রাজস্থানের শিশুমৃত্যু নিয়ে উদ্বিগ্ন সোনিয়া গান্ধী রিপোর্ট চাইলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে
রাজস্থানের কোটা জেলার জেকে লোন হাসপাতালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হল বৃহস্পতিবার। হাসপাতালের সুপারিটেন্ডেন্ট সুরেশ দুলারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২–তে।

শেষ তিনদিনে ১০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর আটজন এবং ১ ও ২ জানুয়ারি আরও ২ শিশুর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। দুলারা জানিয়েছেন, ওই দুই শিশু গুরুতর অসুস্থ ছিল এবং তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। যদিও জেকে লোনের শিশু বিভাগের প্রধান অমৃতলাল বৈরওয়া জানিয়েছেন, গত দু’দিনে যে আট শিশুর মৃত্যু হয়েছে তারা সকলেই সময়ের আগে প্রসব হয়েছিল এবং চিকিৎসকদের কোনও দোষ নেই এতে। সদ্যোজাতদের ওজন খুবই কম ছিল। তার ওপর গর্ভবতী মাকে হাসপাতালে অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় নিয়ে আসা হয় এবং প্রসবের সময় মহিলাদের আত্মীয়রা কোনও নির্দেশই যথাযথ পালন করছিল না। ২০১৯ সালে এই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৯৬৩ জন শিশুর। শিশুমৃত্যু নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তার রিপোর্টে জানায় যে অক্সিজেন পাইপলাইনের অভাব ও অতিরিক্ত ঠাণ্ডাতেই মৃত্যু হয়েছে শিশুদের।
দুলারা এ প্রসঙ্গে বলেন, 'অন্য সরকারি হাসপাতালের তুলনায় এই সংখ্যাটি অনেকটাই কম। একদিনে একটি শিশুর মৃত্যু মানে হাসপাতালে মৃত্যুর হার কমছে। গত বছর ডিসেম্বরে ৯১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।’ শিশু মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হওয়ার পর, কংগ্রেসের অস্থায়ী সভাপতি সোনিয়া গান্ধী রাজ্যের দলের দায়িত্বে থাকা অবিনাশ পাণ্ডেকে বৃহস্পতিবার সমন পাঠিয়েছেন। সোনিয়া গান্ধী শিশুমৃত্যু নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকেও বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলেছেন। কোটার পরিস্থিতি নিয়ে পাণ্ডে ইতিমধ্যেই সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সোনিয়া গান্ধী অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে জানিয়েছেন যে শিশুদের মৃত্যু যখন হচ্ছিল কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কংগ্রেস সুপ্রিমোর সঙ্গে দেখা করার পর অবিনাশ পাণ্ডে বলেন, 'সোনিয়া জি শিশু মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়েছেন। এটা খুবই দুঃখের পরিস্থিতি এবং মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট তৈরি করে দিতে বলেছেন। বিজেপি যে অভিযোগ আনছে তা সত্য নয়, তদন্ত চলছে এবং দোষীরা শাস্তি পাবে।’
শিশুমৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে সমালোচিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী গেহলট টুইট করে বলেন, 'কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধিদের আসতে অনুরোধ করব এবং রাজ্য সরকার এই রাজ্যকে নিরোগী করতে বদ্ধ পরিকর। শিশুমৃত্যু নিয়ে সরকার যথেষ্ট স্পর্শকাতর এবং এটার মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই এবং কোটায় মৃত্যুর হারও কমেছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে ২০১১ সালে তিনি ক্ষমতায় এসেই ওই হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটের বন্দোবস্ত করেন।