্কর।সাধারণ রানওয়ের শেষ প্রান্তের দৈর্ঘ্য থাকে ২৪০ মিটারের আশেপাশে। কিন্তু কোঝিকোড় বিমানবন্দরের শেষ প্রান্তের দৈর্ঘ্য মাত্র ৯০ মিটার। এছাড়া উভয় পাশের জায়গাও কম। যেখানে উভয় পাশের জায়গা থাকার কথা ১০০ মিটার, সেখানে কোঝিকোড়ের রয়েছে মাত্র ৭৫ মিটার।
রানওয়েতে ফাটলের চিহ্ন
এই বিপদ সংকূল অবস্থার মধ্যেও দীর্ঘদিন থেকে এই বন্দরে বিমান চলাচল হয়ে আসছে। কিন্তু যে কোনও মহূর্তে বড় বিপদের আশঙ্কা থাকা সত্বেও কি করে এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পরিষেবা চলছিল তা নিয়েও সরব হচ্ছেন অনেকেই। সূত্রের খবর, এছড়াও রানওয়ের দু-ধারে জমা ছিল মাত্রাতিরিক্ত রবার, যার জেরে দেড় মিটার পর্যন্ত জল জমা থাকত দুধারে। খারাপ ছিল বিমানবন্দরের ডিজিটাল ম্যাপ ডিসপ্লে। রানওয়েতে দেখা দিয়েছিল একাধিক ফাটলের চিহ্নও।