করোনা সঙ্কটে দেশজোড়া মন্দার মাঝেও জিও-তে কেন এত বিনিয়োগ আসছে, জানেন কী
করোনা সঙ্কটে দেশজোড়া মন্দার মাঝেও জিও-তে কেন এত বিনিয়োগ আসছে, জানেন কী
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর থাবায় অর্থনীতি কার্যত শীতঘুমে। স্টক মার্কেটের ভেঙে পড়া থেকে শুরু করে ব্যবসায় ভরাডুবি, এসবের মাঝেও জিওতে লগ্নির জোয়ার দেখে হতবাক প্রত্যেকেই। গত দু'মাসে ফেসবুক, আদিয়ার মত ৮টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রায় ১.০৪ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে মুকেশ আম্বানি পরিচালিত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড(আরআইএল)-এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম 'জিও'-তে।
জিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত কেন নিল আরআইএল ?
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দেশজুড়ে জিওর বিনামূল্যে ৪জি ডেটা সরবরাহ মুকেশ আম্বানির বৃহৎ বাণিজ্যিক কৌশলেরই একটি অঙ্গ ছিল। যার জেরে জিও বর্তমানে ভারতের সর্ববৃহৎ টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারে পরিণত হয়েছে। যদিও এর ফলে ১,৬০,০০০ কোটি টাকা ঋণের বোঝা চাপে আরআইএলের মাথায়। ফলত ২০২১-এর মার্চের মধ্যে ঋণমুক্ত সংস্থা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে শেয়ার বিক্রির পথে হেঁটেছে জিও। আরআইএল জিও প্ল্যাটফর্মকে স্টক মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা চালাচ্ছে।
বিশ্বজোড়া মন্দার মাঝে কিভাবে এই অসাধ্যসাধন ?
এ বছরের ২১শে এপ্রিল মার্ক জুকারবার্গের ফেসবুক জিও-র ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ৯.৯৯% শেয়ার প্রায় ৪৩,৫৭৪ কোটি টাকায় কিনে নেয়। এরপর ক্রমে সিলভার লেক পার্টনার্স, ভিস্তা ইকুইটি পার্টনার্স, জেনারেল আটলান্টিক, কেকেআর, মুবাদালা, আদিয়া, সিলভার লেকের মত বহুজাতিক সংস্থা জিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের শেয়ার কেনে। সর্বশেষ এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় টিপিজি ও এল ক্যাটারটন নামক দুই সংস্থা। করোনা আবহে এতগুলি বহুজাতিক সংস্থাকে বিনিয়োগে আগ্রহী করার পিছনে যেমন রয়েছে আরআইএলের ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ সংস্থা হওয়ার তকমা, তেমনই রয়েছে বৃহদাকার ভারতীয় বাজারে জিওর সম্ভাবনাময়ী ভবিষ্যতের স্বপ্ন। ফলত স্টক মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগেই জিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের চেষ্টায় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি।
জিওর পরিকাঠামোর উন্নয়নের স্বার্থে লগ্নি করা হবে উদ্বৃত্ত অর্থ
মূলত আরআইএলের দেনার বোঝা কমানোর লক্ষ্যেই ব্যবহৃত হবে এই অর্থ, এমনটাই জানিয়েছেন আরআইএলের এক অধিকারিক। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাকি অর্থ জিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের পরিকাঠামো ও টেলিকম সার্ভিসের উন্নতিকল্পে কাজে লাগানো হবে। তাছাড়া মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মত নিত্যনতুন ক্ষেত্রেও নিজেদের প্রভাব বিস্তারে এই অর্থ কাজে লাগবে আরআইএল, এমনটাই মত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
ভারতের টেলিকম সার্ভিসের ভবিষ্যতে আশার আলো
এই বিশাল পরিমাণ বিনিয়োগ সত্ত্বেও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ভারতের টেলিকম সার্ভিস সংস্থাকেই কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রককে তাদের মোট আয়ের কিছু পরিমাণ অর্থ লাইসেন্স ও এয়ার ওয়েব কর বাবদ দিতে হয়। সূত্রের খবর, এই খাতে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে এই সংস্থা গুলির প্রায় ১.১৯ লক্ষ কোটি টাকা বাকি, যদিও সংস্থাগুলির হিসেবে এই অর্থের পরিমাণ ৩৭,১৭৬ কোটি টাকা। যদিও এত কিছুর মাঝেও বিশেষজ্ঞদের মতে, জিও ও এয়ারটেল শেষপর্যন্ত টেলিকম সার্ভিসের দৌড়ে টিকে যাবে। মহামারীর জেরে ক্রমবর্ধমান বাড়ি থেকে কাজের চাহিদা, ফলত ডেটাও মহার্ঘ হচ্ছে। আর এই কারণেই ভারতীয় টেলিকম সার্ভিসের প্রতি ঝুঁকছে বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি।
যে সকল এলাকায় ভারতকে আক্রমণ করতে পারে চিন! একনজরে দেখে নিন এলএসি-র সেই অঞ্চলগুলি